১৩ আগস্ট ২০২১, শুক্রবার, ১:৩৫

আর লকডাউন নয় করোনা নিয়ন্ত্রণে বিকল্প উপায় চান ব্যবসায়ীরা

আর লকডাউন নয়। ভ্যাকসিন বাড়িয়ে তার মাধ্যমেই করোনা নিয়ন্ত্রণে সমাধান চান ব্যবসায়ী নেতারা। তাদের ভাষ্য লকডাউনে লাভ হয়নি; বরং ক্ষতি হয়েছে। কারণ বিধিনিষেধের মধ্যেও ঘরের মধ্যেই মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাতেই প্রমাণিত করোনা নিয়ন্ত্রণে লকডাউন সমাধান নয়; বরং মানুষের মধ্যে টিকা নেয়ার হার বাড়লে করোনা ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসবে। গতকাল বিভিন্ন শপিংমল ঘুরে সাধারণ বিক্রেতা ও ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে কথা বললে তারা এমন মন্তব্য করেন।

একাধিক শপিংমল ও বিপণিবিতান ঘুরে দেখা যায়, লকডাউনে টানা ১৯ দিন বন্ধের পর দোকান ও শপিংমল খুলে দিলেও ক্রেতা না থাকায় অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা। বিক্রেতারা জানান, দীর্ঘ দিন পর দোকান খুললেও বিক্রি নেই। এর মধ্যেও করোনা পরিস্থিতি অস্বাভাবিক, তাই আবারো বিধিনিষেধ আসে কি না এ নিয়ে তারা শঙ্কিত। তারা জানান, লোকসান গুনতে গুনতে তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এখন আর পেছনে যাওয়ার পথ নেই। তাই চলমান পরিস্থিতিতে যেহেতু দোকান খুলে দেয়া হয়েছে, তাই তারা আর লকডাউন দেখতে চান না।

বিক্রেতাদের ভাষ্য, দীর্ঘ দিন পর দোকান খুললেও বেচা-বিক্রি একদম নেই। লকডাউন তুলে দিলেও করোনার ভয়ে মানুষ এখন খুব কমই দোকানপাটে আসে। তা ছাড়া করোনার এই দেড় বছরে মানুষের আয় রোজগারও কমে গেছে। তাই অতিপ্রয়োজনীয় কেনাকাটার বাইরে শপিংমলে আসে না। তাই আর বিধিনিষেধ না দিয়ে যদি দোকান-শপিংমল খোলা অব্যাহত থাকে, তবে হয়তো আস্তে আস্তে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কমবে। তাতে ধীরে ধীরে মানুষ মার্কেটমুখী হবে।

গতকাল একাধিক শপিংমল বিপণিবিতান ঘুরে তেমন ক্রেতার দেখা মেলেনি। যারা এসেছেন তাদের কেউ কেনাকাটা করেছেন; কেউ আবার না ঘোরাঘুরি করে সময় ক্ষেপণ করেছেন। তবে বিক্রেতারা বলছেন, প্রথম দিনের চেয়ে গতকাল দ্বিতীয় দিন ক্রেতা একটু বেশি ছিল। তাদের প্রত্যশা আগামী সপ্তাহের মধ্যে বিক্রি বাড়বে। আর লকডাউন না দেয়ার অনুরোধ করে তারা বলেন, যা লোকসান হওয়ার হয়েছে। বিক্রি কম তাও তাও তারা মেনে নেবেন। কিন্তু তারা আর লকডাউন চান না। কারণ এতে ব্যবসার লোকসানের সাথে দোকান কর্মচারীদের মানবেতর জীবনযাপন করে হয়। তাদের মতে, দোকান যদি খোলা থাকে তবে অন্তত কর্মচারীরা ডালভাত খেয়ে বাঁচতে পারবেন। অন্যান্য সময়ের চেয়ে গতকাল ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির ক্ষেত্রে তেমন উদাসীনতা দেখা যায়নি। যারাই এসেছেন সবার মধ্যে স্বাস্থ্য সচেনতা লক্ষ করা গেছে। তবে বিপণিবিতানগুলোর সামনে নিয়ম রক্ষার জীবাণুনাশক থাকলেও থার্মোমিটার ছিল না। সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে অনেকেই উদাসীন ছিলেন।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, এত দিনের লকডাউনে দেশের কোনো লাভ হয়নি; বরং ক্ষতি হয়েছে। কারণ লকডাউনের মধ্যেও ঘরে ঘরে মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এখনো হচ্ছে। তিনি বলেন, তারা আর লকডাউন চান না; বরং সরকারের উচিত বিধিনিষেধ না দিয়ে ভ্যাকসিন বাড়ানো। তাতে আস্তে আস্তে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসবে।

তিনি বলেন, বিরাজমান পরিস্থিতিতে যেহেতু সব খুলে দেয়া মার্কেটে ক্রেতা বাড়বে বলে মনে হয় না। তার পরও সব খোলা রাখা উচিত। কারণ দোকান বন্ধ থাকলে সব মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। তাই ক্রেতা না হোক দোকান খোলা থাকলে অন্তত মালামালগুলো রক্ষা করা যাবে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/601174/