২ জুলাই ২০২১, শুক্রবার, ২:২৬

চিকিৎসা নিতে এসে ভোগান্তির শিকার

৭ দিনের কঠোর লকডাউনের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পুলিশ-বিজিবি’র পাশাপাশি মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী ও র‌্যাব। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তাদের টহল লক্ষ্য করা গেছে। রয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদিকে যানবাহন সংকটে দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীকে পড়তে হয়েছে ভোগান্তিতে। চিকিৎসার খরচের পাশাপাশি যাতায়াতে খরচ করতে হচ্ছে দ্বিগুণ। অনেকে আবার আর্থিক সমস্যা থাকায় পায়ে হেঁটে রোগী নিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতালে।
শারমীন আক্তার নামে একজন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী নোয়াখালী থেকে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ঢাকায়। লকডাউন শুরু হওয়ার একদিন আগে অতিরিক্ত ভাড়া গুনে আসতে হয় তাদের।
চিকিৎসা শেষে রোগীকে নিয়ে ঢাকায় থাকার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ফিরে যেতে হবে বাড়িতে। কিন্তু হাসপাতাল থেকে রাস্তায় বেরোতেই দুর্ভোগ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও পাননি কোনো যানবাহন। এরপর সাংবাদিক ও পুলিশের সহযোগিতায় একটি এম্বুলেন্সে করে রওনা দেন বাড়ির উদ্দেশ্যে।
ক্যান্সার আক্রান্ত শারমীনের বোন আঁখি আক্তার মানবজমিনকে বলেন, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে বুধবার ঢাকায় এসেছি। তিন হাজার টাকা প্রাইভেটকারে ভাড়া গুনতে হয়। এরপর সিএনজিতে হাসপাতালে পৌঁছায়। বৃহস্পতিবার কেমো থেরাপি দেয়ার পর ঢাকায় থাকার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু রাস্তায় বেরিয়ে দেখি কোনো যানবাহন নেই। প্রাইভেটকার ও এম্বুলেন্সে অতিরিক্ত ভাড়া চায়। অসুস্থ বোনকে নিয়ে কয়েক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকি রাস্তায়। এরপর এক সাংবাদিক ভাই ও পুলিশের সহযোগিতায় এম্বুলেন্স ঠিক করি।
আঁখি আক্তার বোনের চিকিৎসার জন্য আকুতি জানিয়ে বলেন, অনেক আগেই বাবা লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বাড়িতে বয়স্ক মা আছেন। পাঁচ বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে ক্যান্সারে আক্রান্ত শারমিন আক্তার চতুর্থ। সে একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পরে চাকরি ছেড়ে দেন। বাবা মারা যাওয়ার পরে পরিবারের অবস্থা খুবই খারাপ। এই করোনায় অনেক কষ্টে তার চিকিৎসা চালানো হচ্ছে। বাড়ি থেকে তিন হাজার টাকা প্রাইভেটকার ভাড়া করে আসছি। যেটা আমাদের জন্য খুবই কষ্টদায়ক। এই মুহূর্তে বোনের চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। প্রতি কেমো দিতে প্রায় ২৫-৪০ হাজার টাকা লাগে। বাড়িতে একটি জমি ছিল সেটা বন্ধক দিয়ে বোনের চিকিৎসা খরচ চালানো হচ্ছে। এই পর্যন্ত খরচ হয়েছে দেড় লাখ টাকার মতো। তার ফুসফুস থেকে লিভারে ক্যান্সার ছড়িয়ে গেছে। রেগুলার কেমো দিয়ে তাকে সুস্থ করে তুলতে হবে।

https://mzamin.com/article.php?mzamin=281534&cat=3