২৭ জুন ২০২১, রবিবার, ১:৪১

নানা পর্যবেক্ষণ : আস্থাটা কোথায় রাখি

দেখা অদেখা

বছরে পর বছর এমনকি জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছার পরও সমাজের এক বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে ভাগ্যবিড়ম্বিত হয়ে দারিদ্র্য আর দুর্ভোগ নিয়ে পড়ে থাকতে হচ্ছে। দিনান্তে যদি কিছু জোটে সেটাই ভরসা। তাদের বেঁচে থাকার স্বপ্ন পূরণে দেখা যায় যত অবজ্ঞা আর অবহেলা। একেই ধরে নিতে হচ্ছে অপরিহার্য পরিণতি আর নিয়তির ফের। এই ভাগ্যহত মানুষের দিন বদলের কল্পনা অনন্তকাল কি আকাশে ভেসে বেড়াবে? পক্ষান্তরে ভাগ্যের কিছু বরপুত্র তথা একশ্রেণীর মানুষ বিত্তবৈভবে পরিপুষ্ট হয়ে আমোদ আহ্লাদে ডুবে থাকবে! ভাগ্যহত মানুষের কিছু মেকি সুহৃদ মগ্ন মৈনাকের মতো কালেভদ্রে মাথা জাগিয়ে চিৎকার দেবেন, এই বৈষম্য দূর করতে হবে। এসব কেবলই আত্মপ্রতারণা, যা ক্ষমার অযোগ্য এক পাপ। এই হচ্ছে আমাদের বিরাজমান অর্থনৈতিক রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক চিত্র। রাজনীতির ক্ষেত্রেও পক্ষ-বিপক্ষের সেই অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি। দীর্ঘ দিন ধরে রাজনীতির একনিষ্ঠ পর্যবেক্ষকদের অভিজ্ঞতা আর পর্যবেক্ষণের নির্যাস এটাই। লক্ষণীয়, যেকোনো পক্ষেরই এ থেকে আত্মশুদ্ধির অনুভূতির ও পরিবর্তনের কিছুমাত্র প্রয়াস কখনোই পাওয়া যায়নি।

তবে ক্ষমতার বাইরে যারা যখন থাকে যেহেতু তাদের তখন কোনো ‘দায়দায়িত্ব থাকে না’ বলে তারা ক্ষমতাসীনদের নানা নিন্দা ও কড়া সমালোচনা করে বটে। পক্ষান্তরে যারা ক্ষমতায় আসীন তারা সে সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে বহু ক্ষেত্রে সাধারণ ভদ্রতা ভব্যতা শালীনতার সীমা পর্যন্ত অতিক্রম করতে দ্বিধাবোধ করে না। আজকে দেশের রাজনীতি এখানে এসে ঠাঁই নিয়েছে।
রাজনীতিতে পক্ষবিপক্ষের ওলটপালট ঘটলেও সমাজ রাষ্ট্রের তেমন কোনো গুণগত পরিবর্তন আসবে, সে আশা করা বাতুলতামাত্র। এ ধারণা অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে সঞ্চিত।
গত ৫০ বছরে ক্ষমতার পটপরিবর্তন ঘটেছে বহুবার। তাতে কেউ ক্ষমতা পেয়েছে কেউ হারিয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের ভাগ্যের চাকা তো কেউই ঘোরানোর চেষ্টা করেনি। তবে আগে ক্ষমতা বদলে সাধারণ মানুষের যে ভূমিকা ছিল আজ সেটা নেই। আগে তেলা মাথায় তেল ঢালার যে তোষামোদি আচরণ ছিল তা বরং বেড়েছে। আর গরিবের তেলবিহীন খটখটে মাথায় কেউই তেল দেয় না। যেহেতু ক্ষমতা বদলে তাদের এখন কোনো ভূমিকা নেই, সে জন্য সাধারণ মানুষ হয়ে পড়েছেন অপাঙ্ক্তেয়।
সে যা হোক, বহুকাল থেকে বিড়ম্বিত মানুষের ভাগ্য বদলের নামে অভিন্ন ভাষায় রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে আশাব্যঞ্জক বহু প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে যা আকাশচুম্বী। পরের নির্বাচনেও সেই ইশতেহারের দাঁড়ি, কমা না পাল্টিয়েই সম্ভবত তার পুনর্র্মুদ্রণ করা হয়। কেননা অতীতে দেয়া যত আশা-ভরসা তার কিছুই তো আলো আর বাস্তবতার মুখ দেখেনি। এভাবেই মানুষ এখন এমনসব ‘শৈলী’র শিকার হচ্ছে।

