১ জুলাই ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৩:২০

করোনা শনাক্তে রেকর্ড ভেঙেছে আবারো

শনাক্ত ৮,৮২২ মৃত্যু ১১৫

করোনা সংক্রমণ শনাক্তে আবারো আগের রেকর্ড ভেঙে গেল গতকাল বুধবার। গতকাল সকাল ৮টার আগের ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আট হাজার ৮৮২ জন। এর আগের রেকর্ডটি ছিল গত ২৮ জুন আট হাজার ৩৬৪ জন। বুধবার সারা দেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন ১১৫ জন। ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণে বেড়ে যাওয়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশে কঠোর লকডাউন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। দেশব্যাপী ১৪ দিন কঠোর শাটডাউন করার জন্য করোনাবিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশের পর সরকার লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরামর্শক কমিটি বলেছে, ডেল্টা ভাইরাস জন্মের দেশ ভারতেই বিভিন্ন অঞ্চলে কঠোর লকডাউন করেই ভাইরাসটির নতুন এ ধরনকে (ডেল্টা) অনেকটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই নিয়ে আসা হয়েছে। লকডাউন করায় সেখানে এক দিনে সংক্রমণ ৩৭ হাজারে নামিয়ে আনা হয়েছে। দৈনিক সংক্রমণের দিক থেকে বিচার করলে এটি বলা যায় যে, বর্তমানে ভারতে দৈনিক সংক্রমণের হার বাংলাদেশের চেয়ে কম।

বাংলাদেশে বুধবার নমুনা পরীক্ষাসাপেক্ষে করোনা সংক্রমণ ছিল ২৫.১৩ শতাংশ। দেশে ৩৫ হাজার ১০৫টি নমুনা পরীক্ষা করে সর্বোচ্চসংখ্যক শনাক্ত চিহ্নিত করা হয়েছে। সারা দেশে যে ১১৫ জন মারা গেছেন; এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ছিল ১৭ জন। করোনা আক্রান্তের দিক থেকে ঢাকা মহানগরীতেও এ দিন রেকর্ডসংখ্যক শনাক্ত হয়েছে। তিন হাজার ২৫৯ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে করোনায়। ঢাকা মহানগরীতে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৬ হাজার ১৯৭টি। এখানে করোনা সংক্রমণের হার ২০.১২ শতাংশ। চিকিৎসকরা বলেছেন, ঢাকা মহানগরীতে এক দিনে আরো বেশি করোনা পরীক্ষা করা হলে আরো বেশি শনাক্ত পাওয়া যেত। কারণ প্রায় দেড় কোটি মানুষের এ শহরে আরো বেশি করোনা শনাক্ত থাকতে পারে। উল্লেখ্য, যারা নিজের মধ্যে করোনা সংক্রমিত হলে শরীরে লক্ষণ-উপসর্গ প্রকাশ পেয়েছে কেবল তারাই নমুনা দেয়ার জন্য হাসপাতালে গেছেন। যাদের মধ্যে লক্ষণ-উপসর্গ প্রকাশ পায়নি, তাদের পরীক্ষা করতে যাবেন নাÑ এটিই স্বাভাবিক। আইসিডিডিআরবির সর্বশেষ গবেষণায় বলা হয়েছে, তাদের তিন হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে করা গবেষণায় অনেককে পেয়েছেন করোনার জীবাণু নিয়ে ঘুরছেন কিন্তু তাদের মধ্যে কোনো লক্ষণ-উপসর্গ ছিল না।

বুধবার ঢাকা বিভাগের মোট ১৯ হাজার ৩৪৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয় এবং করোনা শনাক্ত হয়েছে (ঢাকা মহানগরীসহ) চার হাজার ৩৬২ জনকে। ঢাকা মহানগরীর বাইরে ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোয় করোনা সংক্রমিত হয়েছে এক হাজার ১০৩ জন। ঢাকা বিভাগে এ দিন করোনা সংক্রমণের হার ছিল ২২ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

ঢাকা বিভাগের বাইরে সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ আছে খুলনা বিভাগে। গতকাল একই সময়ে খুলনা বিভাগে করোনা শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ২৭৭ জন। ঢাকা বিভাগের তুলনায় সেখানে নমুনা পরীক্ষা অনেক কম। খুলনা বিভাগে ঢাকা বিভাগের চেয়ে প্রায় এক ষষ্ঠাংশ নমুনা কম পরীক্ষা করা হয়েছে। খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জেলায় করোনার উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ করা যাচ্ছে। যেমন ঝিনাইদহে ২৪২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১১৫ জনকে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এখানে সংক্রমণের হার ৫৭.৫২ শতাংশ। চুয়াডাঙ্গা বিভাগে গতকাল একই সময়ে ১২১টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫৩ জন শনাক্ত করা হয়েছে করোনা সংক্রমিত হিসেবে। চুয়াডাঙ্গায় সংক্রমণ হার ৪৩.৮০ শতাংশ। নড়াইল জেলায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৬টি এবং করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪০ জনের। এখানে সংক্রমণের হার ৭১.৪৩ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগেও করোনা সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে বেশি।

