১০ এপ্রিল ২০১৭, সোমবার, ৯:০১

পোশাক রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কমছে

চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম নয় মাস অর্থাৎ জুলাই-মার্চ মেয়াদে তৈরি পোশাক খাতের পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ২ হাজার ৯২ কোটি ৮৮ লাখ ৩০ হাজার ডলার; যা এ সময়ের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫.৯৮ শতাংশ কম। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এবার এ খাতের পণ্য রপ্তানি আয় ২.৩৯ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া মার্চ মাসে পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধির হার কমেছে। এ মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ০.৯৭ শতাংশ। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বিজিএমএই হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

ইপিবির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ১ হাজার ১৪ কোটি ৩৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার। একই সময়ে ওভেন গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ১ হাজার ৭৮ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এতে আরও জানানো হয়েছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ১ হাজার ৩৩৫ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার ডলার। এর মধ্যে ওই বছরের নয় মাসে আয় হয়েছিল ৯৬৭ কোটি ৪৩ লাখ ২০ হাজার ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আলোচ্য খাতে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৪১৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে নিটওয়্যার পণ্যে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ হাজার ৩৮ কোটি ২০ লাখ ৫০ হাজার ডলার। আলোচ্য সময়ের মধ্যে এই খাতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে ১ হাজার ১৪ কোটি ৩৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২.৩০ শতাংশ কম। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আলোচ্য খাতের রপ্তানি আয় ৪.৮৫ শতাংশ বেড়েছে।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ওভেন গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ১ হাজার ৪৭৩ কোটি ৮৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এর মধ্যে ওই অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে আয় হয়েছিল ১ হাজার ৭৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আলোচ্য খাতে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ১৮৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মেয়াদে ওভেন গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে ১ হাজার ৭৮ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯.২০ শতাংশ কম। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আলোচ্য খাতের রপ্তানি আয় ০.১৮ শতাংশ বেড়েছে।
বিজিএমইএর সহসভাপতি ফেরদৌউস ফারভেজ বলেন, সাম্প্রতিকালে জার্মানিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশ ছাড়া আর কোথাও আশানুরূপ রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়নি। আবার বিভিন্ন দেশের মুদ্রার তুলনায় টাকা শক্তিশালী হওয়ায় রপ্তানি আয় কমেছে। আশা করেছিলাম, গত অর্থবছরের মতো এবারও ১০ শতাংশের মত প্রবৃদ্ধি হবে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা গেলেও গতবারের চেয়ে বেশ কম হবে।
ইপিবি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের পথম আট মাসে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ৩৮৪ কোটি ৮ লাখ ৫৭ হাজার ডলারের পণ্য। একই সময়ে জার্মানিতে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৩৭৮ কোটি ৪৪ লাখ ২২ হাজার ৪৭৭ ডলারের। সেই হিসাবে আট মাসে দুই দেশের রপ্তানির ব্যবধান প্রায় ছয় কোটি ডলার। অর্থবছরের প্রথম আট মাসে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ৭.৮৫ শতাংশ। গত বছরের প্রথম আট মাসে ৩৭১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। চলতি বছরের আট মাসে হয়েছে ৩৪২ কোটি ৩৭ লাখ ডলারের।
এদিকে গত অর্থবছরের একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪১০ কোটি ৭ লাখ ডলার ও জার্মানিতে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩২১ কোটি ৪৩ লাখ ডলারের। অর্থাৎ ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে যুক্তরাষ্ট্রে জার্মানির চেয়ে প্রায় ৯০ কোটি ডলারের পণ্য বেশি রপ্তানি করে বাংলাদেশ।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=60976&cat=3/