ইদানীং দেশের পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে। এতে সাধারণের মধ্যে কোনো ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া না থাকলেও কিছু লোক কিন্তু তাতে আনন্দে আত্মহারা। কারণ এটাই, পরিবর্তনের কথায় কিছু অর্থকড়ির গন্ধ থাকে। সেটা লুটেপুটে নিয়ে আগের মতোই আবারো তারা ফুলে ফেঁপে উঠবে। এখন সেই স্বপ্নে বিভোর হয়ে ঊর্ধ্ববাহু নৃত্যের মহড়া দিয়ে চলেছে এরা। সম্প্রতি এসব লুটেরাকে নিয়ে বহু সত্য, যৌক্তিক আর ঝাঁজালো বক্তব্যে জাতীয় সংসদ মুখর হয়ে উঠেছিল। সাধারণের মধ্যে এই বোধ সৃষ্টি হয়, বিলম্বে হলেও সংসদ হয়তো গাঝাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। সংসদে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নানা অনিয়ম দুর্র্নীতি অদক্ষতা সম্পর্কে সংশ্লিষ্টদের তুলোধোনা করা হয়েছিল। বিদেশে অর্থ পাচারসহ আর্থিক দুর্নীতির রাজা মহারাজাদের নিয়ে উত্তপ্ত হয়েছিল সংসদ। ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে কালপ্রিটদের নামধাম চাওয়া হয়েছিল। ট্রেজারি বেঞ্চে থেকে এমন দাবি ওঠা ওয়াকিবহাল মহলকে বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে। কেননা এতকাল ধরে পত্রপত্রিকায় ওই সব ব্যক্তির নামধাম নিয়ে বহু খবর প্রকাশিত হয়েছে। এমইক সাধারণের মধ্যেও তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা আর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। তারপরও ট্রেজারি বেঞ্চের সদস্যরা নাম নিয়ে যদি অজ্ঞতা প্রকাশ করেন, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই অবাকই হতে হয়। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে প্রশাসনের ভেতর এত ইনফরমেশন গ্যাপ? তবে সচেতন মানুষের অভিযোগ এসব নিছক ছলচাতুরী। তথ্য পাওয়ার জন্য প্রশাসনের বহু ‘মেশিনারিজ’ রয়েছে যাদের দায়িত্ব এসব তথ্য-উপাত্ত আর খলনায়কদের নামধাম সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট স্থানে পৌঁছে দেয়া। ট্রেজারি বেঞ্চের এমন ‘অজ্ঞতার’ অর্থ কি এই নয়, প্রশাসনের সেই মেশিনারিগুলো এখন সক্রিয় নয়, অথবা তাদের সরবরাহ করা তথ্যকে আমলে নেয়া হচ্ছে না। আমাদের আলোচনা মুখ্য বিষয় এসব নয়, তবে কখনো কখনো মূল আলোচনায় ক্ষেত্র বিশেষে পাশ থেকে তা সাহায্য করতে পারে।

