৬ আগস্ট ২০২১, শুক্রবার, ১২:১৮

মাধ্যমিক শিক্ষা গুরুত্ব হারাল কেন?

শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। এ প্রবাদটি শিক্ষার গুরুত্ব বোঝাতে স্লোগান হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে কিন্তু তাতে নির্দিষ্ট করা হয়নি যে, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, না উচচশিক্ষা; কোন স্তরের শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড? ধরে নেয়া যেতে পারে, সব স্তরের শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। সেটি হয়ে থাকলে সব স্তরের শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়া প্রথমত সংবিধানসম্মত দায়-দায়িত্ব রাষ্ট্রের। সে জন্য বাংলাদেশ সংবিধানে শিক্ষাকে ‘জনগণের মৌলিক অধিকার’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সংবিধানে এ কথাও বলা রয়েছে, ‘রাষ্ট্রই জনগণের মৌলিক অধিকারকে নিশ্চিত করবে’। কিন্তু দেখা গেছে, সেটি হয়নি। কারণ সেই ব্রিটিশ আমল থেকে অদ্যাবধি যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন, তারা শুধু রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ভোগ করেছেন অথচ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বহু দায়িত্ব পালন করেননি। ফলে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট জনগুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অধিকারের মতো বিষয় থেকেও মানুষ বঞ্চিত হয়েছে, বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে নিরবধি। বলা হয়ে থাকে, জনগণের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে না পারলে একটি রাষ্ট্র সমৃদ্ধ হতে পারে না। এ কথাটি বিলম্বে হলেও বাংলাদেশ আংশিক বুঝতে পেরে প্রাথমিক শিক্ষাকে ঢেলে সাজাতে গিয়ে ২০১০ সালের শিক্ষানীতিতে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার স্তর নির্ধারণ করা হলো। কিন্তু রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত স্কুলগুলোকে জাতীয়করণ করা হলো। ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণী বাদ পড়ে থাকল। কেন জাতীয়করণ থেকে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম শ্রেণী বাদ পড়ল এবং অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার স্তরই বা কেন নির্ধারণ করা হলো? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় না।

শিক্ষার গুরুত্ব যদি জাতির মেরুদণ্ডকে সোজা করা বোঝায় তা হলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সে দায়িত্ব পালন করে সবচেয়ে বেশি। কারণ একটি জাতির ২০ শতাংশেরও কম মানুষের ভাগ্যে উচ্চশিক্ষা নেয়ার সুযোগ থাকে। বাকি ৮০ শতাংশ মানুষ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা নিয়ে সুশিক্ষিত হতে পারলে একটি জাতিই বিশ্বের বুকে দাঁড়িয়ে যেতে পারে। এ জন্য বলা যেতে পারে, মাধ্যমিক শিক্ষাই হচ্ছে জাতির মেরুদণ্ড সোজা করার শিক্ষা। সেই মাধ্যমিক শিক্ষা ইংরেজদের সময় থেকেই অবহেলিত। যদিও ইংরেজদের আগে মোগল আমলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের কাছ থেকে জমি ও পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে এসেছে। মুসলমান শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলায় বিভিন্ন স্থানে মসজিদ, মাদরাসা ও মক্তব স্থাপন করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান ইসলামী সংস্কৃতি ও শিক্ষার কেন্দ্ররূপে ব্যবহৃত হতে পেরেছে। মোগল আমলে রাষ্ট্রভাষা ছিল ফারসি। মুসলিম-হিন্দু উভয়েই জীবিকার তাগিদে ফারসি শিখে নিতেন। গৌড়, পাণ্ডুুয়া, সোনারগাঁও, ঢাকা, মুর্শিদাবাদ, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও রংপুরে বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল। মোগল শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অগ্রাধিকার পেয়েছে। কিন্তু ব্যত্যয় ঘটতে শুরু করেছে পলাশী যুদ্ধের পরে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সরকার ভারতবর্ষের অধিবাসীদের মধ্যে শিক্ষাবিস্তারকে তাদের দায়িত্ব বা আইনগত বাধ্যবাধকতা মনে করতে পারেনি। তারা শুধু ইংরেজি শেখানোর প্রচেষ্টাকে অব্যাহত রাখতে পেরেছে। হুগলিতে শ্রীরামপুর মিশন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ইংরেজি শিক্ষার প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হতে থাকে এবং রাজা রামমোহন রায় ইংরেজি শিক্ষার পক্ষে সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব বাতিল চেয়ে গভর্নর জেনারেল বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। ১৮৩৫ সালে লর্ড মেকলে ইংরেজি শিক্ষাসংক্রান্ত নথিপত্র তৈরি করে গভর্নর জেনারেল লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের মাধ্যমে অনুমোদন করিয়ে নেন। ঞযব ঋৎববফড়স ড়ভ চৎবংং অপঃ-১৮৩৫ আইন করে ইংরেজি ভাষার বই মুদ্রণ, প্রকাশনা ও প্রাপ্যতাকে উৎসাহিত করা হয়েছে এ জন্য যে, এতে ইংরেজি ভাষা প্রসার লাভ করতে পারবে। কয়েক বছর পর সরকারি কাগজপত্রের ভাষা হিসেবে ফারসি ভাষাকে বিলুপ্ত করা হলো এবং এর স্থলে ইংরেজির প্রবর্তন করা হলো। ১৮৪৪ সালে ১০ অক্টোবর লর্ড হার্ডিঞ্জ ঘোষণা করলেন, সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষার জ্ঞানকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এ ঘোষণা ভারতবর্ষে ইংরেজি শিক্ষার চাহিদাকে বেগবান করে তুলল।

