৭ আগস্ট ২০২১, শনিবার, ১২:৩২

১৩৫ দেশে ডেল্টার সংক্রমণ

বিশ্বের ১৩৫টি দেশে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরন ছড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এ তথ্য দিয়েছে। বিশ্বে করোনার সংক্রমণ বেড়েই চলছে। এরই মধ্যে বিশ্বে করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তির মোট সংখ্যা ২০ কোটি ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা ৪২ লাখের বেশি। ডব্লিউএইচও আগেই সতর্ক করে বলেছিল যে ডেল্টার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ধরনটি করোনার অন্য সব ধরনকে দ্রুত ছাপিয়ে যেতে পারে। আর শিগগিরই ডেল্টা হবে করোনার প্রাধান্যশীল ধরন। ডব্লিউএইচওর সেই সতর্কতা এখন বাস্তবে ফলতে দেখা যাচ্ছে। খবর এনডিটিভি।

ডেল্টার পাশাপাশি করোনার অন্য ধরনগুলোর সংক্রমণও ছড়াচ্ছে। ডব্লিউএইচও জানায়, বিশ্বের ১৩২টি দেশে করোনার বেটা ধরন ছড়িয়েছে। ৮১টি দেশে ছড়িয়েছে গামা ধরন। আলফা ধরন ছড়িয়েছে ১৮২টি দেশে। করোনার ডেল্টা ধরন প্রথম শনাক্ত হয় ভারতে। গত বছরের অক্টোবরে ধরনটি শনাক্ত হয়। করোনার এই ধরন অতি সংক্রামক। ডেল্টা দ্রুত একজনের কাছ থেকে অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। মূলত এ ধরনের কারণেই ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মারাত্মক আকার ধারণ করে। সংক্রমণের ধাক্কায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দেশটি।

ডব্লিউএইচওর পক্ষে থেকে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত শনাক্ত করোনার ধরনগুলোর মধ্যে ডেল্টা সবচেয়ে সংক্রামক। যারা টিকা নেননি- এমন জনগোষ্ঠীর মধ্যে ডেল্টা ধরন দ্রুত ছড়াচ্ছে। সম্প্রতি দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, বিশ্বে করোনার সংক্রমণ নতুন করে বৃদ্ধির জন্য অতি সংক্রামক ডেল্টাসহ অন্যান্য ধরন ভূমিকা রাখছে। ফলে বিশ্বে দুঃস্বপ্ন ফিরে আসছে।

চীনে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে : চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার দেশটির ন্যাশনাল হেলথ কাউন্সিল জানিয়েছে, পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১২৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে চীনে। ন্যাশনাল হেলথ কাউন্সিলের দেয়া তথ্যানুসারে, গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় চীনে ৮৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৬২ জন স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর নতুন শনাক্ত ১২৪ জনের মধ্যে ৮০ জন স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত। এ ছাড়া নতুন সংক্রমিত ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৮ জনের শরীরে কোনো উপসর্গ নেই। এর আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ৫৪। এ দিকে সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও নতুন করে কেউ মারা যায়নি চীনে। দেশটির সরকারের দেয়া তথ্যানুসারে, এ পর্যন্ত মারা গেছে চার হাজারের বেশি করোনা রোগী। আর আক্রান্ত হয়েছেন ৯৩ হাজারের বেশি।

শিশুদের শরীরে করোনা স্থায়ী হয় না : গবেষণা : শিশুদের শরীরে করোনার উপসর্গ স্থায়ী হওয়ার ঘটনা বিরল। আর বেশির ভাগ শিশুই এক সপ্তাহের আগেই করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠে। লন্ডনের কিংস কলেজের গবেষণায় এমনটি বলা হয়েছে। গবেষণাটি দ্য ল্যানসেট চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলসেন্ট হেলথ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। খবর রয়টার্সের। কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষণায় বলা হয়, খুব কম শিশুই করোনার উপসর্গে দীর্ঘ সময় ধরে ভোগে। আর শিশুদের করোনার সাধারণ উপসর্গ হলো মাথা ব্যথা ও ক্লান্তি। গবেষকরা বলছেন, বয়স্কদের চেয়ে শিশুদের করোনায় ঝুঁকি কম। যুক্তরাজ্যের জো কোভিড স্টাডি অ্যাপ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষণাটি করা হয়েছে। ৫ থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত বয়সী এক হাজার ৭৩৪টি শিশুর ওপর গবেষণাটি করা হয়েছে। ব্রিটেনের কিংস কলেজের অধ্যাপক এবং এ গবেষণার অন্যতম লেখক এমা ডানকান গবেষণার ফলাফলকে অত্যন্ত স্বস্তির বলে উল্লেখ করেছেন।

২০০ কোটি ডোজ টিকা দেবে চীন : চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, মহামারী করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য চলতি বছরই বিশ্বকে ২০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে তার দেশ। খবর পার্সটুডে। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কো-অপারেশন ফোরামে পাঠানো এক লিখিত বিবৃতিতে চীনা প্রেসিডেন্ট এ মন্তব্য করে বলেছেন, কোভ্যাক্স গ্লোবাল ভ্যাকসিন তৈরি ও বিতরণের জন্য চীন ১০ কোটি ডলার অনুদান দেবে। বৃহস্পতিবার ফোরামের ওই বৈঠকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, চীন এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য ভ্যাকসিনের ৭৭ কোটি ডোজ সরবরাহ করেছে।

ইউরোপে বাণিজ্যিক ছাড়পত্র চাইবে না সেরাম : কোভিশিল্ড বাজারজাতকরণের জন্য ইউরোপীয় নীতিনির্ধারকদের কাছে আলাদা কোনো ছাড়পত্রের আবেদন করবে না সেরাম ইনস্টিটিউট। কারণ সেরামের অংশীদার অ্যাস্ট্রাজেনেকা এরই মধ্যে ভারতীয় সংস্থাটিকে বিকল্প উৎপাদনকেন্দ্র হিসেবে বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া। এই ‘মার্কেটিং অ্যাপ্রুভাল’ বা বিপণন অনুমতি হচ্ছে ইউরোপ ভ্রমণে ‘গ্রিন পাস’-এর জন্য টিকার অনুমোদন সম্পর্কিত অন্যতম শর্ত। ব্রিটিশ-সুইডিশ ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে তৈরি করেছে করোনা টিকা ভ্যাক্সজেভ্রিয়া। তাদের অনুমতিসাপেক্ষে একই প্রযুক্তিতে টিকা উৎপাদন করছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট, যার নাম দেয়া হয়েছে কোভিশিল্ড।

টিকা না নিয়ে অফিসে যাওয়ায় বরখাস্ত : করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণ না করে অফিসে যাওয়ায় তিন কর্মীকে বরখাস্ত করেছে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন। প্রতিষ্ঠানিটর প্রেসিডেন্ট জেফ জাকার এক মেমোতে কর্মীদের জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে ওই তিন কর্মীর বিষয়টি তাদের নজরে আসার পর তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই- এ বিষয়ে আমরা নীতি জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছি।’ বৃহস্পতিবার সিএনএনের সিনিয়র মিডিয়া রিপোর্টার অলিভার ডার্সি ওই মেমোর সারাংশ টুইট করেন।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/599919