৯ এপ্রিল ২০১৭, রবিবার, ১:৫৮

ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষ

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের একটি হল বন্ধ ঘোষণা

র্যাগ ডে পালন উপলক্ষে চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে (রামেক) ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও উত্তেজনার জেরে শহীদ কাজী নুরুন্নবী হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয় মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপ। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সন্ধ্যার মধ্যেই হলটি ফাঁকা করে দেয়ার জন্যে শিার্থীদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্য ডা: মোহাম্মদ নওশাদ আলী বিকেলে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বর্তমানে কলেজ ক্যাম্পাস ও হলসংলগ্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
উপাধ্য ডা: নওশাদ আলী জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে সংঘর্ষের পর থেকে ওই হলটির শিার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। গতকাল শনিবার সেই উত্তেজনা আরো ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ক্যাম্পাসে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহীদ কাজী নুরুন্নবী আবাসিক হলটি বন্ধ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে কলেজের পিংকু হলটি খোলা থাকবে বলে জানান উপাধ্য।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে শনিবার সকালে রামেক ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে এবং দফায় দফায় শোডাউন দিলে ফের উত্তেজনা দেখা দেয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কলেজ কর্তৃপরে নির্দেশে দুপুর থেকে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে শিবির নেতাকর্মীরা গ্রেফতার আতঙ্কে ও ছাত্রলীগের হামলার আশঙ্কায় ক্যাম্পাস ও হলে অবস্থান করতে পারছেন না বলে শিবিরের একটি সূত্র জানিয়েছে।
রাজপাড়া থানার ওসি আমান উল্লাহ জানান, পুলিশ মোতায়েনের পর সেখানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। ছাত্ররা হল না ছাড়া পর্যন্ত সেখানে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
এদিকে কলেজ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনায় গতকাল পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। রামেকের প্রফেসর ডা: মোসাদ্দেক হোসেনকে প্রধান করে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে কমিটিকে ১০ দিন সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে।
সূত্রটি আরো জানায়, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে শহীদ কাজী নূরুন্নবী ছাত্রাবাস আবার খুলে দেয়া হবে কিনা। তবে রামেকের অন্য একটি হল এবং তিনটি ছাত্রীনিবাস আগের মতোই খোলা থাকবে।
উল্লেখ্য, র্যাগ ডে পালন উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করছিলেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। কিন্তু ছাত্রশিবিরের কর্মীরা ও সাধারণ অনেক শিক্ষার্থী এ চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ নিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের সাথে শিবির কর্মীদের তীব্র বাগি¦তণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে দুই শিবিরকর্মী আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ পাঁচ শিবির কর্মীকে আটক করে।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/210723