১৯ এপ্রিল ২০১৭, বুধবার, ৯:৫৫

৭ কলেজের ২ লাখ শিক্ষার্থী বিপদে

দীর্ঘদিন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা রাজধানীর বড় সাতটি সরকারি কলেজ সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়েছে। তবে এর পর থেকেই সংকটে পড়েছে এসব কলেজে অধ্যয়নরত প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী। অনেক শিক্ষার্থীরই রচনামূলক পরীক্ষা শেষ হয়েছে, কিন্তু কয়েক মাস ধরে আটকে আছে ব্যবহারিক পরীক্ষা। বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষারও নতুন করে কোনো তারিখ ঘোষণা করা হচ্ছে না। কলেজগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে গেলেও এখনো সিলেবাস বা পাঠ্যক্রমে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। সিলেবাসবিহীন অবস্থায়ই পড়ালেখা করছে শিক্ষার্থীরা। ফলে তাদের সেশনজটে পড়ারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এগুলো হচ্ছে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। অধিভুক্ত হওয়ার পর পরীক্ষা, ক্লাসসহ সার্বিক লেখাপড়া নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় শিক্ষার্থীরা উদ্বেগে রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশীদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি তাঁদের বিভিন্ন বক্তব্যেও দ্বন্দ্বের বিষয়টি ফুটে ওঠে। সরকার যখন সরকারি কলেজ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দিতে চায় তখন থেকেই রাজধানীর নামি কলেজগুলো নিজেদের আয়ত্তে নিতে উঠেপড়ে লাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা না করে কোনো কোর্স কারিকুলাম বা পরিকল্পনা না করেই সাতটি কলেজ নিয়ে নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এতে হঠাৎ সংকটে পড়ে শিক্ষার্থীরা।
গত মাসে সরকারি তিতুমীর কলেজের এক অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘খাতা না দেখেই চূড়ান্ত ফল দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে তাদের শিক্ষার মান কেমন হতে পারে তা সহজেই অনুমান করা যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের আত্মীয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষক। তিনি একবার অনার্সের খাতা নিলেও অসুস্থতার কারণে দেখতে পারেননি। তাই তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানান, দ্রুত যেন খাতা নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর পক্ষে খাতা দেখা সম্ভব নয়। কিন্তু মাসখানেক পার হলেও কেউ খাতার ব্যাপারে খোঁজ নেয়নি। এর কিছুদিন পরেই ফলাফল দিয়ে দেওয়া হয়। অথচ তখন অদেখা অবস্থায় কয়েক শ খাতা ওই শিক্ষকের বাসায় পড়ে ছিল। এই হলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখার অবস্থা। ’
তবে ঢাবি উপাচার্যের এই বক্তব্যকে সম্পূর্ণ অসত্য, মনগড়া, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিদ্বেষপ্রসূত বলে উল্লেখ করে তা প্রমাণের জন্য চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠানো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে ঢালাওভাবে মনগড়া এরূপ বক্তব্য প্রদান একজন উপাচার্যের দায়িত্বশীল পদে আসীন ব্যক্তির পক্ষে কতদূর সমীচীন, তা কারো পক্ষে না বোঝার কথা নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য যে একজন চরম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়-বিদ্বেষী, তাঁর এ বক্তব্য থেকে সেটি স্পষ্ট। ড. আরেফিন সিদ্দিককে তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনের জন্য চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া হলো। অন্যথায় তাঁর এ ধরনের অসত্য, মনগড়া, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের বিরুদ্ধে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে। ’
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অধিভুক্ত সাত কলেজ নিয়ে আমাদের নীতিনির্ধারণের কাজ চলছে। তবে অধিভুক্ত কলেজ আমাদের জন্য নতুন নয়। আগেও এই কলেজগুলো আমাদের অধীনে ছিল। ফলে কোনো সমস্যা হবে না। আমরা সব কিছুই ডিজিটাল পদ্ধতিতে করার চেষ্টা করছি। যাদের ব্যবহারিক পরীক্ষা বাকি আছে শিগগির আমরা তা নেওয়ার চেষ্টা করব। আর নতুন পরীক্ষার তারিখও দ্রুত ঘোষণা করা হবে। ’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশীদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এটা (সাত কলেজের অধিভুক্তি) সরকারি সিদ্ধান্ত। এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই ভালো জানে। তারা যেটা ভালো মনে করেছে সেটাই করেছে। আমরা অনার্স চতুর্থ বর্ষের লিখিত পরীক্ষা নিয়েছি, ব্যবহারিক নেওয়ারও সময় দেওয়া হলো না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে আমাদের কাছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের তথ্য চাওয়া হয়েছে। আমরা সেগুলো প্রস্তুত করছি। প্রথম দিকে তো কিছুটা সমস্যা হবেই। আশা করি, আস্তে আস্তে সেটা তারা উতরে যবে। ’
