২৮ জুন ২০২১, সোমবার, ২:০৪

করোনায় রেকর্ড ১১৯ মৃত্যু

আক্রান্ত ৫,২৮৮ সংক্রমণ হার ২২ শতাংশ

করোনায় মৃত্যুর নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে মহামারী কোভিড-১৯ সংক্রমণে। এর আগে চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এ ছাড়া গত ২৫ জুন সারা দেশে মারা গিয়েছিল ১০৮ জন। অন্য দিকে সারা দেশে একই সময়ে মোট ২৪ হাজার ৪০০টি নমুনা পরীক্ষা করে করোনা আক্রান্ত পাওয়া গেছে পাঁচ হাজার ২৮৮ জন। এ সময়ে সংক্রমণের হার ছিল ২১.৫৯ শতাংশ।
দেশে দিন দিন মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের মধ্যে নতুন আতঙ্কের জন্ম নিচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় খুব বেশি আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে না। এখনো উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ মাস্ক ছাড়াই রাস্তায় চলাফেরা করছে। এখনো মানুষের জটলা হচ্ছে নানা জায়গায়, কাঁচাবাজারে অথবা দোকানে। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কমিউনিটি সংক্রমণে দেশে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। একইভাবে বাড়ছে মৃত্যু। তবে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার আজ থেকে দেশব্যাপী অ্যাম্বুলেন্স ও পণ্য পরিবহনের ট্রাক ছাড়া সব ধরনের যান চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। নিষেধের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে রিকশাকে।
করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা: মোজাহেরুল হক নয়া দিগন্তকে বলেন, সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার অন্যতম কারণ সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা ও কৌশলগত ত্রুটি। ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন প্রয়োজন, কিন্তু এ ধরনের পরিকল্পনা সরকারের আছে কি না, জনগণ তা জানে না। করোনা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে ত্রুটি আছে বলেও মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, সরকার নিজের সিদ্ধান্তেই স্থির থাকতে পারছে না। একবার এক ধরনের ঘোষণা দিয়ে আবার পিছিয়ে যাচ্ছে। অধ্যাপক মোজাহেরুল হক বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অবশ্যই জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। জনসম্পৃক্ততার কারণে বর্তমানে সরকারের নেয়া সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনায় জনগণ আস্থা রাখতে পারছে না। তিনি জানান, করোনা নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সরকারের কৌশলটা অবহিত করতে হবে। তা হলেই তারা সক্রিয়ভাবে সরকারকে সহযোগিতা করবে এবং নিজেরা সরকারের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তায়নে অপরকে উদ্বুদ্ধ করবে।
মৃত্যুর সর্বোচ্চ রেকর্ড : গত এক দিনে সারা দেশে যে ১১৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তাদের ১২ জনই ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আবার সারা দেশে যে পাঁচ হাজার ২৮৮ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছে এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীর রয়েছেন এক হাজার ৮১ জন। সারা দেশে ২৪ হাজার ৪০০টি নমুনা পরীক্ষা করা হলেও ঢাকা মহানগরীতে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ছিল ৯ হাজার আটটি। এখানে করোনা সংক্রমণের হার ১২ শতাংশ। জনসংখ্যা অনুপাতে এখানে নমুনা পরীক্ষা একেবারেই কম। উল্লেখ্য, শুধু ঢাকা নয় দেশের সর্বত্র নমুনা পরীক্ষা হয়ে থাকে। কেউ ইচ্ছা করে পরীক্ষা করতে আসলেই হয়ে থাকে। সরকার থেকে পরিকল্পনামাফিক নমুনা পরীক্ষা হয় না। সরকার দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে নমুনা পরীক্ষা করলে করোনায় আসল চিত্রটি যেমন ফুটে উঠত তেমনি সে অনুসারে করোনার চিকিৎসাও হয়ে যেতে পারত।
ঢাকা বিভাগে ঢাকা মহানগরীর বাইরে কেবল ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, গাজীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী, কিশোরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে করোনা একটু বেশি। ঢাকা বিভাগে গতকাল মোট করোনা আক্রান্ত ছিল এক হাজার ৬৪৮ জন এবং মৃত্যু ছিল ২৪টি। এ ছাড়া খুলনা ও রাজশাহীতে করোনা সংক্রমণ কিছুটা বেশি। গতকাল রাজশাহীর আট জেলায় করোনা আক্রান্ত ছিল ৯৬২ জন, খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় আক্রান্ত ছিল এক হাজার ২০২ জন। খুলনা বিভাগে গতকাল মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের এবং রাজশাহী বিভাগের মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। রংপুর বিভাগের আট জেলায় গতকাল মোট করোনা আক্রান্ত ছিল ৪৪৭ জন এবং ৯ জন মারা গেছে। সিলেট বিভাগে মারা গেছে পাঁচজন, বরিশাল বিভাগে মৃত্যুর সংখ্যা দু’জন। সিলেট বিভাগের মধ্যে কেবল সিলেট জেলায় ৭৫ জন গতকাল আক্রান্ত হয়েছে এবং এ বিভাগের চার জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯৯ জন। বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় গতকাল মোট করোনা আক্রান্ত ছিল ১৫০ জন। ময়মনসংিহ বিভাগের চার জেলায় গতকাল মোট করোনা আক্রান্ত ছিল ২৭১ জন এবং মারা গেছে তিনজন।
রামেকে আরো ১০ মৃত্যু