নিবন্ধের আরম্ভ হয়েছে সমাজের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর দরিদ্রতা তথা তাদের রিজিকের বঞ্চনার বিষয়ে, পক্ষান্তরে কতিপয় মানুষের শঠতা অনিয়ম আর নীতি-নৈতিকতার জলাঞ্জলি নিয়ে; কোটি মানুষের পাওনার হক থেকে মাহরুম করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করা। বুঝতে চাওয়া যে, এসব দুরাচার নিয়ে নীতিনির্ধারকদের বোধে কতটুকু আঘাত লাগছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের চেতনার মূলে রয়েছে বৈষম্যের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেয়া। রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের এসব দায়-দায়িত্বকে অন্ধের যষ্টির মতো আঁকড়ে ধরে ন্যায়পরায়ণতার পরাকাষ্ঠা থাকা। সম্পদের যথাসম্ভব সমবণ্টন, দুস্থদের প্রতি গভীর স্নেহ মমতা আর ভালোবাসা নিয়ে দায়িত্ববোধকে জাগ্রত রেখে তাদের পাশে দাঁড়ানো। এমন বিবেচনা নীতিনির্ধারকদের মধ্য থেকে একেবারে উবে গেছে তা বলব না। তবে এতটুকু উল্লেখ করব, সেই বোধ নিয়ে জাগ্রত এবং উদ্বুদ্ধ থাকার মাত্রাটা অবশ্যই কমতির লক্ষণ দেদীপ্যমান। আমরা এ কথা যেন ভুলে না যাই, দেশের সর্বোচ্চ নীতিনির্দেশিকার যে পবিত্র গ্রন্থ তার কোনো ব্যত্যয় যেন না ঘটে। সেখানে দেশে যা কিছু কাজ হচ্ছে তার ফল কিছু সুবিধাভোগীর উপকারেই লাগছে বলে সমালোচনা হয়। ইদানীং কোনো কোনো বিষয়ের অগ্রগতির প্যারামিটার নিয়ে বিদেশ থেকে প্রশংসামূলক পর্যবেক্ষণের খবর প্রকাশিত হয়েছে। সেসব নিয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু বিভিন্ন জনের মনে কিছু জিজ্ঞাসা উঁকি দিচ্ছে। তা হলো, যদি সব কিছু ভালো হয়েই থাকে তবে মানুষের দারিদ্র্য বিমোচনের অগ্রগতি নেই কেন, দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে কিভাবে। দেশের অসংখ্য শিশু শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। বহু শিশু পরিবারের শোচনীয় আর্থিক অবস্থার কারণে শ্রমজীবী হয়ে পড়েছে। বেকারত্বের হার ক্রমাগত স্ফীত হচ্ছে, চিকিৎসাবঞ্চিত লাখ মানুষ হীনবল হয়ে কর্মে অক্ষম হয়ে পড়ছে, নারীর ওপর নির্যাতনের অবস্থা কেন এত ভয়াবহ। নিম্নআয়ের এবং মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা এতটা কমেছে যে, তাদের জীবন নির্বাহ করা কঠিনতর পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি আর গণতন্ত্র তলানির শেষ সীমায় পৌঁছেছে। এরপরও আন্তর্জাতিক বলয় থেকে যখন প্রশংসাসূচক বক্তব্য শুনি তাতে খটকা লাগে। কেননা সেই বলয় থেকেই এমন বার্তাও আসে যে, দেশের বহু সূচকের অবস্থা ক্রমাগত শোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। এসব পরস্পরবিরোধী তথা বৈপরীত্যমূলক তথ্য পাওয়া যায়। তখন ভেবে কোনো কূলকিনারা পাই না। আসলে কোন পর্যবেক্ষণের ওপর আস্থা রাখব, তা নিয়ে দ্বিধায় পড়তে হয়।

