১১ মার্চ ২০২৩, শনিবার, ১১:০১

প্রথম মেঘনা সেতু

কয়েক মাসেই উধাও ৩৭৫টি স্ল্যাব

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের প্রথম মেঘনা সেতুর ওপরের ফুটপাতের স্ল্যাব চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না। কয়েক মাসের মধ্যেই সেতুর ৩৭৫টি স্ল্যাব চুরি হয়ে গেছে। ফলে হেঁটে সেতু পারাপারে বিপাকে পড়ছে পথচারীরা।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) নারায়ণগঞ্জ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ ও মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মেঘনা নদীর ওপর ৯০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯.২ মিটার প্রস্থের ১৩টি স্প্যানের সেতুটি উদ্বোধন করা হয় ১৯৯১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। এর দাপ্তরিক নাম জাপান-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের তথ্য মতে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেন হওয়ার পর এই সেতুর ওপর দীর্ঘ যানজট দূর করতে দ্বিতীয় মেঘনা সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০১৯ সালের ২৫ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মেঘনা সেতুর উদ্বোধন করেন। এর পর থেকে দ্বিতীয় মেঘনা সেতু দিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী এবং প্রথম সেতু দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী যানবাহন চলাচল করছে। দুই সেতু দিয়ে প্রতিদিন ৩০ হাজারেরও বেশি যান চলাচল করে।

মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহননিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে মেঘনাঘাট শিল্পাঞ্চলে কর্মরত শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথম সেতুর ফুটপাত দিয়ে হেঁটেই পারাপার হয়; কিন্তু কয়েক মাস ধরে প্রথম সেতুর ফুটপাতে বসানো পাথর-সিমেন্টের স্ল্যাব চুরি হয়ে যাচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের তদারকির পরও স্ল্যাব চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না।

গজারিয়ার হোসেন্দী গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, খরচ বাঁচাতে এবং যানবাহন না পাওয়ায় প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী ও বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা হেঁটে সেতু পার হয়ে সোনারগাঁয় আসা-যাওয়া করে। জামালদী গ্রামের বাসিন্দা আলী হোসেন বলেন, ‘স্ল্যাব চুরি হয়ে যাওয়ায় হেঁটে সেতু পারাপারে সমস্যায় পড়ছি আমরা।’

গত রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্ল্যাব চুরির পাশাপাশি কয়েকটি স্থানে সেতুর রেলিংও ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আনিমুল হক বলেন, ‘কয়েক মাসেই সেতুর ৩৭৫টি স্ল্যাব চুরি গেছে। আমরা কিছুতেই চোর ঠেকাতে পারছি না। এদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কয়েকবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের চিঠি দিয়েছি। নতুন করে স্ল্যাব তৈরি করে বসানোর জন্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। আর যানবাহনের ধাক্কা লেগে রেলিংও কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ হলে অবশ্যই এসব সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সোনারগাঁ থানার ওসি মাহাবুব আলম বলেন, ‘আমরা সেতু এলাকায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকি। স্ল্যাব চোরদের অবশ্যই চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হবে।

https://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2023/03/11/1259846