৬ আগস্ট ২০২১, শুক্রবার, ১২:২৩

লকডাউনের মেয়াদ ৫ দিন বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন

শিল্প-কারখানা খোলা, চলবে অভ্যন্তরীণ বিমান

সব ধরনের শিল্প-কারখানা খোলা ও অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচলের সুযোগ রেখে চলমান কঠোর লকডাউনের (বিধিনিষেধ) মেয়াদ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।

বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে চলমান লকডাউনের মেয়াদ পাঁচ দিন বাড়িয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে আগামী ১০ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়ানোর কথা জানানো হয়েছে।

এদিকে এ প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে বিভিন্ন এয়ারলাইনসগুলো অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে। বিভিন্ন শিল্প-কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে কর্মীদের নোটিশ দিয়েছে।

এদিকে চলমান লকডাউন আর বাড়বে না বলে গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। ওইদিন সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় তিনি বলেন, বিধিনিষেধের মেয়াদ ১০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ১১ আগস্ট থেকে খুলবে সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি অফিস, দোকানপাট, শপিংমল। সীমিত পরিসরে চলবে গণপরিবহণ। তিনি আরও বলেছেন, ১১ আগস্ট থেকে এই কঠোর বিধিনিষেধ আর থাকবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবকিছু ধীরে ধীরে খুলে দেওয়া হবে।

এদিকে বৃহস্পতিবার জারি করা প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, করোনাভাইরাসজনিত রোগ (কোভিড-১৯) সংক্রমণের পরিস্থিতি বিবেচনায় আগের সব বিধিনিষেধের অনুবৃত্তিক্রমে দুই শর্তে বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ানো হলো। শর্ত দুটি হচ্ছে-শিল্প, কল-কারখানা বিধিনিষেধের আওতাবহির্ভূত থাকবে ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল করবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এর আগে ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা খোলার অনুমতি দিয়েছিল সরকার। সব ধরনের শিল্প-কারখানা খোলার অনুমতি দেওয়া হলো। অপরদিকে গণপরিবহণ বন্ধ রাখা হলেও বিমান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হলো। এর আগে দেশে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় কোভিড সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি কমপক্ষে ১৪ দিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়ার সুপারিশ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের জন্য সরকার সারা দেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। দেওয়া হয় ২১টি নির্দেশনা। এই সময়ে জরুরি সেবা ছাড়া অন্য সব অফিস-আদালত বন্ধ, যান্ত্রিক যানবাহনে যাত্রী বহনও নিষিদ্ধ করা হয়। জনসাধারণকে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। রাস্তায় বেরিয়ে যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিতে না পারলে করা হচ্ছে গ্রেফতার ও জরিমানা। এ বিধিনিষেধের পরও পরিস্থিতির দৃশ্যমান কোনো উন্নতি হয়নি। বরং আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় প্রতিদিনই হচ্ছে নতুন রেকর্ড। এ সময় চলমান বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর পক্ষে সুপারিশ করে কোভিড সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। সেই সুপারিশের আলোকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ বাড়িয়ে ৫ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আদেশ জারি করা হয়।

এরপর পবিত্র ঈদুল আজহার কারণে বিধিনিষেধ ১৫ থেকে ২২ জুলাই শিথিল করা হয়। সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় ২৩টি শর্ত সংযুক্ত করে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত ফের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে আদেশ জারি করা হয়। ওই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই বৃহস্পতিবার সকালে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করল সরকার।

এর আগে গত রোববার থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানাগুলো খুলে দেওয়া হয়। হঠাৎ করে শিল্প-কারখানা খোলার ঘোষণার পর গণপরিবহণ বন্ধের মধ্যেই চরম ভোগান্তি নিয়ে শনিবার সকাল থেকে কর্মস্থলের উদ্দেশে রওয়ানা দেন পোশাক শ্রমিকরা। পরে শ্রমিকদের যাতায়াতের সুবিধায় কিছু সময়ের জন্য লঞ্চ ও বাস চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/450781