৩০ জুন ২০২১, বুধবার, ১:৩২

খুলনায় হাহাকার

করোনার হটস্পট এখন দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা বিভাগ। একদিনে এই বিভাগে শনাক্তের হার ৪১ শতাংশের উপরে। বিভাগটির ঝিনাইদহ জেলায় শনাক্তের হার প্রায় ৬৫ শতাংশ। এই বিভাগে করোনার তৃতীয় ঢেউ এখন ঘরে ঘরে। গ্রামগঞ্জের সব জায়গায় সর্দি-কাশির ও জ্বরের রোগী দেখা মিলছে। তাদের মধ্যে জ্বর নিয়ে ভীতি থাকলেও করোনা পরীক্ষায় তেমন আগ্রহ নেই। খুলনায় অক্সিজেনের চাহিদা প্রায় চারগুণ বেড়েছে। করোনা ইউনিটে সিট খালি না থাকায় সিটের জন্য হাহাকার করছেন রোগীর স্বজনরা।

খুলনায় তিনটি হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেড না থাকার কারণে আক্রান্ত রোগীরা ফিরে যাচ্ছেন প্রতিদিন। হাসপাতালগুলোর সামনে আক্রান্ত ব্যক্তির স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারী হওয়ার চিত্র এখন নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে উঠছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রামের রোগী হাসপাতালে দেরিতে আসছেন। এই রোগের তথ্য গোপন করে তারা বাড়িতে থাকছেন। অবস্থা খুবই খারাপ হলে তখনই হাসপাতালে ছুটছেন। এতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে এই বিভাগে মৃত্যুর সংখ্যাও ৩০ থেকে ৩৬ জনের মধ্যে ওঠা-নামা করছে। বিভাগে এই পর্যন্ত মারা গেছেন ১ হাজার ২৩৫ জন। যা দেশের মোট মৃত্যুর ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ। শনাক্ত হয়েছেন প্রায় ৫৫ হাজার।

খুলনা বিভাগে মৃত্যু কেন বেশি জানতে চাইলে খুলনা জেলার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ মানবজমিনকে বলেন, করোনার রোগীরা সর্দি-কাশিকে পাত্তা দিচ্ছে না। গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে পড়ছে করোনার রোগী। তথ্য গোপন করে বাড়িতে থাকছেন। স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। আক্রান্তের শুরুতে হাসপাতালে আসতে চাচ্ছেন না। পরিস্থিতি খুব খারাপ হলেই কেবল হাসপাতালে আসছেন। তখন তাদের বাঁচানো খুব কঠিন হয়ে পড়ছে। তিনি আরও জানান, বেশির ভাগই ৫০ বছরের উপরের লোক মারা যাচ্ছেন। যারা আগে থেকেই কিছু জটিল রোগে ভুগছিলেন। এই অবস্থায় করোনার উপসর্গযুক্ত রোগীকে হাসপাতালে আসার অনুরোধ করছেন জেলার সিভিল সার্জন। তিনি বলেন, যে বাড়িতে এই ধরনের রোগী থাকবে সেখানে লাল পতাকা লাগিয়ে দেয়া হবে। এ ছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এক্ষেত্রে আরও সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান জেলার সিভিল সার্জন।

খুলনা বিভাগের করোনার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. ফরিদ হোসেন মিয়ার সঙ্গে। তিনি গতকাল মানবজমিনকে জানান, ওই বিভাগে দিন দিন রোগী বাড়ছে। হাসপাতালগুলোতেও রোগী বাড়ায় সিট সংকট তৈরি হয়েছে। সক্ষমতার মধ্যেই সিট বাড়ানোর জন্য আমরা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনে নন-কোভিড রোগী ভর্তি বন্ধ রাখা হবে। অক্সিজেন সরবরাহও বাড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

খুলনায় অক্সিজেনের চাহিদা প্রায় চারগুণ বেড়েছে, করোনা ইউনিটে সিট খালি নেই: তিনটি হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেড না থাকার কারণে আক্রান্ত রোগীরা ফিরে যাচ্ছে। প্রতিদিন এম্বুলেন্সে আক্রান্ত রোগীর স্বজনরা হাসপাতালগুলোর গেটে আসে আর বেড নেই শুনে চোখের পানি ফেলে চলে যাচ্ছেন। হাসপাতালগুলোর সামনে মৃত্যু ও আক্রান্ত ব্যক্তির স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠছে।