আমরা আশাবাদী হতে চাই। সরকারপ্রধান উন্নয়নসংক্রান্ত যে ভিশন জাতিকে শুনিয়ে যাচ্ছেন তার একটা ইতিবাচক প্রভাব তো আছে। উন্নয়নের লক্ষ্য ব্যক্তিজীবন থেকে সমাজ ও রাষ্ট্রীয়জীবনে থাকতে হয়। এখন প্রয়োজন দৃঢ়চেতা দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের। এর অভাব আমাদের নেই বলে ভরসা আছে। তবে সেই নেতৃত্বকে পাশ থেকে সাহায্য-সহযোগিতার জন্য একদল নিবেদিত প্রাণ চৌকস আর পরিশ্রম প্রিয় বিজ্ঞ মানুষ তথা মন্ত্রী, দক্ষ আর সব কিছু সামলে নেয়ার মতো অভিজ্ঞ আমলা শ্রেণীর দরকার যারা উন্নয়ন কার্যক্রমকে তদারকি করে এগিয়ে নিয়ে যান। এখানেই মানুষের আস্থার যত ঘাটতি রয়েছে। গড়ে সবার কথা বলব না। তবে বেশ কিছু অদক্ষ লোক রয়েছেই। এই বোধের কারণ, বিগত কিছুকাল থেকে লক্ষ করা গেছে বহু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে এসব ব্যক্তির অদক্ষতা আর গাফিলতির কারণেই, যা নিয়ে সংসদে তুমুল বিতর্ক হয়েছে। এসব ব্যক্তির জন্য রাষ্ট্রের ভাবমর্যাদা যেমন ক্ষুণœ হয়েছে তেমনি কোভিডের টিকা সংগ্রহ নিয়ে গাফিলতি হয়েছে; দেশকে অর্থদণ্ডে পড়তে হয়েছে। আরো বলব, যেকোনো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কিছু টেকনিক্যাল ম্যান তথা কারিগরি জ্ঞানে সমৃদ্ধ বিশেষজ্ঞর প্রয়োজনটা কোনোক্রমেই খাটো করে দেখার মতো নয়। আমাদের দেশে একেবারে বিশেষজ্ঞ নেই, তা ঠিক নয়। তবে তাদের বড় কাজ করার অভিজ্ঞতা কম। এ জন্য বাইরের উচ্চমানের বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন অস্বীকার করা যাবে না। একটা প্রবাদ আছে ‘খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি’। অর্থাৎ যতটুকু খাজনা আদায় করা হয় বাজনা বাদকের পরিশ্রমিক তার চেয়ে অনেক বেশি। আমাদের এমন বিশেষজ্ঞ বাছাই করতে হবে যেন তাদের বেতনভাতা আমাদের উপকারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। অতীতে এমন বহু অভিযোগ রয়েছে, বিশেষজ্ঞ বাছাই করার ক্ষেত্রে আনাড়িপনা ছিল। অনেক অদক্ষ তথাকথিত বিদেশী বিশেষজ্ঞদের অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আনা হয়েছে। অনেক হয়েছে কিন্তু তাদের কাজ কিছুই হয়নি।

আমাদের আর্থিক সামর্থ্য যে কম তা আর নতুন করে বলার দরকার নেই। আমাদের প্রকল্পের জন্যই বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজন হয়। ঋণ করা অর্থ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য টাকা ব্যয়ের অর্থ হলো ‘ঋণ করে ঘি খাওয়া’র মতো। আমাদের বাজেটের একটা বড় পরিমাণের অর্থ এখন বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা বাবদই বরাদ্দ করতে হয়। আমরা জানি, অনেক ছুতানাতা নিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য টাকা খরচ করে বিদেশে লোক যায়। আমাদের ধারণা, প্রকল্পের ব্যয়ের ক্ষেত্রে কতটা সাশ্রয়ী হওয়া যায় সে সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বাইরে যেতে হলে সেটা যৌক্তিক বটে। আর ঘরের লোক দিয়ে যদি কাজ চালানো যায় সেটা অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। পশ্চিমে তথা ইউরোপের দেশগুলো যে প্রভূত উন্নতি করেছে তাদের সম্ভবত বাইরে থেকে লোক ধার করার খুব একটা প্রয়োজন হয়নি। ভবিষ্যতের প্রয়োজনের কথা ভেবে দেশের এমন সব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কথা ভাবতে হবে যেখান থেকে বিশ্বমানের বিশেষজ্ঞ দেশের জন্য এমন কি বাইরেও কাজ করতে পারে তেমন লোক তৈরি করতে হবে। আয়তনে আমাদের দেশটা ছোটÑ এমন হীনম্মন্যতায় ভোগা ঠিক নয়। ভাবতে হবে, আমাদের ১৬ কোটি মানুষের ৩২ কোটি হাত। এই হাতগুলো যদি কর্মীর হাতে পরিণত করা যায়, তবে কতটা ইতিবাচক ফল আসবে? তাই আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনায় এসব ধারণাকে স্থান করে দিতে হবে।