জানা যায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫ সালের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়েছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেই, ৩ জানুয়ারি। শেষ হয় গত ১১ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু ব্যবহারিক শুরুর আগেই কলেজগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে যায়। যদিও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় থাকা অন্য কলেজগুলোর ব্যবহারিক পরীক্ষা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের নিয়মিত ও প্রাইভেট (নতুন সিলেবাস) এমএ, এমএসএস, এমবিএ, এমএসসি ও এম মিউজ শেষ পর্ব পরীক্ষার রুটিনও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করেছে। ২০১৬ সালের ডিগ্রি পাস ও সার্টিফিকেট কোর্স পরীক্ষার সময়সূচিও ঘোষণা করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। অথচ অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা পুরোপুরি অন্ধকারে রয়েছে। তারা এই পরীক্ষায় অংশও নিতে পারছে না।
এ ছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্স শেষ পর্ব পরীক্ষার সময়সূচিতে রাখা হয়নি অধিভুক্ত সাত কলেজ। ইতিমধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্সের একটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও এই সাত কলেজের শিক্ষার্থী এতে অংশ নিতে পারেনি। এমনকি এসব কলেজের শিক্ষার্থীর তথ্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকেও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামসুন নাহার বলেন, ‘কিছুটা গ্যাপ হয়ে যাচ্ছে। আশা করছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তা পূরণ করে ফেলবে। ’ সরকারি তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু হায়দার আহমেদ নাসের বলেন, ‘এটা সরকারি সিদ্ধান্তের ব্যাপার। আমাদের এখানে কিছুই বলার নেই। ’
সংশ্লিষ্টরা জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় থাকাকালীন ওই সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের অনেকে এক বা একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হয়ে পরের বর্ষে প্রমোশন পেয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষার আগে পূর্বের বর্ষের অনুত্তীর্ণ বিষয়গুলোতে উত্তীর্ণ না হলে ফল স্থগিত থাকে। এখন এ ধরনের শিক্ষার্থী, যারা একাধিক বর্ষে বিভিন্ন বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হয়েছে, তারা কোন সিলেবাসে, কোথায় পরীক্ষা দেবে তা নিয়ে চরম বিভ্রান্তিতে আছে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে খুব শিগগির এসব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানও সম্ভব নয়।
ঢাকা কলেজের সমাজবিজ্ঞানের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, ‘আমি দ্বিতীয় বর্ষের একটি পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তৃতীয় বর্ষে প্রমোশন পেয়েছি। এখন আমার দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষাটা কে নেবে? আর যদি এই পরীক্ষা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নতুন কারিকুলামে নেয় তাহলে আমি কিভাবে পরীক্ষা দেব? আর এমনিতেই আমরা প্রায় এক বছরের সেশনজটে আছি। এখন যদি পরীক্ষা শুরু করতে আরো দেরি হয় তাহলে বড় সেশনজটে পড়ে যাব। ’
জানা যায়, চলতি মাসেই শেষ হবে এইচএসসি পরীক্ষা। জুলাই থেকে শুরু হবে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া। এত দিন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এই সাত কলেজে মেধার ভিত্তিতে ভর্তি করলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে ভর্তি করবে তা এখনো ঘোষণা করেনি। সাধারণত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে থাকে। তাই এই সাত কলেজেও যদি ভর্তি পরীক্ষা নিতে হয় তাহলে অনেক বড় আয়োজন করতে হবে। আর এখনই যদি ভর্তি পরীক্ষার ঘোষণা দেওয়া না হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের পক্ষে প্রস্তুতিও নেওয়া সম্ভব নয়। ফলে শিক্ষার্থীরা ভর্তি নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছে।