১৮৫৪ সালে চার্লস উডের ঊফঁপধঃরড়হধষ উবংঢ়ধঃপয নীতি প্রতিটি প্রদেশে শিক্ষা পরিচালনার জন্য আলাদা ডিপার্টমেন্ট সৃষ্টি করে। ১৮৫৭ সালে কলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং এৎধহঃং রহ-অরফ প্রবর্তনের প্রস্তাব করা হলো। এ প্রস্তাবটি পরে সরকারের শিক্ষানীতি হিসেবে কাজ করে। এসব প্রস্তাবের কোনোটিতেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা নিয়ে কোনো সুপারিশ লক্ষ করা যায়নি। ফলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার প্রতি অবহেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে যুগের পর যুগ। শিক্ষায় ব্রিটিশদের শৈথিল্য লক্ষ করে উনিশ শতকের শেষের দিকে জাতীয়তাবাদের চেতনা সংগঠিত হতে থাকে। এ সময় জাতীয় কংগ্রেস ও মুসলিম সংস্থাগুলো একত্রে ব্রিটিশ শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে থাকে। এর মধ্যে ১৮৯৯ সালে লর্ড কার্জন ভাইসরয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। জাতীয়তাবাদী জনগণের চাপে তিনি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গোটা কয়েক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন, যেগুলো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের আদর্শ হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করা হয়েছিল এবং এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল। এ ধারাটিই বাংলাদেশের শিক্ষানীতিতে বলবৎ থাকতে দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ সরকারি শিক্ষা বিভাগ দ্বারা বেসরকারি শিক্ষা নিয়ন্ত্রিত হয়ে আসছে। উল্লেখ্য, ১৮৩৫ সালে “গবপধঁষধু’ং গরহঁঃব’’ প্রস্তাবে বলা হলো, সরকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার কোনো দায়-দায়িত্ব গ্রহণ না করে সবিশেষ উচ্চশিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করবে, যার প্রভাবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা স্বয়ংক্রিয় সচল থাকবে। দুঃখের বিষয় হলো, ঔপনিবেশিক আমল শেষ হয়েছে ৭৫ বছর আগে। তার পর পাকিস্তান। সেখান থেকে বাংলাদেশ; অথচ সামান্য কিছু পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে শিক্ষার সেই ব্রিটিশ ধারাটি এখনো সচল রয়েছে।

কয়েক দশক ধরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার ভেতরে আনার দাবি জোরালো হলেও সে দাবি অগ্রাহ্য করা হয়েছে বারবার। এই দশকে মাধ্যমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণের দাবি অব্যাহত রাখা হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে। সে পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী এক বক্তব্যে বলেছেন, শিক্ষা জাতীয়করণে আমাদের গবেষণার দরকার আছে। শিক্ষামন্ত্রীর এমন অদূরদর্শী বক্তব্যে মানুষের মধ্যে প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে; তা হলে গবেষণা ছাড়া বারবার শিক্ষানীতি প্রণয়নের দরকার হয়েছিল কেন? বলাবাহুল্য, মাধ্যমিক শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট সব মহল অর্থাৎ অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক সবাই লক্ষ করেছেন যে, তারা রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের জাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছেন, সেটি বুঝতে গবেষণার দরকার পড়ে এমন নির্বোধ মানুষের সংখ্যা হয়তো বাংলাদেশে নিতান্তই অপ্রতুল। খালি চোখেই দেখা যায়, গ্রামগঞ্জের ৯৭ শতাংশ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক বিরাট বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। শিক্ষার মাত্র ৩ শতাংশের সাথে যারা জড়িত তারা সরকারের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছেন। অথচ একই কারিকুলাম, একই সিলেবাস, একই পরীক্ষাপদ্ধতি, একই কর্মঘণ্টাসহ শিক্ষাদান পদ্ধতির সব কিছু একই নিয়মে পরিচালিত হলেও সরকারের আর্থিক সুবিধা থেকে বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষার সাথে জড়িতরা বঞ্চিত হয়ে আসছেন দীর্ঘ দিন। অর্থাৎ এই দেশে এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা চালু রয়েছে, যে ব্যবস্থায় কিছু শিক্ষক-শিক্ষার্থী আর্থিক সুবিধা ভোগ করবেন একরকম, আর বেশির ভাগ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ভোগ করবেন যৎসামান্য। আজব এক শিক্ষানীতি প্রবর্তিত হয়েছে বাংলাদেশে। শুধু তা-ই নয়, সরকারি সুযোগ-সুবিধায় লালিত-পালিতরা গোটা মাধ্যমিক শিক্ষাকে ইচ্ছামতো গিলে খাচ্ছে। ফলে বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালাতে হয় বেশি বেতনে, আর শিক্ষকদের দেয়া হয় মাত্র এক হাজার টাকা বাড়িভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা আর উৎসবভাতা দেয়া হয় মূল বেতনের মাত্র ২৫ ভাগ। পদোন্নতি নেই, নেই অবসর সুবিধা। এ বৈষম্য বোঝার জন্য কোনো সুস্থ মানুষকে গবেষণা করে বুঝতে হবেÑ এমন প্রস্তাব হাস্যকর। দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছর হলো। এই ৫০ বছরেও ঠিক করা গেল না মৌলিক অধিকারের দিক থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা কতটা গুরুত্বের দাবি রাখে।