যশোর অভয়নগর এলাকার বাসিন্দা ওয়াসিম ইসলাম (৩৫)। তিনি কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। গত ২৫শে জুন তার করোনার পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা দেন। সোমবার তার করোনা পজেটিভ রেজাল্ট আসে। তাকে নিয়ে করোনার চিকিৎসার জন্য খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। নগরীর জেনারেল হাসপাতালে মঙ্গলবার দুপুর দেড় টায় পৌঁছান। কিন্তু বেড খালি না থাকায় চিকিৎসকরা তাকে ফিরিয়ে দেন। এরকম তার মতো বিভিন্ন উপজেলা থেকে করোনা রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা শয্যা খালি না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

ওয়াসিম ইসলামের শ্বশুর মনিরুল ইসলাম জানান, অভয়নগরে মেয়ের জামাইকে কোনো হাসপাতালে ভর্তি করাতে না পেরে খুলনায় ছুটে আসি। তার অক্সিজেন লেভেল ৮৩ থেকে ৮৫ এর মধ্যে উঠানামা করছে। দ্রুত তার চিকিৎসার প্রয়োজন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিটে শয্যা সংখ্যার চেয়ে রোগী ভর্তি বেশি। তাই এখানে চলে আসি। এখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, করোনা ইউনিটে সিট খালি নেই। আমি ফ্লোরে ব্যবস্থা করার কথাও বলি। তাও তারা দেবে না। এখন জামাইকে নিয়ে অন্য হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে। ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. চন্দ্রা রানী নাগ বলেন, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত করোনার ৭০ শয্যার মধ্যে কোনো বেড খালি নেই। যার কারণে আমরা রোগী ভর্তি নিতে পারছি না। যখনই খালি থাকে তখনই করোনা রোগীদের ভর্তি নিচ্ছি।

খুলনা জেলার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, ৭০ শয্যার করোনা ইউনিটের জন্য চিকিৎসক রয়েছে। কিন্তু শয্যার বাইরে যখন করোনা রোগীদের ফ্লোরে চিকিৎসা দেয়া হবে তখনই চিকিৎসক সংকট দেখা দেবে। তখন অল্প চিকিৎসক নিয়ে হিমশিম খেতে হবে। আমার ১৫ জন চিকিৎসক খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনার রোগীদের চিকিৎসার জন্য দিয়েছি। ওই সব চিকিৎসক যদি ফিরে পাই তাহলে ফ্লোরে রেখে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব।

এদিকে খুলনায় হঠাৎ করে বেড়ে চলেছে সর্দি-কাশি-জ্বর। এ অঞ্চলের প্রায়ই ঘরে এখন এ ধরনের রোগী। তাদের মধ্যে জ্বর নিয়ে ভীতি থাকলেও করোনা পরীক্ষায় তেমন আগ্রহ নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়রা. পাইকগাছা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, রূপসা, তেরখাদা, দিঘলিয়া, ডুমুরিয়া, ফুলতলা, খানজাহান আলীর গিলাতলা, শিরোমনি, মশিয়ালী, মাত্তমডাঙ্গা, যোগিপোল, বাদামতলা, তেলিগাতিসহ মহানগরীর থানা এলাকার বেশির ভাগ বাড়িতেই কেউ না কেউ জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত। তবে করোনা শনাক্তের ভয়ে অনেকেই চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন না। বাড়িতে বসেই গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা জেনারেল হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যার ফলে ওষুধের ফার্মেসিতে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধসহ অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যাপক চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। সচেতনতা না থাকায় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অসুস্থ অবস্থায় হাটবাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনেকেই।