এদিকে দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে খালি সিটগুলো পূরণ হয়ে যাচ্ছে রাজধানীতে সরকারি ১৬টি কোভিড ঘোষিত হাসপাতালে তিন হাজার ৫৫৭টি সিট রয়েছে। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত রোগী ভর্তি ছিল এক হাজার ৫৯৩ জন। ৩৮৪টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে রোগী ছিল ২৪৫ জন। রাজধানীতে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ২৮টি হাসপাতাল রয়েছে। এই হাসপাতালগুলোতে সিট রয়েছে এক হাজার ৭৬১টি এবং গতকাল রোগী ভর্তি ছিল ৬২৭ জন। সাধারণত সরকারি হাসপাতালে সিট থাকলে রোগীরা বেসরকারি হাসপাতালে আসতে চায় না উচ্চ খরচের কারণে।

খুলনা বিভাগে ২৭ মৃত্যু, শনাক্ত ১,২৭৭
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনা বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন করে এক হাজার ২৭৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ৯১ শতাংশ। বুধবার বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা: রাশেদা সুলতানা এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে কুষ্টিয়ায় সর্বোচ্চ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া খুলনায় সাতজন, যশোরে তিনজন, মেহেরপুরে তিনজন, ঝিনাইদহে দু’জন, সাতক্ষীরায় দু’জন ও চুয়াডাঙ্গায় একজন মারা গেছেন। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৫৬ হাজার ২৭৫ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক হাজার ৭০ জন। এ সময় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৮ হাজার ৪০১ জন।

চট্টগ্রামে করোনায় ১০ জনের মৃত্যু : চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, জেলায় করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের পর মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। প্রতিদিন বাড়ছে মৃত্যুর হার। বুধবার ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। এর মধ্যে নগরের চারজন ও উপজেলা পর্যায়ে ছয়জন। এখন পর্যন্ত করোনায় চট্টগ্রামে মারা গেছেন মোট ৭০১ জন। এর মধ্যে ৪৭৪ জন নগরের ও ২২৭ জন উপজেলার বাসিন্দা। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা: সেখ ফজলে রাব্বি জানান, চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৩৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন ৩৯৯ জন। শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ২৫ শতাংশ; যা এখন পর্যন্ত শনাক্তের হারে সর্বোচ্চ।

বগুড়ায় শনাক্ত ও মৃত্যু বাড়ছেই : বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ায় মহামারী করোনা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। প্রশাসনের কড়াকড়ির পরেও শহরে লোকসমাগম রয়েছে। এ অবস্থায় জেলায় দৈনিক সংক্রমণের সাথে মৃত্যু বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার তিন করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালে দুই নারীসহ আটজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় এবং করোনা উপসর্গে আরো দু’জন মারা গেছেন। মৃত আটজনের মধ্যে বগুড়া জেলার পাঁচজন এবং বাকি তিনজন অন্য জেলার বাসিন্দা। এ ছাড়া জেলায় একই সময়ে ৩৩৬ নমুনার ফলাফলে নতুন করে ১২৭ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তের হার ৩৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ৬১ জন। বুধবার এসব তথ্য জানিয়েছেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা: মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন। এই নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৮৩৯ জন, সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৬১২ জন, মারা গেছেন ৩৯৪ জন এবং বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন ৮৩৩ জন।

চুয়াডাঙ্গায় ২৪ ঘণ্টায় ৭ জনের মৃত্যু : চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা জানান, জেলাজুড়ে বেড়েই চলেছে মহামারী করোনাভাইরাসের প্রকোপ। প্রতিদিন এই ভাইরাসে আক্রান্ত ও উপসর্গে মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েই চলেছে। জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে আরো তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা শতকের ঘর ছাড়িয়েছে দাঁড়িয়েছে ১০৫ জনে। এর মধ্যে জেলায় অবস্থানকালে মৃত্যু হয়েছে ৯২ জনের ও জেলায় আক্রান্ত হয়ে জেলার বাইরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে আরো চারজনের। একই সময়ে নতুন করে আরো ৫৩ জনের নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্তের শংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৩১৯ জনে। এ পর্যন্ত জেলায় মোট সুস্থ হয়েছে দুই হাজার ১৭৩ জন। বুধবার জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করে।

রামেক হাসপাতালে আরো ১২ জনের মৃত্যু : রাজশাহী ব্যুরো জানায়, করোনাভাইরাস ও করোনা উপসর্গ নিয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ৩৫৫ জন। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মৃত ১২ জনের মধ্যে পাঁচজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। আর অপর সাতজন ভর্তি ছিলেন করোনার উপসর্গ নিয়ে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রাজশাহী জেলার আটজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’জন ও নাটোরের একজন ও নওগাঁর একজন রোগী রয়েছেন।