কোনো দেশেই উন্নয়নের কার্যক্রম একদিনে শুরু হয়নি। তার দীর্ঘ পটভূমি রয়েছে। গত ৫০ বছরে আমাদের অনেক পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণীত হয়েছে। বহু প্রকল্প তাতে অন্তর্ভুক্ত ছিল। তার সফল বাস্তবায়ন ঘটেছে কি? দেশের যে শ্রী আর দৈন্যদশা, তাতে তো মনে করার কোনো কারণ নেই যে, তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন ঘটেছে। সংবিধানে উন্নয়নসংক্রান্ত যে নীতি অনুসরণ করার তাগিদ দেয়া হয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন তো হয়নি। শহরগুলোতে কিছু বহুতল ভবন উঠেছে, কিছু রাস্তাঘাট হয়েছে। ঢাকায় এসবের সংখ্যা বেশি। ঢাকা ও অন্যত্র কিছু ফ্লাইওভার হয়েছে। কিন্তু এসব উন্নয়নের ধারণার সাথে খুব কি সাজুয্যপূর্ণ? ঢাকা আয়তনে অনেক বেড়েছে। তাতে অপরিকল্পিত ঢাকার সমস্যাকে বহু গুণে বাড়িয়ে এখন সহ্যের সীমা অতিক্রম করে গেছে। ঢাকার জনসংখ্যা বেড়েছে অনেক, আর ক্রমাগত বাড়ছেই। অথচ এই বাড়তি মানুষের জন্য নাগরিক সুযোগ-সুবিধা তো বাড়েনি। বরং মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সঙ্কট আরো প্রকট হয়েছে। মানুষের চাপ, যানবাহন বৃদ্ধি পাওয়া, অপরিকল্পিত আবাসন, শহরে নানা ছোট ও মাঝারি কলকারখানা এসবের কারণে ঢাকার বায়ুদূষণ এখন এতটা ভয়াবহ, যা নানা রোগবালাইয়ের কারণ। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এখন ঢাকা বায়ুদূষণের মাত্রা নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করা হচ্ছে। অথচ দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ধারণার মধ্যে বায়ুদূষণ প্রতিরোধের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত কি করা হয়েছে? পৃথিবীর সব দেশেই উন্নয়ন বলতে কেবল নাগরিকদের কিছু সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিই নয়, তার সাথে স্বাস্থ্যকর পরিবেশের এমন চেতনা পরিস্ফুট এবং মানবকল্যাণে যা করণীয় তার সুস্পষ্ট দিকদর্শন সন্নিবেশিত রয়েছে। পবিত্র গ্রন্থকে স্পর্শ করে শপথ নিয়ে তারা ক্ষমতাসীন হয়েছেন। তাদের মধ্যে যদি এখন কোনো দুর্বলতা লক্ষ করা যায়, তবে সেটা নীতিভ্রষ্টতা ছাড়া ভিন্ন কোনো বিশেষণের আওতায় ফেলা যাবে কি?

আমরা যতটুকু প্রশাসনিক কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করছি তাতে সরকারপ্রধানের সদিচ্ছার ঘাটতি বা আন্তরিকতার অভাবের কোনো নজির নেই। বরং তার ভিশনের লক্ষ্যে পৌঁছার ক্ষেত্রে মজবুতিটার প্রশংসা করতে হবে। কিন্তু কিছু মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন নিয়ে অবহেলা আর অদক্ষতা এখন মানুষের মুখে মুখে। প্রকৃত পক্ষে এমন উদাহরণ রাষ্ট্রযন্ত্রকে গতিহীন করে তার সঠিক পথে চলা থেকে বিচ্যুত করেই যাবে। এসব কারণেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রথিতযশা কিছু গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন দেশের উন্নয়নসহ নানা কার্যক্রমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করে গ্রেডিং তথা মূল্যায়ন করে তাদের পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করে। এমন এক প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিককালের এক সমীক্ষায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান এতটা তলানিতে দেখানো হয়েছে, যা দেশের মান মর্যাদাকে ক্ষুণœ করেছে। প্রকৃতপক্ষে সেটা গ্লানিকর। জানি না আমাদের কর্তৃপক্ষ এসব নিয়ে কোনো গা করেন কি না। আর বাইরের সংস্থার এমন মূল্যায়নের খুব বেশি কি প্রয়োজন আছে? দেশের ভেতরে থাকা মানুষ অনেক রাখ ঢাকের পরও যা উপলব্ধি করে তারপর কি অন্যের মুখে ঝাল খাওয়ার খুব প্রয়োজন আছে? দুঃখ হয় তাদের জন্য, যারা এর মধ্যেও দেশের জন্য অবদান রেখে চলেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গৃহযুদ্ধ আর সন্ত্রাসী কার্যক্রম মোকাবেলা করে শান্তি রক্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের সশস্ত্রবাহিনীর চৌকস আর অকুতোভয় সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে জাতিসঙ্ঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা ও দেশ প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাদের গৌরব গাথায় ওপরে বর্ণিত কুকর্ম আর অদক্ষতা কোনো আঁচ যেন না ফেলে।
এসব ব্যর্থতার কাহিনীর বর্ণনা করে লেখা দীর্ঘায়িত করব না।