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, করোনাভাইরাসে ও উপসর্গে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল রোববার সকাল ৮টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় রামেক হাসপাতালে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এক দিনের ব্যবধানে মৃত্যু কমেছে। এ ছাড়া কমেছে শনাক্তের হারও। শনিবার রাজশাহীর দু’টি পিসিআর ল্যাবে ৫৬১টি নমুনা পরীক্ষায় ১৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এতে রাজশাহীতে শনাক্তের হার ৩৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ থেকে কমে ২৯ দশমিক ০৮ শতাংশ হয়েছে। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় করোনা শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৭২ শতাংশ থেকে কমে ১১ দশমিক ৯০ শতাংশে এসেছে। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মৃত ১০ জনের মধ্যে আটজনই করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া একজন রোগীর রিপোর্ট করোনা নেগেটিভ হলেও তার মৃত্যু হয়েছে। আর একজন রোগী করোনা পজিটিভ ছিলেন। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ২৭ দিনে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ৩০৪ জন।
দেড় মাসের শিশু আক্রান্ত : এদিকে রাজশাহীতে দেড় মাস বয়সী এক শিশু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। শিশুটির নাম আফরিন রহমান। তার বাবা আরিফুর রহমানও করোনা আক্রান্ত। ফলে করোনায় আক্রান্ত দেড় মাসের শিশুকে নিয়ে কখনো সরকারি হাসপাতাল, আবার কখনো বেসরকারি ক্লিনিকে ঘুরতে থাকেন মা মাহবুবা। অবশেষে শনিবার দুপুরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে শিশুটিকে ভর্তি করা হয়। শিশুটির মা মাহবুবা জানান, আমরা প্রথমে ধারণা করেছিলাম বাচ্চার ঠাণ্ডা-জ্বর হয়েছে। পরে যখন ওর শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে, তার ছটফট করা দেখে সন্দেহ হয়। সেজন্য গত ২০ জুন রাজশাহী রেলগেট এলাকায় র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করানো হয়। মাহবুবা জানান, তার বাড়ি নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ছোট বনগ্রাম বড় রাস্তার মোড় এলাকায়। তার স্বামী বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চুয়াডাঙ্গায় আরো ৯ মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা জানান, গতকাল সকালে চুয়াডাঙ্গার ২৫৭টি নমুনার ফলাফল প্রকাশ করেছে জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ। এর মধ্যে ১০৬ জনের নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৮৩ জনে। জেলায় প্রতিদিন এই ভাইরাসে আক্রান্ত ও উপসর্গে মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েই চলেছে। গতকাল জেলায় হোম আইসোলেশনে একজন ও জেলার বাইরে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অন্য একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট মৃত্যু হয়েছে ৯৪ জনের। এছাড়াও গতকাল সদর হাসপাতালের ইয়োলো জোনে করোনা উপসর্গে আরো সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা: এ এস এম ফাতেহ্ আকরাম জানান, শনিবার সদর হাসপাতালের ইয়োলো জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজন পুরুষ ও চারজন নারীর মৃত্যু হয়েছে।
বরিশালে শনাক্ত ১৫০, মৃত্যু ৮
বরিশাল ব্যুরো জানায়, বরিশাল বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৫০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে বিভাগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ১৮ জন। এছাড়া একই সময়ে বরিশাল জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গোটা বরিশাল বিভাগে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২৯৮ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ও শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের দফতর। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় শুধুমাত্র বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে আরো সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।
বগুড়ায় শনাক্ত ৩১ শতাংশের বেশি
বগুড়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে তিন নারীসহ চারজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এদের মধ্যে দু’জন বগুড়া জেলা এবং বাকি দু’জন অন্য জেলার বাসিন্দা। মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেনÑ বগুড়ার সদরের রহিমা বেওয়া (৭৭), আদমদীঘি উপজেলার আলতাফুন্নেছা (৬২), জয়পুরহাট জেলার কামরুন নাহার (৪০) এবং সিরাজগঞ্জ জেলার মাজেদ আলী (৭২)। এছাড়া জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২২ নমুনার ফলাফলে নতুন করে ১০১ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তের হার ৩১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ৫১ জন। এ নিয়ে জেলায় শনিবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ১৩ হাজার ৪৩৩ জন। এছাড়া মোট মৃত্যু ৩৭৫জন।
নোয়াখালীতে ৩ জনের মৃত্যু