এ দিকে রাজশাহীর দু’টি পিসিআর ল্যাবে গত মঙ্গলবার মোট ৬৪৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ২৪৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার রাজশাহী জেলায় বেড়ে আবারো ৩২ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা শনাক্তের হার ৫০ শতাংশে উঠেছে। এ ছাড়া নওগাঁ জেলায়ও করোনা শনাক্তের হার বেড়ে ৪৭ দশমিক ৭৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

টাঙ্গাইলে এক দিনে আক্রান্ত ৩২০ জন : টাঙ্গাইল সংবাদদাতা জানান, জেলায় ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে করোনা পরিস্থিতি। সেখানে নতুন করে আরো ৩২০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩২০ জনের দেহে শনাক্ত হয় এ ভাইরাস। এ নিয়ে বুধবার সকাল পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত হলেন সাত হাজার ৭০৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ৬৬২ জন। এ পর্যন্ত জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১০৮ জনের। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৫৭১ জন। টাঙ্গাইল সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
ঝিনাইদহে ২ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ১১৫ : ঝিনাইদহ সংবাদদাতা জানান, জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে আরো ১১৫ জন। এ সময় করোনা উপসর্গ নিয়ে দু’জন মারা গেছেন। জেলার সিভিল সার্জন ডা: সেলিনা বেগম এ তথ্য জানান।

সাতক্ষীরায় ফের বেড়েছে সংক্রমণের হার, ১০ জনের মৃত্যু : সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরায় ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে চার নারীসহ আরো ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চার নারীসহ সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারি হাসপাতালে উপসর্গে দু’জন এবং করোনা আক্রান্ত হয়ে খুলনা নেয়ার পর একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ২৯ জুন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৭০ জন। আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন অন্তত ৩৪০ জন।

এ দিকে পরপর দুই দিন কমার পর সাতক্ষীরায় ফের বেড়েছে সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে আরো ৫০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময় সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৬২ জনের। শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ০৮ শতাংশ।

মঙ্গলবার পর্যন্ত সাতক্ষীরায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তিন হাজার ৩৭১ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৪৮৫ জন। জেলায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭০ জন। আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন অন্তত ৩৪০ জন। বর্তমানে জেলায় করোনা রোগী রয়েছে ৮১৬ জন।

রংপুর বিভাগে আরো ৯ জনের মৃত্যু : রংপুর অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগে করোনায় আরো ৯ জন মারা গেছে। এ নিয়ে এই বিভাগে করোনায় মারা গেল ৫১৯ জন। জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ৯ জন। এদের মধ্যে রংপুর ও দিনাজপুরের তিনজন করে ঠাকুরগাঁওয়ে দুই ও গাইবান্ধায় একজন।

রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আবু মো: জাকিরুল ইসলাম জানান, বুধবার সকাল পর্যন্ত বিভাগের আট জেলায় এক হাজার ৫১০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয়েছেন ৪৭৩ জন। শনাক্তের এই হার ৩১ দশমিক ৩২ ভাগ। রংপুর বিভাগের আট জেলায় করোনার শুরু থেকে বুধবার পর্যন্ত এক লাখ ৫৪ হাজার ৯৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৫ হাজার ৯৮০ জন সনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৯ হাজার ৮৬৬ জন।

পাবনায় সর্বোচ্চ ১৭৭ জন আক্রান্ত : পাবনা সংবাদদাতা জানান, পাবনায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, গত মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৭৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন; যা এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা। জেলা সিভিল সার্জন ডা: মনিসর চৌধুরী জানান, মঙ্গলবার মোট নমুনা পাঠানো হয় এক হাজার ৩০২ জনের। বুধবার সকালে ফলাফল পাওয়া গেছে আগের কয়েকজনসহ এক হাজার ৩৭৫ জনের। এর মধ্যে পজিটিভ ১৭৭ জন। শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। জেলায় এ পর্যন্ত পজিটিভ রোগীর সংখ্যা চার হাজার ৫০১ জন।

মণিরামপুরে ইউএনওসহ ১৬ জন আক্রান্ত, মৃত্যু ১
মণিরামপুর (যশোর) সংবাদদাতা জানান, যশোরের মণিরামপুরে বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসানসহ নতুন আরো ১৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময়ে নাছিমা খাতুন (৪৫) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শুভ্রা রানী এ তথ্য জানান। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান সরকারি বাসভবনেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সুন্দরগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু : সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেনের (৮৫) মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ১৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূূত্রে জানা গেছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে উপজেলায় ১৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার চণ্ডিপুর ইউনিয়নের উত্তর সীচা কামারপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যু হয়। বুধবার বিকেলে নামাজে জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/591831