বাংলাদেশের উন্নয়নের ভিশনের কথা আমরা বলেছি এবং জেনেছিও। সে ব্যাপারে দেশের সংবিধানের দিকনির্দেশনার কথাও বলেছি। সেই নির্দেশনার কতিপয় বিষয় উল্লেখ করা হলে সবার এ নিয়ে জানাটা আরো স্পষ্ট হতে পারে। সংবিধানের প্রস্তাবনায় রয়েছে, ‘নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা, সুবিচার নিশ্চিত হইবে’। আরো বলা আছে ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ’। সংবিধানে রয়েছে, ‘... নীতিসমূহ বাংলাদেশ পরিচালনার মূলসূত্র হবেই...’। ‘... জনগণের জীবনযাত্রার দৃঢ় উন্নতি সাধন, যাহাতে নাগরিকদের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ অর্জন নিশ্চিত করা যায় : অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ জীবন ধারণের মৌলিক উপকরণের ব্যবস্থা;’ ‘নগর ও গ্রামাঞ্চলের জীবনযাত্রার মানের বৈষম্য দূর...? ‘সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করিতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হইবেন।’ উন্নয়নের এমন সব নির্দেশনা থাকায় জাতীয় উন্নয়নের রূপরেখা প্রণয়নের ক্ষেত্রে তা অনেক সহজ হওয়ার কথা।

ওপরে উদ্ধৃত নীতিগুলোকে সম্পৃক্ত করে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমের কোনো দলিল রচিত হয়েছে কি না তা নিয়ে কেউই হয়তো ওয়াকিবহাল নন। কেননা এ বিষয় প্রকাশ্যে আনা হয়নি। জাতীয় সংসদের ভূমিকা নিয়ে অনেক কথা থাকার পরও সেখানে এই নীতি নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন ছিল। তাতে কিছু পর্যবেক্ষণ আর পরামর্শ আসতে পারত যা উন্নয়নের জন্য সহায়ক হতে পারত। তা ছাড়া এমন আলোচনা পর্যালোচনার ফলে যাদের জীবনযাত্রার মান আর স্বস্তির জন্য একটা দলিল রচিত হওয়ার আশা করা হয়, তার লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কেও অবহিত হওয়া যেত। দেশের মানুষের জীবনের অগ্রগতি সমৃদ্ধি নিয়ে যারা ভাবেন তাদের কাছেও সামগ্রিক বিষয় সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা সৃষ্টি হতে পারত। তবে তেমন দলিল আদৌ তৈরি হয়েছে কি না তাও তো প্রশ্ন।

