১০ জুন ২০২১, বৃহস্পতিবার, ১:০৫

সরেজমিন খুলনা অঞ্চল

বেহাল অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

দেখার কেউ নেই - খোলার বাকী মাত্র চারদিন

খুলনা অঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেহাল দশা। করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ার-টেবিল-বেঞ্চ ধুলা-ময়লায় ভরে আছে। একই দশা শ্রেণিকক্ষের বৈদ্যুতিক বাতি, ফ্যান, লেখার বোর্ডের। ইলেকট্রনিক পণ্যের প্রায় সবই নষ্ট হয়ে গেছে।

কোনো কোনো ভবনের ভেতরে আবার কোথাও ভবনের আঙিনায় পশুপালন করা হচ্ছে। কিছু প্রতিষ্ঠানের মাঠে মেলা আয়োজনের পর স্টল অপসারণ করা হয়নি। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় রাখা আছে সড়ক-ব্রিজ নির্মাণের সামগ্রী। বসবাস করছেন নির্মাণ শ্রমিকরা। এছাড়া স্থানীয় বখাটে ও মাদকসেবীদের আখড়ায়ও পরিণত হয়েছে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান।

সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনাকালে শ্রেণির কাজ বন্ধ থাকলেও শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা। কিন্তু অনেকেই উপস্থিত থাকছেন না। এ কারণে মাঠ ও আশপাশ এলাকায় জন্মেছে ঝোপঝাড়। অরক্ষিত থাকায় কোনো প্রতিষ্ঠানে এসে কিশোর-শিক্ষার্থীরা পাবজি-ফ্রি ফায়ারের মতো বিভিন্ন ধরনের গেমসে মত্ত হচ্ছে।

সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হলে ১৩ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা ছিল। সে হিসাবে বাকি আছে মাত্র ৪ দিন। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, এ সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিষ্কার করে ও ধুয়ে-মুছে ঝকঝকে অবস্থায় থাকার কথা ছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা প্রতিষ্ঠানের দিকে নজর দিচ্ছেন না।

যুগান্তরের প্রতিনিধিরা জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদানের মতো পরিবেশ নেই। কর্তৃপক্ষ থাকলেও বন্ধের এ সুযোগে একপ্রকার পরিত্যক্ত অবস্থায়ই আছে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা। পরিস্থিতি এমন যে, আলমডাঙ্গার সৃজনী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যপীঠে স্থানীয়রা সাপ পর্যন্ত দেখেছেন।

কুমারখালীতে পান্টি ইউনিয়নের একটি স্কুল ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কুষ্টিয়া হাইস্কুলের মাঠটি শহরের শিশুদের একমাত্র খেলার মাঠ। সেখানে কিছুদিন আগে একটি মেলা হয়েছে। ওই মেলার শেষ হলেও প্রায় ২ মাস ধরে সেখানে স্টলের জিনিসপত্র পড়ে আছে।

মাগুরার কাটাখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে গবাদি পশুর হাট ও চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে। একই অবস্থা যশোর ও মেহেরপুরের বিভিন্ন উপজেলা বিদ্যালয়গুলোর। দামুড়হুদা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বসছে বিড়ি পার্টির আসর। সাতক্ষীরায় কিছু স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর অক্ষত প্রতিষ্ঠানে বসছে মাদকসেবীদের আড্ডা।

যশোরে কিন্ডারগার্টেনসহ বেসরকারি স্কুলগুলো অনেকটাই বন্ধের পথে। এ কারণে পেটের তাগিদে শিক্ষকরা বদলে ফেলেছেন পেশা। খুলনায় ডুমুরিয়ার বেতাগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বসবাস করছেন শ্রমিকরা। আর প্রতিষ্ঠানটির মাঠে রাখা হয়েছে নির্মাণসামগ্রী। খুলনা বিভাগের আরও কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে একই ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/429730/