করোনাকালীন সময়ে শিরোমনি বাজারে নিয়মিত রোগী দেখছেন ডা. আলাউদ্দিন শিকদার। তিনি বলেন, জ্বর-সর্দি, কাশি এ ধরনের রোগী এখন বেশি আসছে এবং অনেকেই করোনার উপসর্গ নিয়ে আসছে। তাদের বারবার করোনা নমুনা পরীক্ষা করতে বলা হলেও তারা করোনা পরীক্ষায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। করোনা মহামারির এই সময়ে যে কারণেই সর্দি-কাশি-জ্বর দেখা দিক না কেন অবহেলা না করে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে শিল্প ও মেডিকেল অক্সিজেন উৎপাদনের জন্য ২০০২ সালে খুলনায় স্থাপিত হয়েছিল খুলনা অক্সিজেন লি. নামের একটি প্রতিষ্ঠান। বিদ্যুৎ বিভাগের অসতর্কতার কারণে মাত্র ৪ বছরের মাথায় অর্থাৎ ২০০৬ সালে ভয়াবহ বিষ্ফোরণ হয়ে কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর খুলনায় আবারও অক্সিজেন কোম্পানি করার উদ্যোগ নিয়েছিল কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু উৎপাদন অনুযায়ী এ অঞ্চলে চাহিদা না থাকায় সেটি আর হয়নি। এজন্য ঢাকা থেকে সিলিন্ডার অক্সিজেন রিফিল করে খুলনায় এনে সরবরাহ করা হয়। খুলনার এই অক্সিজেন কোম্পানিটির এমন দুরবস্থার কারণে এ অঞ্চলে অক্সিজেন সরবরাহের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকে স্পেক্ট্রা নামের আর একটি প্রতিষ্ঠান। লিন্ডে নামের অপর একটি অক্সিজেন কোম্পানির কার্যক্রম এ অঞ্চলে থাকলেও স্পেক্ট্রাই একমাত্র খুলনায় সিলিন্ডার রিফিলের ব্যবস্থা করতে পারছে। আর লিন্ডে কোম্পানিটির রিফিল কেন্দ্র রয়েছে যশোরে। সব মিলিয়ে করোনা মহামারিকালে খুলনায় অক্সিজেনের চাহিদা বাড়লেও এখানে উৎপাদন না হওয়ায় সিলিন্ডার রিফিল করতে গিয়ে সময় অপচয় হচ্ছে। আবার করোনার শুরুর দিকে যে চাহিদা ছিল পক্ষকালের ব্যবধানে সে চাহিদার প্রায় চারগুণ বেড়েছে বলে অক্সিজেন কোম্পানিগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়। বিশেষ করে হাসপাতালগুলোতে বেড না থাকায় বাসা-বাড়িতে সিলিন্ডারের চাহিদা বেড়েছে উল্লেখ করে কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়, বাজারে পর্যাপ্ত সিলিন্ডার থাকলে অক্সিজেনের তেমন কোন সংকট থাকবে না বলে আশা করা হচ্ছে।

খুলনা অক্সিজেন কোম্পানির ম্যানেজার মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ঢাকা থেকে লিকুইড অক্সিজেন আনা হয় সড়কপথে। এরপর রূপসা নদীর পার্শ্ববর্তী খুলনা অক্সিজেন লি. এ বসে সেগুলো সিলিন্ডারে রিফিল করে সরবরাহ করা হয়। খুলনায় মেডিকেল অক্সিজেন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে আগেই লিন্ডে অক্সিজেন কোম্পানি প্ল্যান্ট বসিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে হাসপাতালে পাইপলাইনের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করছে। আবার স্পেক্ট্রা কোম্পানিও সমপ্রতি সেখানে আরও একটি প্ল্যান্ট বসিয়েছে। ওই কোম্পানি খুলনা জেনারেল হাসপাতালেও প্ল্যান্ট বসিয়ে অক্সিজেন সরবরাহ করায় সিলিন্ডার সেখানে সিলিন্ডার অক্সিজেনের তেমন চাহিদা নেই। তবে চাহিদা রয়েছে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে। ওই কোম্পানিটি প্রাইভেট হাসপাতাল ও ব্যক্তিগতভাবে বাসা-বাড়ির জন্য সিলিন্ডার অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে। এজন্য সবচেয়ে বেশি চলে ছোট সাইজের অর্থাৎ ১০ লিটারের সিলিন্ডার। প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতেও ১০, ৩০ এবং ৪০ লিটারের সিলিন্ডার চলে বলেও ম্যানেজার জানান।
ঢাকা থেকে খুলনায় লিকুইড গ্যাস আনতে গিয়ে অনেক সময় ফেরিতে দেরি হয় জানিয়ে তিনি বলেন, লকডাউনের কারণে হয়তো কিছুটা যানবাহন কম থাকে কিন্তু অন্যান্য সময় যানজটে পড়ে গাড়ি আটকে যাওয়ায় সঠিক সময়ে রিফিল করতে সমস্যায় পড়তে হয়। এজন্য তিনি ফেরিতে অক্সিজেনের গাড়িকে প্রাধান্য দেয়ার ব্যাপারেও সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

