সমগ্র বাংলাদেশের নজর এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লী সফরের ওপর নিবদ্ধ। ৭ এপ্রিল তিনি দিল্লী গেছেন। ঐ দিনের সব পত্রপত্রিকায় বলা হয়েছে যে, সকলের নজর এখন প্রতিরক্ষা চুক্তি বা প্রতিরক্ষা স্মারকের ওপর নিবদ্ধ। ইংরেজি ডেইলি স্টার শিরোনাম করেছে, “Defense in focus”. বলা হয়েছে যে, প্রতিরক্ষার ওপরে একটি নয় ২টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে। যখন আপনারা এই পত্রিকা পাঠ করবেন, তখন হয়তো দেখবেন যে স্মারকটি ইতোমধ্যেই সই হয়ে গেছে। এগুলো সই হওয়ার কথা ৮ এপ্রিল শনিবার। আর শনিবারেই আমার এই লেখা কমপ্লিট করে কম্পিউটারে দাখিল করার কথা। তাই সই হওয়ার পরে কি ঘটল এবং ঐ ২টি স্মারকে কি কি বিষয় রয়েছে সে সম্পর্কে আন্তরিক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আমি আলোকপাত করতে পারলাম না। তবে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব জয় শঙ্কর এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব প্রিয়া রঙ্গনাথন যে বক্তব্য দিয়েছেন তার ফলে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে। বাংলাদেশ থেকে যেসব সাংবাদিক শেখ হাসিানর ভারত সফর কাভার করতে দিল্লী গেছেন তাদের উদ্দেশ্যে যুগ্ম সচিব রঙ্গনাথন বক্তব্য রেখেছেন। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, “এই সফরের ফলাফল অবশ্যই হবে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা।” এই সফরে বাংলাদেশীদের জন্য কোনো সুখবর আছে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে রঙ্গনাথন বলেছেন যে, “আমি এমন কিছু বলতে চাই না যার ফলে আপনারা বিভ্রান্ত হবেন।” তিস্তা চুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আগামী ২ দিনে এমন কোনো ঘটনা ঘটবে না যার ফলে একটি নতুন ও নাটকীয় পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটতে পারে।” অনেক দিন থেকেই বলা হচ্ছে যে, এবার তিস্তা চুক্তি হবে না। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি যখন শেখ হাসিনার সন্মানার্থে মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করেন তখন সেই ভোজসভায় মমতা ব্যানার্জি যোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে যে নৈশ ভোজের আয়োজন করেন সেই নৈশ ভোজেও যোগ দেন পশ্চিম বঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ফলে দিল্লীতে এই মর্মে একটি গুঞ্জরণ সৃষ্টি হয় যে শেষ মুহূর্তে হয়তো তিস্তা নিয়ে একটি নাটকীয় কিন্তু ইতিবাচক পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে।
