ছবি: স্টার মেইল
২ আগস্ট ২০২১, সোমবার, ১১:৪৮

করোনার মধ্যেই শ্রমিকদের কাজে যোগদান

জীবিকায় লণ্ডভণ্ড স্বাস্থ্যবিধি

দীর্ঘ যানজট ও গণপরিবহণ সংকটে সীমাহীন দুর্ভোগ

করোনা সংক্রমণের মধ্যেই শিল্প-কলকারখানা খুলে দেওয়ায় কাজে যোগ দিতে রোববারও হাজার হাজার শ্রমিক দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে গ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরেছেন। তাদের চলাচলের জন্য সরকার শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ ও বাস চালু করে। তবে চালক ও শ্রমিক সংকটে চাহিদা অনুযায়ী লঞ্চ ও গণপরিবহণ চলেনি।

এজন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গাদাগাদি করে কর্মজীবী মানুষগুলো কর্মস্থলে ফিরেছেন। এ সময় প্রায় কাউকেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। অনেকে দূরপাল্লার বাহন হিসেবে ট্রাকও বেছে নেয়। বাস-লঞ্চে শর্ত ভেঙে যাত্রী নেওয়া হলে আদায় করা হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া। শিল্পমালিকারা বলেছেন, তাদের ৭০ ভাগ শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছেন। বাকিরা এখনো আসেননি। এদিকে অনেক শ্রমিক ঢাকায় পৌঁছাতে পারেননি বলে লঞ্চের সময়সীমা রোববার দুপুর ১২টা থেকে সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বাড়িয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

দেশের অনেক সড়কে বাসের পাশাপাশি ট্রাক ও পিকআপ চলাচলে দীর্ঘ যানজটেরও সৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর দুই পাশেই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এসব এলাকার যাত্রীদের ঢাকায় পৌঁছাতে কয়েকগুণ বেশি সময় লেগেছে। জীবিকার তাগিদে করোনার মধ্যেও কর্মস্থলে ফেরা শ্রমিকদের চলাচলের সময় স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অথচ প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু এখনো উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে। এ অবস্থায় পোশাক শিল্পসহ কলকারখানা খুলে দেওয়ায় সংক্রমণ বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা।

রোববার সকালে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটে লঞ্চ চালু হওয়ার পর হঠাৎ করেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে মুহূর্তের মধ্যে ফেরিঘাটে জড়ো হন কয়েক হাজার যাত্রী। এতে ফেরিতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এ রুটে দুপুর ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ চালানোর ঘোষণা দিয়েছিল মালিক সমিতি। কিন্তু হঠাৎ করে বেলা ১১টার সময় লঞ্চ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে যাত্রীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। পরে অবশ্য প্রশাসনের আশ্বাসে আধা ঘণ্টা পর ফের চালু হয় লঞ্চ। এর পাশাপাশি ফেরিতেও প্রচুর যাত্রী পার হয়েছেন।

জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আজ সকাল থেকে লঞ্চ চালু হলেও যাত্রীচাপ কিছুটা কম ছিল। কিন্তু হঠাৎ বেলা ১১টার দিকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করায় ফেরিতে যাত্রীদের চাপ বেড়ে যায়। এ সময় ফেরিতে যাত্রীবাহী কোনো যানবাহন পার করতে দেওয়া হয়নি।
রোববার কর্মস্থলে ফেরা শ্রমিকদের বহনকারী গণপরিবহণসহ অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। রোববার ভোর থেকে এ যানজটের শুরু। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটা বেড়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে টাঙ্গাইল শহর বাইপাস সড়কের ঘারিন্দা পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকায় ছাড়িয়ে যায়। ফলে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় আটকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, তৈরি পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার কারণে গতকাল শনিবার স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ট্রাক, পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহন বঙ্গবন্ধু সেতু অতিক্রম করে ঢাকার দিকে যায়। রাতে বাস চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার পর প্রচুর বাসও রাস্তায় নামে। এসব যানবাহন গন্তব্যে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে শনিবার গভীর রাত থেকে উত্তরবঙ্গের দিকে ফিরতে থাকে। ফলে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে রোববার এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

