সমঝোতা স্মারকের শর্ত লঙ্ঘন করায় রাষ্ট্রীয় খাতের জনতা ব্যাংককে ৪১৮ কোটি টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে জমা করতে বলার পর ওই টাকা নেয়া হয়েছে। সংরক্ষিত এ টাকার বিপরীতে জনতা ব্যাংককে কোনো সুদ পরিশোধ করা হবে না। শর্ত পূরণ হলে ব্যাংককে ওই টাকা ফেরত দেয়া হবে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত জনতা ব্যাংকের হিসাব থেকে এ টাকা কেটে নেয়া হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছে। এতে ব্যাংকগুলোর ঋণ প্রবৃদ্ধির একটি সীমা নির্ধারণ করে দেয়া আছে। সে হিসাবে গত বছর জনতা ব্যাংকের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ। কিন্তু ব্যাংকটি ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ শতাংশ। এ পরিপ্রেক্ষিতে অতিরিক্ত বিতরণ হওয়া ঋণের একটি অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা করতে হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন নির্বাহী পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জনতা ব্যাংকের ঋণ প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। এমওইউর শর্ত লঙ্ঘিত হওয়ায় ব্যাংককে নির্দিষ্ট পরিমাণের অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা করতে বলা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জনতা ব্যাংক টাকা জমা না করায় গতকালই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রক্ষিত জনতা ব্যাংকের হিসাব থেকে ওই টাকা কর্তন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুস সালাম বলেন, ব্যাংকের ঋণ বিতরণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১২ শতাংশের বেশি হয়েছে। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জানা যায়, গত বছর জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য থাকলেও তা হয়েছে ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ। এ ছাড়া খেলাপি ঋণ থেকে ১২০০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য থাকলেও ব্যাংকটি মাত্র ৬৪০ কোটি টাকা আদায় করতে পেরেছে। অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ৩৩০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে মাত্র ১১১ কোটি টাকা। এ ছাড়া লোকসানি শাখা ৩০টিতে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা বেড়ে হয়েছে ৪৬টি।