১৯ এপ্রিল ২০১৭, বুধবার, ৯:৫০

ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমলেও দেশে বেড়েছে

রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির করে তুলছে সিন্ডিকেট

রমজানের আগেই অস্থির হয়ে উঠছে নিত্যপণ্যের বাজার। গত এক মাসের ব্যবধানে চাল, সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম ঊর্ধ্বমুখী। এছাড়া অ্যাংকর ডাল ও চিনি গত এক বছরের ব্যবধানে যথাক্রমে ২২ দশমিক ১২ শতাংশ ও ২৭ দশমিক ৯১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসেবেই দাম বাড়ার এ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আন্তজার্তিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমলেও উল্টো দেশের বাজারে বেড়েছে। গত বছর ডিসেম্বরে বিশ্ব বাজারে প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিনের মূল্য ছিল ৮০০ ডলার। মার্চের শেষে তা বিক্রি হয়েছে ৭১০ ডলারে। চার মাসের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম কমেছে ৯০ ডলার। কিন্তু দেশের বাজারে উল্টো দাম বেড়েছে।

বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১০৩ থেকে ১০৬ টাকা ও খোলা সয়াবিন ৯০ থেকে ৯২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা এক মাস আগেও লিটারে ৩ থেকে ৪ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর কায়দা পাল্টেছে। রমজানের সময় দাম বাড়ালে অধিক সমালোচনার মধ্যে পড়তে হয়। তাই আগেভাগেই দাম বাড়ানো হচ্ছে।

গত এক মাসের ব্যবধানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চালে ৫ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। টিসিবি’র হিসেবে গত বছর এপ্রিলে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ছিল ৩২ থেকে ৩৪ টাকা। কিন্তু চলতি বছর এপ্রিলে তা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪২ টাকায়। শতাংশের হিসেবে বেড়েছে ২৪ শতাংশ।

বর্তমানে রাজধানীর বাজারগুলোতে মোটা চাল স্বর্ণা/ইরি ৪০ থেকে ৪২ টাকা, পাইজাম/লতা মানভেদে ৪৪ থেকে ৫০ টাকা ও নাজিরশাইল/মিনিকেট মানভেদে ৪৮ থেকে ৫৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এক মাস আগেও মোটা চাল স্বর্ণা/ইরি ৩৪ থেকে ৩৫ টাকা, পাইজাম/লতা মানভেদে ৩৭ থেকে ৪৫ টাকা ও নাজিরশাইল/মিনিকেট মানভেদে ৪৬ থেকে ৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লায়েক আলী ইত্তেফাককে বলেন, বর্তমানে ধানের অভাবে অনেক মিল বন্ধ রয়েছে। এজন্য চালের দাম বেশি। তবে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। ৮/১০ দিনের মধ্যে বাজারে নতুন ধান উঠবে। তখন চালের দাম কমে যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাহাড়ি ঢলে বন্যা ও অতি বৃষ্টিতে সিলেট অঞ্চলের হাওরগুলো প্লাবিত হয়ে কৃষকের বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ায় চালের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

দাম বেড়েছে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার। টিসিবির হিসেবে, মাত্র এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ, রসুনের দাম ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ ও আদার দাম ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়েছে। গতকাল বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২২ থেকে ৩২ টাকা, রসুন ১০০ থেকে ২০০ টাকা ও আদা ৭০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়। অথচ এক মাস আগে মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৮ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ২০০ টাকা ও আদা ৬০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়।

এছাড়া গত এক বছরের ব্যবধানে অ্যাংকর ডাল ২২ দশমিক ১২ শতাংশ ও চিনি ২৭ দশমিক ৯১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। গতকাল বাজারে প্রতি কেজি অ্যাংকর ডাল ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও চিনি ৬২ থেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। কিন্তু এক বছর আগে প্রতি কেজি অ্যাংকর ডাল ৪০ থেকে ৪৬ টাকা ও চিনি ৫০ থেকে ৫৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

http://www.ittefaq.com.bd/trade/2017/04/19/111281.html