৪ এপ্রিল ২০১৭, মঙ্গলবার, ১০:০৯

কৃমিনাশক খেয়ে অসুস্থ আরো সাড়ে তিনশ’ শিক্ষার্থী

চলমান কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহে কৃমিনাশক ওষুধ খেয়ে আরো শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছে। গতকাল সোমবার চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ ও কচুয়া, সাভারের আশুলিয়া, নড়াইলের লোহাগড়া এবং জামালপুরের মাদারগঞ্জে কৃমিনাশক ওষুধ খেয়ে ৩৬০ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদেরকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিত্সা দেওয়া হয়েছে। সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর:

হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) : কৃমিনাশক ওষুধ খেয়ে উপজেলার সুহিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়, রামকানাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রান্ধুনীমুড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও সিদলার একটি মাদ্রাসার দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়। এর মধ্যে সুহিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে কর্তৃপক্ষ অসুস্থ শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে পাঠায়।

সুহিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ অজ্ঞান হয়ে যায়, কারো মাথাব্যথা, কারো বুক ব্যথাসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। পরে তারা হাসপাতালে চিকিত্সা নিয়ে বাড়ি ফিরে।

এদিকে, অসুস্থ হওয়া শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে সুহিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভাঙচুর চালায় এলাকাবাসী। পরে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলী নুর মোহাম্মদ বশির আহম্মদ জানান, ২০ জন চিকিত্সক, ১০ জন প্যারামেডিক্যাল চিকিত্সক, নার্সসহ প্রায় অর্ধশত কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের চিকিত্সা দিয়েছে। কৃমিনাশক ওষুধ ভরা পেটে খেলে কোনো অসুবিধা নেই।

কচুয়া (চাঁদপুর): কৃমিনাশক ওষুধ খেয়ে দরবেশগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছে। গতকাল দুপুরের দিকে ট্যাবলেট খাওয়ানোর ১৫-২০ মিনিট পর তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৬ জনকে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ১৫ জন প্রাথমিক চিকিত্সা নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ত্যাগ করে। আরো ১৫/১৬ জন বিভিন্ন ক্লিনিকে গিয়ে চিকিত্সা নিয়েছে বলে অভিভাবকরা জানিয়েছে।

কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত ডা. সাইফুল ইসলাম কুদ্দুস বলেন, হঠাত্ গরম বেড়ে যাওয়ায় ও খালি পেটে ওষুধ খাওয়ায় শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।

ইত্তেফাক রিপোর্ট : আশুলিয়ায় রুস্তমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কৃমিনাশক ওষুধ খেয়ে ১০ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান জানান, সকালে স্বাস্থ্যকর্মীরা এসে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সকল শিশুকে কৃমিনাশক ওষুধ সেবন করান। ওষুধ খাওয়ার পর কয়েকজন শিক্ষার্থী পেট ব্যথা অনুভব করে এবং বমি করতে শুরু করে। পরে তাদেরকে প্রাথমিক চিকিত্সা দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আমজাদুল হক জানান, বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই।

লোহাগড়া (নড়াইল) : কৃমিনাশক ওষুধ খেয়ে উপজেলার চরকোটাকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। গতকাল দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে। তাদের লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিত্সা দেওয়া হয়েছে।

মাদারগঞ্জ (জামালপুর): উপজেলার চরপাকেরদহ ইউনিয়নের পশ্চিম হিদাগারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫০ জন শিক্ষার্থী কৃমিনাশক ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে মাদারগঞ্জ হাসপাতালে চিকিত্সা নিয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, দুপুরে বিদ্যালয়ের তিনশ শিক্ষার্থীকে ওষুধ খাওয়ানোর পরপরই ৫০ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ ৮ জনকে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/last-page/2017/04/04/186846.html