দেওয়ানগঞ্জে পশ্চিম কাজলাপাড়ায় ১৩ বছর আগে ভেঙে যাওয়া সংযোগ সড়ক মেরামত করা হয়নি আজও
১৭ জানুয়ারি ২০২২, সোমবার, ১২:৫৯

দেওয়ানগঞ্জ

অকাজের সেতু

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে পশ্চিম কাজলাপাড়া মণ্ডলবাজার-চর ডাকাতিয়া সড়কে প্রায় ১৩ বছর আগে আরসিসি ফুট ব্রিজের দু'পাশের অ্যাপ্রোচ সড়ক বন্যায় ভেঙে যায়। এক যুগ ধরে সড়কহীন ব্রিজটি ওই অঞ্চলের মানুষের কোনো কাজে আসছে না। ব্রিজের দু'পাশে বন্যায় মাটি সরে গিয়ে ছোট খালের সৃষ্টি হয়েছে। বন্যার সময় ছাড়াও বৃষ্টি হলেই ওই খালে পানি জমে। দু'পাশের অ্যাপ্রোচ সড়ক না থাকায় অকার্যকর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ব্রিজটি। ফলে এ সড়কে যাতায়াতকারী ব্রিজের পশ্চিম পাশের কয়েক হাজার মানুষকে প্রতিদিনের যাতায়াতে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। ব্রিজটিকে ঘিরে যাতায়াতের এ দৈন্যদশা প্রতিকারে এলাকাবাসীদে আবেদন এক যুগ ধরে উপেক্ষিত রয়েছে।

উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০০০ সালের দিকে পশ্চিম কাজলাপাড়া মণ্ডলবাজার-চর ডাকাতিয়া ১.৭ কি.মি. দৈর্ঘ্যের কাঁচা সড়কের ওপর ২৪ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি আরসিসি ফুট ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। যার ব্যয় প্রায় ২০ লাখ টাকা।

এলাকাবাসী জানান, ২০০৮ সালের দিকে বন্যায় ব্রিজের দু'পাশের অ্যাপ্রোচ সড়ক ভেঙে যায়। সেই থেকে ব্রিজটি অকার্যকর অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এ সড়কের সরাসরি যোগাযোগব্যবস্থা। দু'পাশে সংযোগ সড়কহীন ব্রিজটি কোনো কাজে আসছে না এলাকাবাসীদের। বর্ষা মৌসুমে ওই ব্রিজের নিচের খালের পানিতে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং শুস্ক মৌসুমে ব্রিজের নিচ দিয়ে বালুময় পথ ভেঙে চলাচল করতে হয় এলাকাবাসীর। এতে নিত্যদিনই এলাকাবাসীকে দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

নদীতে বর্ষার সময় এ অঞ্চলের পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা হয়ে ওঠে দুর্ভোগের। সঠিক সময় পণ্য বাজারজাত না করায় বিপাকে পড়তে হয় এ অঞ্চলের কৃষকদের। এ কারণে অনেক সময় কৃষকদের ঘরেই নষ্ট হচ্ছে তাদের উৎপাদিত কৃষিজ পণ্য।

গত এক যুগ ধরে এলাকাবাসী যাতায়াতে দুর্ভোগের শিকার হলেও টনক নড়ছে না কর্তৃপক্ষের। ব্রিজটির দু'পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে চলাচলের উপযোগী করা হলে দুর্ভোগের হাত থেকে বেঁচে যেত কয়েক হাজার মানুষ। সেই সঙ্গে স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের যাতায়াতের পথ সুগমসহ সহজতর হতো কৃষকদের পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা।

চিকাজানী ইউপি চেয়ারম্যান মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ব্রিজটি তিনি চেয়ারম্যান হওয়ার আগে নির্মিত হয়েছে। সড়কটি এ অঞ্চলের মানুষের জন্য খুবই জরুরি। এ সড়কে পথচারীসহ নিত্যদিন পারাপার করতে হয় কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য। ব্রিজের দু'পাশের অ্যাপ্রোচ সড়ক বন্যায় ভেঙে যাওয়ার পর থেকে এ অঞ্চলের মানুষের অন্তহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। উপজেলা এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে তারা জানান, ব্রিজটি তাদের ইনভেন্টরিতে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এ কারণে তারা কিছু করতে পারছেন না। এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে ব্রিজটির দু'পাশে অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করা প্রয়োজন।

উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, ব্রিজটি নির্মাণের সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। তবে এলাকাবাসীর দেওয়া তথ্য মতে, ব্রিজ নির্মাণ হয়েছিল জেলা পরিষদের অর্থায়নে। বন্যায় ওই ব্রিজ ঘিরে যে খালের সৃষ্টি হয়েছে সেখানে ২৪ মিটারের ছোট ব্রিজ টিকবে না। খালের গ্যাপ অনুযায়ী ব্রিজের ওই স্থানে ৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের ব্রিজ নির্মাণ করা প্রয়োজন।

https://www.samakal.com/todays-print-edition/tp-lokaloy/article/2201141542