তারপর যদি কোনো ছায়া ব্যবস্থাও হয়ে থাকে, তাতে মৌলিক উন্নয়ন ধারণার প্রতিফলন ঘটেছে কি না। এসব বিষয় তো জানার অধিকার মানুষের থাকারই কথা। এখানে স্মরণ করা প্রয়োজন বোধ করছি; সংবিধানে উন্নয়ন সম্পর্কিত দিকনির্দেশনা কিন্তু কোনো ব্যক্তি গোষ্ঠী বা সমাজের সুবিধাভোগী কিছু মানুষের জন্য নয়। সার্বজনীন কল্যাণ চিন্তারই সেখানে প্রতিফলন ঘটেছে। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। আমরা যেমন অনেক বিষয়েই অবহেলা করি ঠিক তেমনি পরিবেশকে অবজ্ঞা অবহেলার মধ্যেই রেখেছি। উন্নয়ন ধারণার মধ্যে মানুষের স্বাস্থ্য পরিচর্যা, বিনোদন এসব কখনোই এখানে গুরুত্ব পায়নি। ক্রীড়ার উন্নয়ন অনেক বেশি প্রয়োজন। কূটনৈতিক সম্পর্ক আর তার পরিচিতির বলয় বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ বহু দেশে মিশন স্থাপন করেছে। এ জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়। কিন্তু তারা দেশকে পরিচিত করে তোলার ক্ষেত্রে কতটা অবদান রাখছে? অথচ বাংলাদেশের ক্রিকেট দল এ খেলার বিশ্ব আসরে গিয়ে দেশকে পৃথিবীর কোটি কোটি ক্রীড়ামোদী, ক্রিকেটপ্রেমিকদের কাছে পরিচিত করে তুলেছে। ক্রিকেটের যে উন্নতি হয়েছে তা মাত্র গত কয়েক বছরের ঘটনা। সরকার ক্রিকেটের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এভাবে ফুটবল ও অন্যান্য খেলার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করে যেতে হবে।
রাজধানী ঢাকা শহরে খেলাধুলার জন্য কয়টি ময়দান রয়েছে? খেলাধুলা কিশোর যুবকদের মনোদৈহিক উন্নতিরই সাহায্য করে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় যে, দেশে মাদকের নীল দংশন এখন নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তা ছাড়া উন্নয়নের সাথে মানুষের জানমালের নিরাপত্তার কথা ভাবতে হবে। প্রত্যেক মানুষকে পুলিশের গার্ডে রাখা সম্ভব নয় বটে। তবে সামগ্রিকভাবে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তাদের প্রশিক্ষণ এবং আধুনিক সাজসরঞ্জামে সজ্জিত করার ক্ষেত্রে কোনো শৈথিল্য প্রদর্শন ঠিক হবে না। পুলিশকে সব কিছু দিয়েই তাদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ মাত্রার সেবাটা নিতে হবে। তবে এ কথা স্বীকার করতে হবে গত কয়েক বছরে পুলিশকে অনেক দক্ষ আর অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে যার ইতিবাচক অনেক দিক লক্ষ করা গেছে। এমন উদ্যোগ শুধু জারি রাখাই হবে না তার প্রসার ঘটবে।

যেকোনো দেশের রাজধানীকে গোটা ‘দেশের সুশ্রী মুখমণ্ডলের প্রতিচ্ছবি’ হিসেবেই গণ্য করা হয়। অন্যান্য দেশের রাজধানীর তুলনায় ঢাকার হতশ্রী অবস্থার কথা ভেবেই মহানগরী ঢাকাকে দু’টি সিটি করপোরেশনের আওতায় নেয়া হয়েছে। কিন্তু যে নগরীর সারা অঙ্গজুড়ে বিষব্যথা আর খোস পাঁচড়া, সেখানে মলম দেবে কোথায়? ৪০০ বছরের বেশি পুরনো এই শহর। এ শহরের গোড়াপত্তন যখন হয় তখন কারো ধারণার মধ্যে ছিল না পরিকল্পনার ‘প’। অথচ পৃথিবীর বহু শহরের গোড়াপত্তন হয়েছিল ঢাকার চেয়েও অনেক আগে। তারপরও সেসব শহর কত পরিচ্ছন্ন আর পরিকল্পিত তা ভাবতে অবাক লাগে। সেসব শহরকে কখনো ঢেলে সাজানোর প্রয়োজন হয়নি। এসব শহর আসলে উন্নত দেশেরই প্রতীক হয়ে আছে। কিন্তু ঢাকার হতশ্রী অবস্থা কোনোভাবে কখনোই হয়তো উন্নত দেশের প্রতীক করে তোলা সম্ভব হবে না। যেসব সুন্দর শহরের কথা বললাম, সেসব শহরের ব্যবস্থাপকরা নগরীকে সুন্দর করে সাজানো গোছানো রাখার জন্য সব বিধিবিধান তৈরি করেছেন। অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে সেসব বিধান অনুসরণ করে থাকেন কোথায় কেউ কোনো ব্যত্যয় ঘটাতে চাইলে শক্ত হাতে তার প্রতিবিধান করা হয়। নগরীর সৌন্দর্য্য বজায় রাখা আর পরিচ্ছন্ন রাখার ক্ষেত্রে কোনো শিথিলতা দেখান না। শহরের নাগরিকরাও নিজ শহরের শ্রীহানির কথা কখনো চিন্তাই করে না।