এই গুঞ্জরণের ফলে তিস্তা নিয়ে আশাবাদ যখন তুঙ্গে ওঠে, তখন মমতা ব্যানার্জির একটি উক্তি সেই আশাবাদে পানি ঢেলে দেয়। তিনি বলেন, তিস্তা নদীতে পানি নাই। তিস্তায় যখন কোনো পানি নাই, তখন আমি বাংলাদেশকে সাহায্য করব কিভাবে? এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব প্রিয়া রঙ্গনাথন বলেন, “তিস্তা চুক্তি হলে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের ওপর তার কী প্রভাব পড়বে সেটা নিয়ে ওই রাজ্যে এখনও কিছু প্রশ্ন বা সংশয় আছে। সেটার যতক্ষণ না নিষ্পত্তি হচ্ছে ততক্ষণ অবধি তিস্তা আমাদের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবেই রয়ে যাচ্ছে । আমরা তার মোকাবিলার চেষ্টা করে যাচ্ছি, কিন্তু এখনও সমাধানের কাছাকাছি পৌঁছতে পারিনি।”
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ২০১১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী যখন ঢাকা এসেছিলেন তখন তার সাথে পশ্চিম বঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ঢাকায় আসেন। যখন সকলেই ধারণা করেছিলেন যে, এবার অর্থাৎ ২০১১ সালে তিস্তা চুক্তি হয়েই যাবে, তখন চুক্তি স্বাক্ষরের একদিন আগে মমতা ব্যানার্জি পশ্চিম বঙ্গে ফিরে যান। ফলে তিস্তা চুক্তি মুখ থুবড়ে পড়ে। তখন বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. দীপুমনি এই বলে সান্ত¦নার বাণী শোনান যে, এবার হয়তো হয়নি, কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই তিস্তা চুক্তি হয়ে যাবে। সেই কয়েক মাস তো দূরের কথা। তার পরেও তিস্তা চুক্তি এই ৫ বছরে আলোর মুখ দেখেনি। ৫ বছর পর আবার প্রধানমন্ত্রী ভারত যাচ্ছেন। ৫ মাস পরে না হোক, ৫ বছর পরে তো তিস্তা চুক্তি হবে। এই আশায় বাংলাদেশের মানুষ বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু সেটাও এবার হলো না। ৩৩ থেকে ৩৫টি চুক্তি এবং স্মারক স্বাক্ষরিত হলো কিন্তু তার মধ্যেও তিস্তা চুক্তি হলো না। তিস্তা নদীতে কবে বান ডাকবে? সে কথা কেউ জানে না। গতবারে দীপুমনি যেমন বলেছিলেন, এবারও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী দীপুমনির কথা রিপিট করেছেন। বলেছেন যে, খুব শীঘ্রই তিস্তা চুক্তি হবে। দীপুমনির ৫ মাস যেমন ৫ বছরেও পূরণ হয়নি, তেমনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীর শীঘ্রই বলতে কত বছর বুঝিয়েছেন সেটাও পরিস্কার হয়নি।
॥দুই॥
২০১১ সালে বলা হয়েছিল যে, তিস্তার পানিবন্টন পশ্চিম বঙ্গের জন্য একটি স্পর্শকাতর বিষয়। সামনে পশ্চিম বঙ্গের বিধান সভা নির্বাচন। এই নির্বাচনের আগে এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে মমতা ব্যানার্জি চুক্তি করবেন না। ইলেকশনের পর বিষয়টি তিনি দেখবেন।
সেই ইলেকশন হয়ে গেছে। গতবারের চেয়ে মমতা ব্যানার্জি দ্বিতীয় মেয়াদে বিপুল ভোটে বিশাল জয় পেয়েছে। রাজনৈতিকভাবে পশ্চিম বঙ্গ থেকে কংগ্রেস উৎখাত হয়েছে। কিন্তু তিস্তার পানি বাংলাদেশে আসেনি। এখন বলা হচ্ছে যে, সামনে নাকি পশ্চিম বঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই নির্বাচনের আগে তিনি তার জনপ্রিয়তা রিস্কে ফেলবেন না। পঞ্চায়েত নির্বাচন যাবে। তারপরেও কি তিস্তার গাঙ্গে পানি আসবে? আর সেই পানি কি ভাটির টানে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে?