পুংলি এলাকায় কথা হয় ট্রাকচালক সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে জানান, শনিবার বিকালে বগুড়া থেকে যাত্রী নিয়ে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত যান। পরে গভীর রাতে রওয়ানা হন। পথে বিভিন্ন স্থানে যাত্রাবিরতি দিয়ে সকালে টাঙ্গাইল এসে যানজটে পড়েন। টাঙ্গাইল শহর বাইপাসের রাবনা মোড় থেকে পুংলি পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা পার হতে তার দেড় ঘণ্টা সময় লাগে।

জানতে চাইলে একই সড়কের পিকআপ ভ্যানচালক রশিদুল ইসলাম জানান, রোববার দুপুর ১২টার পর যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আবার শুরু হওয়ার কথা ছিল। তাই শুক্রবার যেসব যানবাহন ঢাকার দিকে গেছে, সেগুলো নিজ এলাকায় ফেরার জন্য রওয়ানা হয়। একসঙ্গে অধিক যানবাহন রাস্তায় নামায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

রপ্তানিমুখী শিল্প-কলকারখানা খুলে দেওয়ায় ঢাকা এবং আশপাশের এলাকায়ও সকাল থেকে গণপরিবহণ চলাচল করে। অবশ্য দুপুরের পর সবই বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকার বাইরে থেকে আসা মানুষরা এসব গণপরিবহণে চড়ে নিজ নিজ গন্তব্যে গেছেন। উত্তরায় দেখা গেছে, সড়কে মানুষের ঢল নেমেছে। তবে অনেকেই বের হচ্ছেন জরুরি কাজ ছাড়া। আবার পরছেন না মাস্কও। সামাজিক দূরত্বও সব জায়গায় উপেক্ষিত।

জানতে চাইলে এয়ারপোর্ট ট্রাফিক জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আব্দুল্লাহ যুগান্তরকে জানান, গাড়ির চাপ তুলনামূলক বেশি দেখা যাচ্ছে। রোগীর স্বজনের চলাচল, বিদেশ থেকে লোকজন আসছেন এবং বিদেশে যাচ্ছেন, ব্যাংক খোলা, জরুরি সেবার সঙ্গে জড়িতরাও চলাচল করছেন। তবে তল্লাশিকালে সদুত্তর দিতে না পারায় বিভিন্ন গাড়ির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

উত্তরার বিভিন্ন সড়কে পুলিশের তল্লাশি থাকলেও তেমন কড়াকড়ি ছিল না। রাস্তায় রিকশার উপস্থিতি ছিল বেশি। বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, ব্যক্তিগত গাড়ি, মাইক্রোবাস, বিভিন্ন অফিসের মিনিবাসও দেখা গেছে।

পুরান ঢাকা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রোববার যাত্রীদের ভোগান্তির অন্ত ছিল না। দুপুর ১২টা পর্যন্ত গণপরিবহণ চলাচলের সময় অতিক্রম হওয়ার পর লঞ্চ, বাসে আসা যাত্রীরা টার্মিনালে নেমে কর্মস্থলে পৌঁছাতে চরম বিড়ম্বনায় পড়ে। নির্ধারিত গন্তব্যের যানবাহন না পেয়ে অধিকাংশ যাত্রী হেঁটেই রওয়ানা দেন। অনেকে রিকশা ভ্যান পিকআপে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে গেছেন।

পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায়, লঞ্চে আগত শত শত যাত্রী গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন। কোনো গণপরিবহণ না পেয়ে এক পর্যায়ে তারা একটি পিকআপ ভ্যানে গাদাগাদি করে গাজীপুরের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। এ সময় যাত্রীদের কেউই স্বাস্থ্যবিধির প্রতি ভ্রূক্ষেপও করেনি। ওই গাড়ির পাশে গেলে প্রতিবেদকের পরিচয় পেয়ে শাহিন নামে এক যাত্রী বলেন, গতকাল রাতে বরিশাল থেকে লঞ্চে রওয়ানা হয়ে রোববার দুপুরে সদরঘাট এসে পৌঁছাই। ঘাটে নেমে আশুলিয়া যাওয়ার জন্য কোনো যানবাহন না পেয়ে পিকআপ ভ্যানে উঠেছি। পিকআপে জনপ্রতি ৩০০ টাকা ভাড়ার চুক্তিতে ১৫ থেকে ২০ জন গাদাগাদি করে কোনোরকম যাচ্ছি। তবুও আমাদের ভাগ্য ভালো আমরা পিকআপ হলেও উঠতে পেরেছি।

