১৫ আগস্ট ২০২১, রবিবার, ৭:১৫

খুলনায় ভোজ্য তেলে সুখবর নেই ॥ চাল উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল

খুলনায় উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল চালের বাজার। ভোজ্য তেলে সুখবর নেই। ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি করায় দাম কমতির দিকে। পেঁয়াজে ঝাঁজের আভাস। সবজির বাড়তি দামে ক্রেতার অস্বস্তি। গত দেড় বছর ধরে দেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে খুলনাসহ সারাদেশ লকডাউনের আওতায় ছিল। অনেক মানুষের আয়ের পথ বন্ধ হয়েছে। অনেকের হাতে টাকা নেই বললে চলে। সবে মাত্র লকডাউন শেষ হয়েছে। স্বাভাবিক হওয়ার কথা, কিন্তু সব অস্বাভাবিক। এরপর দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি মানুষকে ভাবিয়ে তুলছে। গেল ইরি ধানের ভরা মওসুমে চালের দাম তেমন কমেনি। মিলার-ব্যাপারীর কারসাজির কারণে দফায় দফায় বেড়েছে।

খুচরা বাজারে ভাল মানের প্রতিকেজি সরু মিনিকেট চাল ৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। একইভাবে মাঝারিটা প্রতিকেজি ৫৪ টাকা, বাশমতি ৬৮ টাকা, নাজিরশাল ৬৮ টাকা, পরশবালাম ৫২ টাকা, ইরি আতপ ৪০ টাকা, ২৮-লোকাল ৫৬ টাকা, ২৮ আতপ ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। নগরীর রূপসা বাজারের চাল বিক্রেতা মো. নান্টু মিয়া জানান, বৈশাখ মাসে চালের দাম কমার কথা ছিল, কিন্তু তা হয়নি। বড় বড় মিলার ও ব্যাপারী ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছে। তারা ধানের ভরা মওসুমে স্বল্পদামে এটা ক্রয় করে মজুত করে দাম বৃদ্ধি করে বাজারকে অস্থিতিশীল করতে চায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বড় বাজারের এক বিক্রেতা জানান, ভারত থেকে গত দু’মাস এলসি’র কোন চাল আসছে না। তিনিও জানালেন একই কথা। খুলনায় চালের বাজার অস্থিরতার কারণ হিসেবে নওয়াপাড়ার কয়েকজন ব্যবসায়ীর নাম উল্লেখ করেছেন। তারা মূলত বাজারটা নিয়ন্ত্রণ করছেন। এলসি বন্ধ তাছাড়া দেশি চালের চাহিদা বাজারে ব্যাপক থাকায় চালের দাম বাড়ছে। তবে সরকার আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেয়ায় এ প্রভাব বাজারে পড়ে কি না, এখন দেখার বিষয়।

গেল মাসের শেষ দিকে এ অঞ্চলে চারদিন অতি বৃষ্টির কারণে সবজির ক্ষতি হয়েছে। সে কারণে বাজারে দাম একটু বেড়েছে। ফলে সপ্তাহের ছুটির দিন শুক্রবার হওয়ায় অনেকেই কাঁচা বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খেয়েছে। কাঁচা মরিচ মানভেদে প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অনুরূপভাবে বেগুন ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৪০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা ও পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। নতুন বাজারে বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, মরিচের দাম দু’সপ্তাহ হল বেড়েছে। অতি বৃষ্টির কারণে এ মূল্য বৃদ্ধি। তবে ভারত থেকে আমদানি হওয়ায় দাম এখন পড়তির দিকে। সয়াবিন তেল চড়া মূল্যে স্থির রয়েছে। বর্তমানে প্রতিটি ৫ লিটারের বোতল ৬৮০ টাকা, ২ লিটারের বোতল ২৯৫ টাকা ও ১ লিটারের বোতল ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বড় বাজারের খুচরা তেল ব্যবসায়ী বাবুল জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এ কারণ দেখিয়ে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ পণ্যটির দাম হু হু করে বেড়েছে। নগরীর নতুন বাজারে কথা হয় মুনসুর হাবিবের সাথে। তিনি খুলনার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। চড়া দ্রব্যমূল্যে তিনি এ প্রতিবেদকের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সংসার চালতে গিয়ে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন।

https://dailysangram.com/post/461708