॥তিন॥
তিস্তার পানি পাওয়া গেল না। কিন্তু প্রতিরক্ষার ওপর দুইটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়ে গেল। একটি হলো প্রতিরক্ষা সহযোগিতার কাঠামো। একই চুক্তিতে থাকবে প্রতিরক্ষা বিষয়ক গবেষণা ও উন্নয়ন। আরেকটিতে থাকবে বাংলাদেশে সমরাস্ত্র সরবরাহ। সমরাস্ত্র সরবরাহ বলতে আসলে বোঝানো হয়েছে ভারত থেকে সমরাস্ত্র ক্রয়। বাংলাদেশকে যুদ্ধাস্ত্র দেয়ার জন্য ভারতের এতোই গরজ যে, এজন্য তারা বাংলাদেশকে ঋণও দিচ্ছে। আসলে প্রতিরক্ষা স্মারকে কেন সই করা হচ্ছে? কেনই বা অস্ত্র কেনার জন্য ঋণ দেয়া হচ্ছে? সেসব কথা বাংলাদেশের আওয়ামী অনুগত রেডিও, টেলিভিশন এবং পত্রপত্রিকা না বললেও ভারত থেকেই সেটি ফাঁস করে দেয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে যে, বাংলাদেশ যেন চীনের দিকে ঝুঁকে না পড়ে সেই জন্যই এসব চুক্তি এবং ঋণ।
বাংলাদেশ আর ভারতের সম্পর্ক তো এমনিতেই সর্বোচ্চ উচ্চতায় রয়েছে। আর কত ওপরে সেটিকে ওঠানো হবে? উত্তরটি দিয়েছে সেই ভারতীয় মিডিয়া। তারা বলেছে যে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী চীনা অস্ত্রে সজ্জিত। এখন আবার তারা চীন থেকে ২টি সাবমেরিন কিনেছে। ভারত উদ্বিগ্ন হয়েছে আর একটি কারণে। সেটি হলো, গণচীনের প্রেসিডেন্টের বিগত ঢাকা সফর। সংক্ষিপ্ত এই সময়ে এসে চীনের প্রেসিডেন্ট সরকারি খাতে ২৪ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ২৪০০ কোটি ডলার এবং বেসরকারি খাতে ১৩ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ১৩০০ কোটি ডলার- মোট ৩৭ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৩৭০০ কোটি ডলার সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর বিপরীতে ভারত এ পর্যন্ত মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৩০০ কোটি ডলালের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর বিনিময়ে ভারত আদায় করেছেন অনেক কিছু। ট্রানজিট নিয়েছে, সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করার অধিকার আদায় করেছে। শুধু তাই নয় সবচেয়ে বড় যে স্বার্থটি ভারত বাংলাদেশের নিকট থেকে হাসিল করেছে, সেটি হলো উত্তর পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদ দমন।
এত কিছুর বিনিময়ে মাত্র ১ বিলিয়ন ডলারের সব টাকাও কিন্তু পাওয়া যায়নি। অথচ সময় পাড় হয়ে গেছে ৭ বছর। পরের দুই বিলিয়ন ডলারের যাত্রা শুরু হয়নি। এবার আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দিল্লী সফর থেকে আবার সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণের অফার এসেছে। এই অফারগুলো কার প্রয়োজনে আসছে সে প্রশ্ন তো আছেই।
॥চার॥
এর বিপরীতে চীন এক ধাক্কাতেই ৩৭০০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিনিময়ে কোনো শর্ত দেয়নি। ভারত বলছে আমার নিকট থেকে অস্ত্র নাও। তার জন্য তারা ঋণ দিচ্ছে এবং বলছে যে, এই ঋণের সব টাকা দিয়ে আমার নিকট থেকে অস্ত্র কিনতে হবে। অথচ গণচীন বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে বলতে গেলে পুরোটাই সজ্জিত করেছে। অথচ এসব সমরাস্ত্রের মূল্য বাংলাদেশ এখনও অর্ধেকও পরিশোধ করেনি বলে জানা গেছে। এভাবে যদি বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা বাড়তে থাকে, তাহলে এমন একদিন আসবে যখন এদেশের প্রাধান্য এবং আধিপত্য বিস্তারে ভারত হয়তো পিছনে পড়ে যাবে। সেজন্যই তারা এবার অনাহুতভাবে, কোনো প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও, সমঝোতা স্মারকের মোড়কে বাংলাদেশের কাঁধে ২টি সামরিক চুক্তি চাপিয়ে দিচ্ছে। তবে খালি পেটে তো বন্ধুত্ব হয়না। তাই ভারত এবার ৫ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৫০০ কোটি ডলারের একটি সাহায্যের প্রতিশ্রুতি নিয়ে এগিয়ে এসেছে। কথা হলো, প্রতিশ্রুতি তো অনেক দেয়া হয় কিন্তু কয়টির বাস্তবায়ন হয়? অতীতের ৭ বছরে তিন বিলিয়ন টাকার পুরোটা পাওয়া যায়নি। এবার যে ৫ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দেয়া হলো তার পুরো টাকা কত বছরে পাওয়া যাবে?
