কারওয়ান বাজার
৬ এপ্রিল ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৯:৫৬

বৃষ্টি, জলজট, যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী

ঘণ্টাখানেকের বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। কোথাও কোথাও জমে যায় হাঁটুপানি। এতে ভোগান্তিতে পড়ে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। জলাবদ্ধতায় নাকাল নগরবাসীর দুর্ভোগের এসব চিত্র রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মালিবাগ ও মোহাম্মদপুর থেকে তোলা l প্রথম আলো
সকালে দু-তিন দফায় কয়েক মিনিটের হালকা বৃষ্টি। এরপর রোদ। বেলা তিনটার দিকে চারদিক অন্ধকার। ঝোড়ো বাতাস। এরপর ঝুম বৃষ্টি। বৃষ্টিতে রাজধানীর অনেক সড়কে জলাবদ্ধতা তৈরি করে। সৃষ্টি হয় যানজটের। এই বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা আর যানজটে গতকাল বুধবার নাকাল হয়েছে মানুষ। বিশেষ করে শিক্ষার্থী, অফিসফেরত ও খেটে খাওয়া মানুষ।

মোহাম্মদপুর
সকালে কয়েক মিনিটের হালকা বৃষ্টির পর রোদ ওঠায় মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী হাসিব রেজা ছাতা ছাড়াই বাড়ি থেকে বের হন। বিকেলের বৃষ্টি থেকে বাঁচতে ধানমন্ডিতে এক দোকানে আশ্রয় নেন তিনি। বললেন, ঢাকার আবহাওয়া এখন আর আন্দাজ করা যায় না। এই রোদ, এই বৃষ্টি।
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শুরু হওয়া ঘণ্টাখানেকের বৃষ্টিতে বেইলি রোড, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, কারওয়ান বাজার, মিরপুর রোড, গ্রিন রোড, তেজকুনিপাড়া এলাকায় জলজট তৈরি হয়। এফডিসির সামনের রাস্তায় প্রায় দুই ফুট পানি জমে যায়। শান্তিনগর-মালিবাগ-মগবাজার এলাকায় ভাঙা রাস্তা, কাদায় ভোগান্তি ছিল সবচেয়ে বেশি। বিদ্যালয়পড়ুয়া দুই মেয়েকে আনতে পথে বেরিয়েছিলেন গৃহিণী নাসরিন সুলতানা। বিকেলের বৃষ্টিতে সিদ্ধেশ্বরীর স্কুলের সামনের রাস্তায়ও পানি জমে যায়। নাসরিন বলেন, ‘পুরোটাই ড্রেনের ময়লা পানি। এর মধ্য দিয়েই চলতে হচ্ছে। ১০ মিনিটের বৃষ্টিতেও এই এলাকায় পানি জমে যায়।’
বৃষ্টিতে কারওয়ান বাজারের প্রজাপতি গুহার ভেতর আশ্রয় নিয়েছিলেন শ দুয়েক মানুষ। এই ভিড়ে ছয় মাসের শিশু কোলে দাঁড়িয়ে ছিলেন জোনাকী সুলতানা। বললেন, ‘সকালে তো বুঝি নাই এই অবস্থা হবে। আধা ঘণ্টা ধরে বাচ্চা নিয়ে দাঁড়ানো। কোনো গাড়ি পেলে উঠে যেতাম।’

মালিবাগ
বিকেলের বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়েন অফিসফেরত মানুষ। বৃষ্টি থামার পর বাসগুলোতে ছিল গাদাগাদি ভিড়। বাংলামোটর, পান্থপথ, ফার্মগেটে বাসের অপেক্ষায় অনেককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সঙ্গে ছিল তীব্র যানজট। গুলশান, উত্তরা, বিমানবন্দর সড়ক, মিরপুর ১০ নম্বর, কাজীপাড়া, কালশী এলাকা, রামপুরা, সোনারগাঁও সিগন্যালে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হয় যানবাহনকে। ব্যাংক কর্মকর্তা মাইশা রহমান বলেন, পান্থপথ সিগন্যাল থেকে ধানমন্ডি ৮ নম্বর রোডের বাসায় ফিরতে প্রায় দুই ঘণ্টা লেগে গেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র বলেছে, দুপুর থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত বর্ষণে আগারগাঁও এলাকা থেকে ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত পরিমাপ করা হয়েছে। আর সারা দিনে ঢাকায় বৃষ্টিপাতের মোট পরিমাণ ৩৭ মিলিমিটার।
অধিদপ্তরের পূর্বাভাস কর্মকর্তা আরিফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এই ঋতুর বৈশিষ্ট্য হলো, বিকেলের দিকে দেশের মধ্যাঞ্চলে মেঘের সৃষ্টি হয়। কখনো কখনো ভোরেও হতে পারে। এই মেঘের কারণে বজ্রপাত ও বৃষ্টি হয়। গতকাল সিরাজগঞ্জ অঞ্চলে সৃষ্ট মেঘের প্রভাবে ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবারও ঢাকায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1135931/