পক্ষান্তরে ঢাকার ফ্রি স্টাইল চলন বলন রোখার চেষ্টা সাধনা কিছু আছে বলে মনে হয় না। নগরীর বিধিবিধান যা আছে, সে ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনগুলোর তা রক্ষার ক্ষেত্রে যেমন চরম শৈথিল্য তেমনি নাগরিকদের তা মান্য করার অভ্যাসও গড়ে উঠেনি। মহানগরীতে তিনটি পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা হয়েছিল। সেই তিন আবাসিক এলাকা হচ্ছে ধানমন্ডি, গুলশান আর উত্তরা। কিন্তু এসব আবাসিক এলাকা এখন তার বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ফেলছে। সেগুলো কমার্শিয়াল জোনে পরিণত হতে চলেছে। অনেক দিন থেকে এলাকাগুলোর চরিত্র বদলের কার্যক্রম শুরু হলেও সিটি করপোরেশন কখনোই কোনো ‘রা’ করেনি। এমন শৈথিল্য তো কখনোই কোনো নীতিকে ধরে রাখতে পারবে না।
দু’টি বাস্তব ঘটনা উল্লেখ করে এ লেখা শেষ করব। তখন জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায়। আমরা কয়েকজন সাংবাদিক দায়িত্ব পালনের জন্য বঙ্গভবনে যাই। সেখানে সে সময়ের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সর্বজনশ্রদ্ধেয় তোয়াব খানকে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সে দিনের বিভিন্ন খবর, সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয়-এর কাটিং ফাইল নিয়ে উপস্থিত থাকতে দেখলাম। জিজ্ঞেস করলাম, পত্রিকার এত কাটিং আপনার ফাইলে। জবাবে তিনি বললেন, তোমরা আজকে যে যা লিখেছ, প্রেসিডেন্ট তা দেখবেন। দ্বিতীয় ঘটনাটি হচ্ছে, আমি তখন একটি জাতীয় দৈনিকের চিফ রিপোর্টার। এক সন্ধ্যায় অফিসে নিজের টেবিলে বসে কাজ করছিলাম। একজন চৌকস ব্যক্তি কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি চিফ রিপোর্টার? বললাম জি, তিনি বললেন আমি কর্নেল শরীফ ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান। তখন বলতে গেলে আধা সামরিক শাসন চলছে। তার পরিচয় শুনে অজানা আশঙ্কায় কিছুটা ভীত হয়ে পড়লাম। তারপর বললেন আপনাদের পত্রিকায় আজ একটি সচিত্র খবর বেরিয়েছে; তাতে আপনাদের অফিসের কাছে ঢাকনাবিহীন সুয়ারেজের কথা বলা হয়েছে। তার ঢাকনা না থাকায় প্রায়ই সেখানে রিকশা দুর্ঘটনায় পড়ে, যাত্রীরা আহত হয়। প্রেসিডেন্ট এরশাদ আমাকে বিষয়টি দেখার জন্য টেলিফোনে নির্দেশ দিয়েছেন, তাই আমি স্বয়ং এসেছি সেটা দেখার জন্য। প্রকৃতপক্ষে সেটা স্টর্ম সুয়ারেজ। তা আমাদের আওতাধীন নয়। সিটি করপোরেশনের দেখার বিষয়। এই তথ্যটি আপনাদের ছাপাতে হবে। পরের দিন বিষয়টি ছাপানো হলো। দুপুরের দিকে দেখলাম, সিটি করপোরেশনের লোকজন সেটা সরাতে ব্যতিব্যস্তভাবে কাজ করছে। বিষয় দুটো এ জন্য উল্লেখ করলাম যে, রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে এমন ভিজিলেন্স থাকাটা জরুরি। আজো এমন রেওয়াজ জারি থাকারই কথা। বিভিন্ন সংস্থার অনেক বড় বড় সমস্যা নিয়ে রিপোর্ট হচ্ছে প্রতিদিন। কিন্তু তার অ্যাকশন হতে খুব একটা দেখা যায় না। সমস্যাগুলো ক্রনিক হওয়ার পরও তার উপশম হয়েছে বলে শুনিনি। এসব আসলে একান্তই গাফিলতি। এমন অবহেলার কারণে ঢাকা উন্নত বা উন্নয়নশীল দেশে প্রধান শহর হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে না। ঢাকায় বহু বিদেশী আসেন। তারা নিশ্চয়ই এখান থেকে সুধারণা নিয়ে যান না। হ
ndigantababor@gmail.com

https://www.dailynayadiganta.com/post-editorial/590961/