জানতে চাইলে ডিএমপির লালবাগ ট্রাফিক বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মেহেদী হাসান যুগান্তরকে বলেন, মানুষ ঢাকায় প্রবেশ করে ভোগান্তিতে পড়েছে। তারপরও সরকারি নির্দেশনা পালন ছাড়া পুলিশের কিছু করার নেই। তবুও আমাদের সদস্যরা যাত্রীদের মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সচেতন করার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড পর্যন্ত বাস, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসসহ পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ চলতেও দেখা যায়। তবে রাজধানীতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাসের যাত্রীর চাপ ছিল বেশি। দুপুর ১২টা পর্যন্ত গণপরিবহণ চলার কথা থাকলেও রাত পর্যন্ত চলাচল করতে দেখা যায়। যাত্রাবাড়ী গোলচত্বর, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, দোলাইরপাড়, সাইনবোর্ড ঘুরে এমন চিত্র দেখা মেলে। এ সময় ট্রাফিক পুলিশসহ কোনো চেকপোস্ট দেখা যায়নি।

সাইনবোর্ড বিআরটিএর মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন আদালত-০৮ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফখরুর ইসলাম। আদালতে পিকআপ, ট্রাক, মিনিবাসসহ বিভিন্ন যানবাহনের কাগজপত্র দেখেন, চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স, মাস্ক না পরার অপরাধে ১৫টি মামলা দেওয়া হয়। তাদের ১১৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) : রোববার সকাল থেকে শিমুলিয়া ঘাটে ঢাকামুখী হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। বরিশাল, পটুয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, মাদারীপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে বাস, ট্রাক, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, মাহিন্দ্রাসহ বিভিন্ন যানবাহনে ঘাটে আসেন তারা। এদিন ১০টি ফেরি ও ৮৬টি লঞ্চ চলাচল করেছে। সকালে স্বাস্থ্যবিধি না মানা ও অতিরিক্ত যাত্রী বহনের অপরাধে ৪টি লঞ্চকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান সোহেল। পরে মালিক সমিতি লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়। এরপর রাত ১০টা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল চালু থাকার ঘোষণা এলে আধা ঘণ্টা পর পুনরায় লঞ্চ চালু করা হয়।
শিবচর (মাদারীপুর) : বেলা পৌনে ১১টার দিকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। হঠাৎ লঞ্চ বন্ধে বিপাকে পড়েন ঘাটে অপেক্ষমাণ ঢাকামুখী যাত্রীরা। সকাল থেকে ফেরিগুলো শুধু যানবাহন পারাপার করছিল, লঞ্চ বন্ধের ফলে মুহূর্তের মধ্যে ফেরিঘাটে জড়ো হন কয়েক হাজার যাত্রী। ফেরি ক্যামেলিয়া ঘাটে ভেড়ার সঙ্গে সঙ্গে হুড়মুড় করে যাত্রী বোঝাই হয়ে যায়। পরে কোনো যানবাহন ছাড়াই শুধু যাত্রী নিয়ে শিমুলিয়া ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায় ফেরিটি। এমনকি যাত্রী চাপে ঘাটে থাকা দুটি অ্যাম্বুলেন্সও ফেরিতে তোলা যায়নি। বাংলাবাজার ঘাটের বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন জানান, শিমুলিয়া প্রান্তে লঞ্চে জরিমানা করায় ৩০ মিনিট লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিল।

