১৭ জুন ২০২১, বৃহস্পতিবার, ১:১৩

বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট

সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই বাড়ছে

গতকাল শনাক্ত ৩৯৫৬ মৃত্যু ৬০; সাতক্ষীরায় সংক্রমণের হার ৫৩.১৯

করোনা সংক্রমণ শুধুই বাড়ছে। ঈদুল ফিতরের পর থেকে যে হারে বেড়ে চলেছে, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া তা আর কমেনি। গতকাল বুধবার ছিল ঈদের পর থেকে সর্বোচ্চ সংক্রমণের দিন। গতকাল সকাল ৮টার আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে তিন হাজার ৯৫৬ জন এবং একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ৬০ জনের। এ সময়ের মধ্যে সারা দেশে মোট ২৩ হাজার ৮০৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গতকাল যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছে তাদের এক-তৃতীয়াংশের বেশি রাজধানী ঢাকায় আক্রান্ত হয়েছে। সারা দেশে করোনা সংক্রমণের হার গড়ে ১৬.৬২ শতাংশ হলেও কয়েকটি অঞ্চলে অনেক বেশি। যেমন, সাতক্ষীরায় করোনা শনাক্তের হার ৫৩.১৯ শতাংশ, যশোরে ৪৯.০৩ শতাংশ, চুয়াডাঙ্গায় ৪৪.৪৪ শতাংশ রাজশাহীতে ৪৩.৪৩ শতাংশ এবং কুড়িগ্রামে ৪২ শতাংশ।

সরকারের রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) গত ৪ জুন জানিয়েছিল, দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের (ডেল্টা) কমিউনিটি সংক্রমণ শুরু হয়েছে। ঠিক এর আগে সীমান্ত জেলাগুলোতে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ কমাতে লকডাউনের আওতায় এনেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। তবে করোনা সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতিতে আরো বেশি নজর দেয়া প্রয়োজন। আরো বেশি করে পরীক্ষা ও জিনোম সিকোয়েন্স করে প্রয়োজনে বেশি সংক্রমিত অঞ্চলকে লকডাউন করে রাখা উচিত বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।

এদিকে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শুধু সীমান্ত অঞ্চলগুলোতে নয়, রাজধানী ঢাকাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। আইইডিসিআরের গত ৪ জুনের তথ্য অনুসারে ঢাকার নবাবগঞ্জে সাতজনের নমুনায় সাতটিতেই এবং রাজধানীতে ৪ জুনের নমুনায় দু’টিতে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এই জিনোম সিকোয়েন্সটি করা হয়েছে ১৬ মের পর। এরপর থেকে গতকাল পর্যন্ত এক মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে দেশের সাত জেলায় প্রয়োজন অনুসারে লকডাউন করা হলেও রাজধানীতে এমন কিছু করা হয়নি। জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট খুব দ্রুত ছড়ায়। বলা হচ্ছে ব্রিটেনে যে কেন্ট ভ্যারিয়েন্টের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে এর চেয়ে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টযুক্ত করোনাভাইরাস ৫০ থেকে ৬০ বেশি সংক্রমণের ক্ষমতা রাখে। রাজধানী ঢাকায় কী পরিমাণ ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে তা এখন পর্যন্ত জানান সম্ভব হয়নি। তবে বিভিন্ন গবেষণাগারে জিনোম সিকোয়েন্স হচ্ছে বলে জানা গেছে।

সীমান্ত অঞ্চলগুলোর নওগাঁ, নাটোর, সাতক্ষীরা, কুড়িগ্রাম, যশোর, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও খুলনার জেলায় করোনা সংক্রমণ বেশি হওয়ার কারণে এসব অঞ্চলে লকডাউন দেয়া হয়েছে বিভিন্ন সময়। কিন্তু এখনো জেলাগুলোতে সংক্রমণের হার বেশি। যেমন রাজশাহীতে গতকাল করোনা সংক্রমণের হার ছিল ২১.৬৯ শতাংশ। গতকাল রাজশাহী মহানগর ও রাজশাহী জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে মোট এক হাজার ৫৮১টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩৪৩ জন করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়েছে। নওগাঁয় গতকাল করোনা সংক্রমণের হার ছিল ২১.৮১ শতাংশ। এই জেলায় গতকাল মোট আক্রান্ত হয়েছে ১২৫ জন। এই জেলায় গতকালকের ওই সময় পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৫৭৩টি। শতকরা হিসাবে সাতক্ষীরা জেলায় সবচেয়ে বেশি করোনা শনাক্ত হয়েছে গতকালের উল্লিখিত সময় পর্যন্ত। এই জেলায় করোনা সংক্রমণের হার ৫৩.১৯ শতাংশ। এই জেলায় মোট ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ১০০ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে।