কে না জানে ঔপনিবেশিক ইংরেজরা ভারতবর্ষকে দিতে আসেনি, নিতে এসেছিল। তারা ছিল ফ্যাসিস্ট, কর্তৃত্ববাদী, দখলদার। আমরা এটাও জানি, কর্তৃত্ববাদী, দখলদার, ফ্যাসিস্ট সরকারের কখনোই সময় হয়ে ওঠে না টেকসই জাতি, রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা নিয়ে ভাববার। এ ধরনের সরকারে থাকা লোকজনের লক্ষ্য থাকে কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে ওঠা এবং শাসনের নামে রাষ্ট্রের সম্পদ শোষণ করা। শিক্ষাব্যবস্থা নিয়েও ঔপনিবেশিক আমলে এ চরম সত্য প্রতিফলিত হয়েছে বারবার এবং শিক্ষার বিষয়ে তাদের আলসেমি ধরা পড়েছে তথ্য-উপাত্তসহ, যা এই নিবন্ধে উল্লিখিত হয়েছে। শিক্ষা বিষয়ে ইংরেজদের দেখানো পদ্ধতি বাংলাদেশেও অনুসরণ করা হয়েছে কৌশলে। ইংরেজ সরকার ১৮১৩ সালের চার্টার অ্যাক্ট আইনের মাধ্যমে জনগণকে শিক্ষা দেয়ার দায়িত্ব ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ওপর দিয়ে দিয়েছিল এবং কোনো প্রকার শিক্ষানীতি প্রণয়ন না করে, শিক্ষা খাতে বছরে মাত্র এক লাখ টাকা বরাদ্দ রেখেছিল। শিক্ষানীতি না থাকায় বরাদ্দকৃত সেই টাকাও অব্যয়িত থেকে যায়। এ সময় শিক্ষার বিষয়বস্তু ও মাধ্যম কী হবে, তা নিয়ে চলে দীর্ঘকাল বিতর্ক। একদল দাবি করে, প্রাচ্য ভাষায় প্রাচ্য বিষয় পড়াতে হবে। অন্য দল চেয়েছিল, পাশ্চাত্য ভাষায় শিক্ষা দেয়া হোক। ১৮৩৫ সালে পাশ্চাত্য ভাষায় শিক্ষা দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। প্রথম প্রথম ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা শুধু শহরাঞ্চলে ছিল। শিক্ষা কোম্পানির হাতে চলে যাওয়ায় উচ্চমূল্য পরিশোধ করে শিক্ষা নিতে হয়েছে। বলা হয়, ধর্মের কারণে মুসলমানরা ইংরেজি শিক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। আসলে সেটি নয়। শিক্ষার উচ্চমূল্যের কারণেই মুসলমানরা এ শিক্ষা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৮৫৫ সালের পর থেকে গ্রামাঞ্চলে প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি শিক্ষার জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠা শুরু হয়। তবে বিংশ শতাব্দীর দুই দশক পরও গ্রামাঞ্চলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল অতি অল্প। শিক্ষাবিস্তারে অবদান রাখার জন্য ইংরেজ সরকার রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ গ্রহণ না করে, সমাজের ধনী, জমিদার, ব্যবসায়ী, উকিল, মোক্তার প্রভৃতি শ্রেণী ও পেশার মানুষের কাছে আহ্বান জানায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করতে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরিকারীদের সরকার কর্তৃক রায় বাহাদুর, ‘খান বাহাদুর’সহ বিভিন্ন উপাধি দিয়ে উৎসাহ দেয়া হয়েছে। উপাধি লাভের আশায় জমিদার ও ধনী ব্যক্তিরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়তে থাকেন এবং নামমাত্র বেতনে শিক্ষক নিয়োগ করেন। শিক্ষাদান একটি ‘মহৎ পেশা’ এই বুলি প্রচার করে সরলমনা মানুষদের শিক্ষা দানে বাধ্য করতে থাকেন। এ ধারাটি স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে অব্যাহত থাকতে দেখা গেছে।

https://www.dailynayadiganta.com/post-editorial/599644