নোয়াখালী অফিস জানায়, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩৮ জনে। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ। জেলায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দশ হাজার ৮১৬ জন। মোট আক্রান্তের হার ১১ দশমিক ১৬ শতাংশ। রোববার সকালে জেলা সিভিল সার্জন ডা: মো: মাসুম ইফতেখার বিষয়টি নিশ্চিত করে। উল্লেখ্য, নোয়াখালীতে করোনার প্রকোপ না কমায় নোয়াখালী পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়নে চলমান লকডাউন আরো এক সপ্তাহ বাড়িয়েছে জেলা প্রশাসন।
পাবনায় আক্রান্ত ৪ হাজার ছাড়িয়েছে
পাবনা সংবাদদাতা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৩৫ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে চার হাজার ১৪০ এ দাঁড়িয়েছে। মোট মারা গেছেন ২৩ জন। সিভিল সার্জন দফতরের হিসাব অনুযায়ী সুস্থতার হার ১০.৩৭ শতাংশ হলেও দ্রুতগতিতে আক্রান্তের হার বেড়েই চলেছে।
টাঙ্গাইলে নতুন আক্রান্ত ১০১
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই মানুষ মারা যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর তালিকায় যোগ হয়েছে আরো একটি নাম। তার বাড়ি মির্জাপুর উপজেলায়। এ নিয়ে রোববার সকাল পর্যন্ত জেলায় মৃত্যু হলো ১০৮ জনের। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০১ জনের দেহে শনাক্ত হয়েছে এ ভাইরাস। জেলায় শনাক্তের হার শতকরা ৩৪ দশমিক ৪৭ ভাগ। জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সাত হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
চট্টগ্রামে ৭ জনের মৃত্যু
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে করোনায় একদিনেই মারা গেছে সাতজন। মারা যাওয়া সাতজনের মধ্যে ছয়জন উপজেলার এবং একজন নগরের বাসিন্দা। আক্রান্ত হয়েছে ৩০০ জন। গতকাল রোববার চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি সাতটি ও কক্সবাজারে একটি ল্যাবে এক হাজার ৩৬০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। বিআইটিআইডিতে নমুনা পরীক্ষায় ১০৪ জন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ৬৬ জন, জেনারেল হাসপাতাল ল্যাবে ৬৬ জন, বেসরকারি শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ১৪ জন, মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৮ জন, আরটিআরএলে ১৩ জন এবং এপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে ২৮ জন করোনা পজিটিভ হন।
সাতক্ষীরায় ৮ মৃত্যু
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরায় প্রতিদিনই করোনা উপসর্গে ৮-৯ জন করে মানুষ মারা যাচ্ছে। এর মধ্যে নারীদের সংখ্যা বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঁচ নারীসহ আরো আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত ছয় দিনের ব্যবধানে সাতক্ষীরায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ছয়জনসহ মোট ৫১ জনের মৃত্যু হলো। এদিকে সাতক্ষীরায় ফের বেড়েছে সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় সাতক্ষীরায় নতুন করে আরো ৫৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩২ দশমিক ৭২ শতাংশ। এর আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ২৭ দশমিক ০৯ শতাংশ।
রংপুর বিভাগে শনাক্ত ৪৪৭
রংপুর অফিস জানায়, রংপুর বিভাগে করোনায় আক্রান্ত আরো আটজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ৪৪৭ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আবু মো: জাকিরুল ইসলাম জানান, মৃত আটজনের মধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ে চার, দিনাজপুরের দুই এবং রংপুুুর ও লালমনিহাটে একজন করে। রোববার সকাল পর্যন্ত রংপুর বিভাগে করোনায় মারা গেছেন ৪৯৫ জন।
গাইবান্ধায় শনাক্ত আরো ৪২
গাইবান্ধা সংবাদদাতা জানান, মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানেই গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে ২৯ জন বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রোববার করোনাভাইরাসে নতুন করে ৪২ জন শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সদরে ২০, গোবিন্দগঞ্জে সাত, ফুলছড়িতে দুই, সুন্দরগঞ্জে দুই, পলাশবাড়ীতে চার ও সাদুল্যাপুর উপজেলায় সাতজন। এর আগের দিনই করোনা শনাক্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৩ জন।
ঝিনাইদহে আক্রান্ত ৯০
ঝিনাইদহ সংবাদদাতা জানান, জেলায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরো ৯০ জন। সিভিল সার্জন ডা: সেলিনা বেগম জানান, সকালে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ ল্যাব পরীক্ষা করা ২৩৬টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে ৯০ জনের ফলাফল পজেটিভ এসেছে।
ঝালকাঠি শনাক্ত ৩৩
ঝালকাঠি সংবাদদাতা জানান, ঝালকাঠিতে গত ২৪ ঘণ্টায় একজনে মৃত্যু ও ৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। মৃত ব্যক্তি ঝালকাঠি শহরের ভিআইপি এলাকার নুরুল ইসলাম (৭০) অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন।
নীলফামারীতে শনাক্ত নীলফামারীতে আক্রান্ত বাড়ছে
নীলফামারী সংবাদদাতা জানান, জেলায় আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে সংক্রমণ। শহর ছেড়ে গ্রামে গ্রামে করোনার উপসর্গ ছড়িয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৯৬ জনের নমুনা টেস্টে ১৮ জন পজেটিভ হয়েছে। শনাক্তের হার ১৮.৭৫ শতাংশ।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/591111/