স্পেক্ট্রা অক্সিজেন কোম্পানির খুলনা বিক্রয় কেন্দ্রের ইনচার্জ সজিব রায়হান বলেন, হাসপাতালে বেড সংকটের বিষয়টি প্রচার হওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি আতংক তৈরি হয়েছে। এজন্য খুব বেশি সমস্যা না হলে তারা হাসপাতালে রোগী না নিয়ে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করছে। এজন্য সামপ্রতিককালে ছোট সিলিন্ডারের চাহিদা বেড়েছে প্রায় চারগুণ। ওই কোম্পানির ১ দশমকি ৪ সাইজের সিলিন্ডার আগে যেখানে প্রতিদিন ৩০টি করে চলতো এখন সেখানে চলে একশ’রও বেশি। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগে থেকেই একটি সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট থাকায় সিলিন্ডার অক্সিজেনে চাহিদা কিছুটা কম ছিল। কিন্তু রোগী বেড়ে যাওয়ায় সেকানেও এখন চাহিদা বেড়েছে। তবে সিলিন্ডার অক্সিজেনের চাহিদা নেই খুলনা জেনারেল হাসপাতালে। ওই হাসপাতালে গত ২০শে জুন থেকে ৭০ বেডের করোনা হাসপাতালের যাত্রা হওয়ায় সমপ্রতি স্থাপিত ৬শ’ কিলো’র সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্টটি একবার রিফিল করলে প্রায় ১০ দিন চলে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের জন্য স্পেক্ট্রার একটি প্লান্ট বসানো হলেও এখনও সেখানে কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। এখনও চলছে আগের লিন্ডে কোম্পানির অক্সিজেন দিয়ে। তবে সেখানেও স্পেক্ট্রার কিছু সিলিন্ডার প্রতিদিন দেয়া হচ্ছে।

লিন্ডে অক্সিজেন কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার (এইচআর) সাইকা মাজেদ বলেন, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের যে ভিআই প্ল্যান্টটি রয়েছে সেটি আগে সপ্তাহে বা ১০দিনের মাথায় একবার রিফিল করলে হতো। কিন্তু বর্তমানে সেটি কখনও একদিন পর একদিন আবার কখনও প্রতিদিনই রিফিল করতে হয়। আর ওই কোম্পানির সিলিন্ডারগুলো ঢাকা থেকে রিফিল করে খুলনায় পাঠানো হয়। তবে খুব শিগগিরই তারা খুলনায় রিফিলের ব্যবস্থা চালু করবেন বলেও জানান। এজন্য খুলনা শিপইয়ার্ডের পাশে একটি স্থানও নির্বাচন করা হয়েছে। অবশ্য স্পেক্ট্রার প্ল্যান্টটি চালু হলে তাদের চাহিদা কোম্পানির ওপর চাপ কিছুটা কমবে বলেও তিনি আশা করছেন।

অবশ্য একটি প্ল্যান্ট দিয়ে পাইপ লাইনে করোনা ডেডিকেটেডসহ পুরো হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ করতে গিয়ে শেষের দিকে এসে অক্সিজেনের প্রেসার কিছুটা কমে যায় উল্লেখ করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ ডা. দিলিপ কুমার কুন্ডু বলেন, অক্সিজেনের প্রেসার কমে গেলে মেশিনে টেনে পারে না। এজন্য শিগগিরই স্পেক্ট্রা কোম্পানির প্ল্যান্টটির কার্যক্রম শুরুর জন্য বলা হচ্ছে। এজন্য ইতিমধ্যেই ট্যাংকি বসিয়ে ভ্যাকুম রুমের কাজ চলছে। তবে এখনও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্পেক্ট্রা কোম্পানীর চুক্তি যেমন হয়নি তেমনি বিষ্ফোরক অধিদপ্তর থেকে লাইসেন্সও গ্রহণ করা হয়নি। এ দু’টি কাজ সম্পন্ন হলে এবং পাইপ লাইন যুক্ত করেই দু’টি প্ল্যান্টের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করা গেলে সার্বক্ষণিক প্রেসার ঠিক থাকবে। এতে রোগীদের সেবার মানও আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

https://mzamin.com/article.php?mzamin=281188&cat=2