নাটোর জেলায় করোনা সংক্রমণ ছিল ৩০.১৫ শতাংশ। কুষ্টিয়ায় ২৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯৮টিতে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই জেলায় সংক্রমণের হার ৪১ শতাংশ। দেশের সর্বত্রই কম বেশি করোনা সংক্রমণ থাকলেও রাজশাহী বিভাগ, ঢাকা শহর, চট্টগ্রাম শহরে এবং সিলেট বিভাগে সংক্রমণের হার বেশি। করোনা সংক্রমণ সবচেয়ে কম বরিশাল বিভাগে। এই বিভাগের ছয় জেলায় গতকাল সকাল পর্যন্ত মোট ৩৯০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এবং এ নমুনার মধ্যে ৪৭টি নমুনায় করোনা পজিটিভ হয়েছে অর্থাৎ করোনা পরীক্ষা সাপেক্ষে সংক্রমণের হার ১২.০৫ শতাংশ। অন্যদিকে ঢাকা বিভাগে সংক্রমণের হার ১২.৩২ শতাংশ। অপরদিকে রাজধানীতে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১০ হাজার ৭৩৯টি। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ১৩৫টিতে অর্থাৎ নমুনা পরীক্ষাসাপেক্ষে করোনা সংক্রমণ ১০.৫৬ শতাংশ।

রাজশাহীর গ্রামাঞ্চলেও বিস্তার ঘটছে করোনার
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটছে রাজশাহীর গ্রামাঞ্চলেও। প্রতিদিনই গ্রাম থেকে আসা করোনা রোগীর চাপ বাড়ছে শহরের হাসপাতালে। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি হওয়া করোনায় আক্রান্ত রোগীর ৪০ শতাংশই গ্রামাঞ্চলের। আর করোনায় মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই ভারতের ডেল্টা ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন চিকিৎসকরা। তারা জানান, শহরে যেমনভাবে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানা হচ্ছে গ্রামে তা হচ্ছে না। ফলে গ্রামাঞ্চল থেকে এখন বেশি রোগী আসছে। একজন করোনা রোগী সারা গ্রাম মাস্ক ছাড়াই ঘুরছেন। এভাবে অনেক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে করোনার ঢেউ ঠেকাতে শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও বিধিনিষেধ আরোপের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এ দিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ও করোনা উপসর্গে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজন করোনা পজেটিভ ছিলেন। আর অন্যরা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার সকালে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ১৬ দিনে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মোট ১৬১ জনের মৃত্যু হলো।

হাসপাতাল পরিচালক জানান, মৃতদের বেশির ভাগই ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে বয়স্ক মানুষের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তরুণদের মৃত্যুর হারও। রোগীর চাপ সামলাতে হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটসহ মোট ১৩টি ওয়ার্ডে চলছে করোনা রোগীর চিকিৎসা। প্রস্তুত করা হচ্ছে আরো একটি ওয়ার্ড। তবে করোনা রোগী যেভাবে বাড়ছে, তাতে তাদের চিকিৎসা দিতে প্রচণ্ড বেগ পেতে হচ্ছে। এভাবে রোগী বাড়লে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠবে। তখন সামাল দেয়া আরো কঠিন হয়ে পড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। রামেক হাসপাতাল পরিচালক শামীম ইয়াজদানী আরো জানান, রাজশাহীতে গত মঙ্গলবার দুইটি ল্যাবে ১৮৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ৮৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

নড়াইলে লকডাউনের ৫ম দিন অতিবাহিত
নড়াইল সংবাদদাতা জানান, নড়াইলের কয়েকটি এলাকায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের পঞ্চম দিন গতকাল শেষ হয়েছে। গত ১২ জুন শুরু হওয়া এ লকডাউন প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল পৌরসভার মহিষখোলা, আদালতপুর ও ভাদুলীডাঙ্গা এলাকা এবং নড়াইল সদরের গোবরা ও লোহাগড়া বাজার এলাকা লকডাউনের আওতায় রয়েছে। জনসাধারণকে সচেতন করাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনসহ তথ্য অফিসের পক্ষ থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় তৎপরতা চালানো হচ্ছে। সিভিল সার্জন ডাক্তার নাছিমা আকতার জানান, নড়াইলের সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে হঠাৎ করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় লকডাউন চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় ১৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ দিকে করোনাভাইরাসের শুরু থেকে গতকাল পর্যন্ত নড়াইল জেলায় দুই হাজার ১২২ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৮৬৪ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৮ জনের।