অধিভুক্ত কলেজগুলোর বিভিন্ন বর্ষের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, তারা এখনো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস পড়ছে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই সিলেবাস রাখবে, না নতুন করে দেবে তা এখনো বলেনি। আর একজন শিক্ষার্থীর অর্ধেক পড়ালেখা শেষে তাদের জন্য নতুন সিলেবাসে পড়ালেখা করাটা কঠিন।
সরকারি তিতুমীর কলেজের অর্থনীতি অনার্স কোর্সের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আদনান হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসেই আমি দুটি বর্ষ শেষ করেছি। এখন যদি আমাকে নতুন করে সিলেবাস দেয় তাহলে তার সঙ্গে তাল মেলানো আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তির দুই মাস পার হয়ে গেলেও আমরা নতুন কোনো পাঠ্যক্রম বা নির্দেশনা পেলাম না। এতে খুবই চিন্তায় আছি। আর নতুন সিলেবাস এলে নির্ঘাত আমাদের রেজাল্ট খারাপ হবে। এর দায়দায়িত্ব কে নেবে? তাই আমরা যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেই থাকি না কেন আমাদের যেন পুরনো সিলেবাসেই লেখাপড়া শেষ করার সুযোগ দেওয়া হয়। ’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ৪৫ হাজার শিক্ষার্থী নিয়েই হিমশিম খাচ্ছে। এর ওপর যোগ হয়েছে আরো সাত কলেজের দুই লাখ শিক্ষার্থী। এসব শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়া, খাতা দেখা, ফল প্রকাশ, রেজিস্ট্রেশন, ভর্তি, ফরম পূরণ, একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তাদের বড় ধরনের জনবল দরকার। কিন্তু এই আয়োজন এখনো শুরুই করতে পারেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
নাম প্রকাশ না করে রাজধানীর একটি সরকারি কলেজের একজন বিভাগীয় প্রধান বলেন, ‘সাধারণত কোনো কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণার দিন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। এই সাত কলেজের ক্ষেত্রেও একই কাজ করা হয়েছে। কিন্তু মনে রাখা উচিত ছিল, এই সাত কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই লাখ। তাদের বিভিন্ন ধরনের কোর্স রয়েছে। ফলে এত শিক্ষার্থীকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিতে বেশ বেগ পেতে হবে। এ ক্ষেত্রে যদি ঘোষণার পরবর্তী বর্ষে যারা ভর্তি হবে তাদেরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হতো তাহলে আর কোনো সমস্যা হতো না। ’
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রাজধানীর সাত কলেজ অধিভুক্ত হয়েছে। তাই পুরো কাজটা তাদেরই, এখানে আমাদের কোনো দায়িত্ব নেই। কলেজগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে গেলে কী হবে আর না গেলে কী হবে—এ বিষয়ে আমরা আগেই মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। দুই লাখ শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে গেলে তাদের জনবল, টাকা-পয়সা কী লাগবে সেটাও প্রতিবেদনে আছে। এত শিক্ষার্থী সামাল দেওয়া, পরীক্ষা নেওয়া, খাতা দেখা তো চাট্টিখানি কথা নয়। ’
জানা যায়, ২০১৪ সালের ৩১ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি কলেজগুলোকে সংশ্লিষ্ট এলাকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়ার নির্দেশ দেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন প্রায় দুই হাজার ১৫০টি কলেজে ২১ লাখ শিক্ষার্থী থাকলেও সরকারি ১৮৪টি কলেজেই অধ্যয়ন করে ১৩ লাখ শিক্ষার্থী। সরকারি কলেজ পৃথক করার এই সিদ্ধান্তে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সে সময় আপত্তি জানিয়েছিল। তবে টেকেনি। গত বছরের ২৮ অক্টোবর এক সভায় অধিভুক্ত সরকারি কলেজগুলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৮৪টি কলেজকে ভাগ করে দিতেও সুপারিশ করে এ বিষয়ে গঠিত কমিটি। এর মধ্যে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রাজধানীর সাত কলেজ দেওয়া হয়। যদিও বাকি ১৭৭টি কলেজকে এখনো অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেওয়া হয়নি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) আব্দুল্লাহ আল হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সাত কলেজের দায়িত্ব যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েছে তাই পুরো দায়দায়িত্বই তাদের। তাদেরই উচিত এ ব্যাপারে দ্রুত করণীয় ঠিক করা। ’