ভোলা : ইলিশা ঘাট থেকে রোববার সকালে ঢাকার উদ্দেশে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায় ওয়াটারবাস গ্রিন লাইন, এমভি ভোলা, এমভি দোয়েল পাখি, এমভি কর্ণফুলী ১০ ও এমভি কর্ণফুলী-৪। অপরদিকে চট্টগ্রামগামী যাত্রীদের নিয়ে লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরী ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়, সি-ট্রাক খিজির ৫, খিজির-৮, এসটি সুকান্তবাবু, এসটি ভাষা শহীদ সালাম, এমভি পারিজাত ও ফেরি কিষানী, ফেরি কুসুমকলি, ফেরি কনকচাঁপা। এ সময় হাজার হাজার যাত্রীর চাপে ইলিশা লঞ্চঘাটের জেটি ভেঙে পড়ার অবস্থা হয়েছিল বলে জানান স্থানীয়রা। ইলিশা ফেরিঘাটের ইজারাদার সরোয়ারদ্দি মাস্টার জানান, একসঙ্গে এত মানুষের চাপ থাকায় নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয়। ঘাটের টোলও ঠিকমতো আদায় করা সম্ভব হয়নি।

সিরাজগঞ্জ : বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়ক দিয়ে ঢাকাগামী হাজার হাজার যানবাহন কখনো ধীরগতি আবার কখনো থেমে থেমে চলাচল করে। এতে মাঝে মধ্যেই সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। শনিবার মধ্যরাত থেকে মহাসড়কের মুলিবাড়ি থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার মহাসড়কে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গণপরিবহণ চালুতে যাত্রীদের কিছুটা স্বস্তি মিললেও যানজটের কারণে পড়তে হয়েছে ভোগান্তিতে। অনেকে পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ ও মাইক্রোবাসেও গাদাগাদি করে ঢাকায় গেছেন।

রাজবাড়ী ও গোয়ালন্দ : সব ফেরি চালুর পাশাপাশি গণপরিবহণ ও লঞ্চ চালু করায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যাত্রীদের চাপ কমে আসে। রোববার সকাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা যাত্রীরা অনেকটা ভোগান্তি ছাড়াই ফেরিতে পদ্মা-যমুনা নদী পাড়ি দিতে পেরেছেন। তবে ফেরিঘাট পর্যন্ত আসতে পথে পথে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। শৈলকূপা থেকে আসা ঢাকাগামী যাত্রী আমজাদ হোসেন বলেন, ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলাম। কারখানা খুলে দেওয়ায় আজকের (রোববার) মধ্যে ঢাকায় পৌঁছাতে হবে তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে ট্রাকে লঞ্চঘাটে এসেছি।

টাঙ্গাইল : অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ভোর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকায় উত্তরবঙ্গমুখী লেনে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেতুর পূর্বপ্রান্ত থেকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা পর্যন্ত চলে যায় যানজট। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে সেতু কর্তৃপক্ষ একাধিকবার টোল আদায় বন্ধ রাখে।

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) : শাহজাদপুর উপজেলার হাজার হাজার কর্মজীবি মানুষ পরিবহণ সংকটে ভোগান্তিতে পড়েছেন। শনি ও রোববার উপজেলার মনাকষা, কৈজুরি, জগতলা, পাচিল ও জামিরতা ঘাট থেকে ইঞ্জিন চালিত শ্যালো নৌকা ও পণ্যবাহী ট্রাকে গাদাগাদি করে ঢাকায় যান তারা। যাত্রীরা জানান, নৌকার মাঝিরা ২০০ টাকার ভাড়া ৫০০ টাকা করে নিয়েছে। সড়ক পথেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়েছে।

হবিগঞ্জ : সকাল থেকে জেলায় গণপরিবহণ চলাচল শুরু করে। চলে দিনভর। জেলা সদর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় বাস। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পাওয়ার পর শনিবার রাতেই মালিক শ্রমিকদের জানিয়ে দেয় জেলা মটর মালিক গ্রুপ।

শেরপুর (বগুড়া) : ভোর থেকেই শেরপুর থেকে ঢাকামুখী মানুষের ভিড় দেখা যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আরও বাড়তে থাকে। এসময় যাত্রীদের হাতে, মাথায় ও কাঁধে ছিল ব্যাগ। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ছোটেন ঢাকার উদ্দেশে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/449088/