কুড়িগ্রাম পৌরসভায় ৩টি ওয়ার্ডে কঠোর বিধিনিষেধ
কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা জানান, সীমান্ত জেলা কুড়িগ্রামে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার তিনটি ওয়ার্ডে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে সাত দিনের জন্য পৌর এলাকার ২, ৩ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে এ বিধিনিষেধ বলবৎ থাকবে। স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গত ১০ দিনে জেলায় ২৭২টি নমুনা পরীক্ষায় ১১৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তের হার ৪২ শতাংশের ওপরে। এ দিকে গতকাল বুধবার সকালে জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার সীমান্ত এলাকার নাখারগঞ্জ গ্রামের আলীম উদ্দিন নামের এক করোনা রোগী রংপুর সামরিক হাসপাতালে মারা গেছেন। জেলায় এ পর্যন্ত এক হাজার ৩৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৭ জন।

খুলনা বিভাগে করোনা শনাক্তে রেকর্ড, মৃত্যু ১০
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনা বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ রেকর্ড ৮১৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে করোনায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা: রাশেদা সুলতানা এ তথ্য জানান। খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বাগেরহাটে চারজন, খুলনায় একজন, যশোরে তিনজন, কুষ্টিয়ায় একজন ও মেহেরপুরে একজন করোনায় মারা গেছেন। এ ছাড়া খুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ২২২ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১২ হাজার ৪২ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৯৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ৮২৫ জন।

বগুড়ায় চারজনের মৃত্যু
বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ায় করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির সাথে সাথে মৃত্যুর সংখ্যাও দিন দিন বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দুই নারীসহ নতুন করে করোনায় চারজন মারা গেছেন। মৃতরা হলেনÑ জয়পুরহাট জেলার রতন মণ্ডল (৪৪) ও লুৎফুনন্নেসা (৬০), সাতক্ষীরা জেলার জাহাঙ্গীর আলম (৩৬) এবং বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার মালতী বেগম (৬৭)। এ নিয়ে জেলায় সরকারি হিসেবে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৩৩৩ জন। এ ছাড়া জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬১ নমুনার ফলাফলে নতুন করে ৪১ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তের হার ১৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। গতকাল বুধবার দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা: মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন।

সামেক হাসপাতালে এক নারীসহ তিনজনের মৃত্যু
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, করোনা উপসর্গ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে এক নারীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার ভোর রাত সাড়ে ৩টা থেকে বুধবার বেলা ১০টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়। মৃত ব্যক্তিরা হলেনÑ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পাথরঘাটা গ্রামের শওকত আলীর স্ত্রী হামিদা খাতুন (৫২), কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর গ্রামের সুরেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের ছেলে গোবিন্দ বিশ্বাস (৬৫)ও কলারোয়া উপজেলার রায়টা গ্রামের আকছেদ আলী সরদারের ছেলে কামাল হোসেন (৩৫)। অপর দিকে সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ১০০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময় সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ৫৩ দশমিক ১৯ শতাংশ।

চট্টগ্রামে ৩ জনের মৃত্যু
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৪৭ নমুনা পরীক্ষা করে ১০৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নতুন করে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে করোনায় সর্বমোট মৃত্যু হয়েছে ৬৪৮ জনের। মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫ হাজার ২৯৭ জন। এর মধ্যে চট্টগ্রামে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে শনাক্ত হয়েছে। সতর্কতামূলক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে দ্রুত সংক্রমণ বাড়বে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই। মাস্ক পরতে হবে। হাত ধোয়ার অভ্যাস থাকতে হবে। ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে।

চুয়াডাঙ্গায় বৃদ্ধার মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা জানান, চুয়াডাঙ্গায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ফাতেমা বেগম (৮০) নমের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ৩টায় সদর হাসপাতালের ইয়োলো জোনে তার মৃত্যু হয়। এ দিকে গত ২৪ ঘণ্টায় চুয়াডাঙ্গায় ২৮টি নমুনা পরীক্ষায় আরো ১৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছে দুই হাজার ৩৪৫ জন। চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৭২ জনের।

ঝালকাঠিতে সাতজন আক্রান্ত
ঝালকাঠি সংবাদদাতা জানান, ঝালকাঠি জেলায় করোনাভাইরাসে গত মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টায় আরো সাতজন আক্রান্ত হয়েছেন। ঝালকাঠি জেলায় এ পর্যন্ত এক হাজার ৪০২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে এক হাজার ২৯৮ জন সুস্থ হয়েছেন ও ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সিভিল সার্জন ডা: রতন কুমার ঢালী এই তথ্য জানান।

নোয়াখালীতে আরো ৭৫ করোনা শনাক্ত
নোয়াখালী অফিস জানায়, নোয়াখালীতে মহামারী করোনা দিন দিন বেড়েই চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ৭৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ৩৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় এ ফল পাওয়া যায়। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এতে জেলায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৯১১ জন। মোট আক্রান্তের হার ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ। জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ১২৭ জনের। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ। গত মঙ্গলবার রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় এ তথ্য প্রকাশ করে।

উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নোয়াখালীর পৌরসভা ও সদর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে চলমান লকডাউনের সময়সীমা ১৮ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/588828