যে ৫ বিলিয়ন ঋণের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে সেটিও কিন্তু ভারত বিনা স্বার্থে করেনি। স্বার্থটি তার নিজের। বলা হয়েছে যে এই অর্থ দিয়ে রেল লাইন, সড়ক পথ এবং নৌ পথের যোগাযোগ স্থাপনও বৃদ্ধি করা হবে। এসব যোগাযোগ এমনভাবে করা হবে যাতে করে রেল গাড়ি ও সড়ক পথের বিভিন্ন রুট দিয়ে ভারতে যাতায়াত করা যায়। শ্রীলঙ্কায় চীন বিশাল পরিমাণ ঋণ নিয়ে এসেছিল। এই ঋণের অর্থ ব্যবহার করে একদিকে শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যেমন বিরাট উন্নয়ন ঘটেছে, অন্যদিকে তেমনি চীনের সাথে শ্রীলঙ্কার ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধিতে ভারত প্রমাদ গুণেছে। ভেবেছে, এই বুঝি শ্রীলঙ্কা হাত ছাড়া হয়ে গেল। বাংলাদেশকে নিয়েও ভারত এমন দুশ্চিন্তায় রয়েছে।
আমার ইচ্ছে ছিল, দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করবো। কারণ, আজ শনিবার চুক্তি এবং স্মারকগুলো স্বাক্ষরিত হবে। চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে প্রতিরক্ষা স্মারক নিয়ে অত্যন্ত সংক্ষেপে দুটো কথা বলব। বেলা ১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। এখন পর্যন্ত অনলাইনে কোনো নিউজ পেলাম না। তাই ঐ অংশটি এই নিবন্ধে আর অন্তর্ভুক্ত করা গেল না।
শেষ করার আগে একটি কথা বলতে চাই। একজন নেতা বলেছেন, তিস্তা চুক্তি না হলে প্রতিরক্ষা চুক্তি নয়। তার বক্তব্যটি পড়ে তাজ্জব হয়ে গেলাম। তিস্তা চুক্তির সাথে কি প্রতিরক্ষা চুক্তি কোনো বিনিময় যোগ্য বিষয়? একটির সাথে আর একটির কোনো সম্পর্ক নাই। আমরা ভাটির দেশ। তিস্তা একটি অভিন্ন নদী। দুই দেশের মধ্য দিয়েই সেটি প্রবাহিত হয়েছে। তিস্তার পানি আমাদের নায্য অধিকার। সেটি ভারতকে দিতেই হবে। আর প্রতিরক্ষা চুক্তি আমাদের সার্বভৌমত্বের বিষয়। এটিতে আমাদের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন হতে পারে। কোনো দেশের সাথেই আমরা প্রতিরক্ষা চুক্তি করিনি। তাহলে ভারতের সাথে কেন করবো? এই প্রতিরক্ষা চুক্তির তো কোনো প্রয়োজন নাই।
আরেকটি কথা। ভারতের সাথে আমাদের সমস্যা কি শুধু মাত্র একটি? আর কোনো সমস্যা নাই? চুক্তি মোতাবেক গঙ্গার পানির নায্য হিস্যা বাংলাদেশ পাচ্ছে না। সীমান্তে বাংলাদেশীদেরকে ভারতীয়রা গুলী করে মারছে। বাণিজ্য বৈষম্য প্রবল। শুধু একটি তিস্তা নয়, ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে। সব গুলোর পানি বন্টন করতে হবে। এসব নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা করার ইচ্ছে রইলো। আজ এখানেই শেষ করছি।
Email: asifarsalan15@gmail.com