১০ জুন ২০২১, বৃহস্পতিবার, ১২:৫৯

বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকায় আবারও ঢাকা শীর্ষে

বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকায় আবারও নাম লেখাল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা।
বিশ্বের বাসযোগ্য শহরের নতুন তালিকা প্রকাশ করেছে দ্য ইকোনমিস্টের সিস্টার কোম্পানি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শহরের ওপর জরিপ চালিয়েছে সংস্থাটি। তালিকায় ১৪০টি দেশের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। বসবাসের যোগ্য শহরগুলোর তালিকায় ১৪০টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ১৩৭। এ বছর ৩৩ দশমিক পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে সর্বশেষ ঘোষিত তালিকার চেয়ে একধাপ এগিয়েছে ঢাকা। এ বছর ঢাকা স্থিতিশীলতায় ৫৫, স্বাস্থ্যসেবায় ১৬ দশমিক সাত, সংস্কৃতি ও পরিবেশে ৩০ দশমিক আট, শিক্ষায় ৩৩ দশমিক তিন এবং অবকাঠামোতে ২৬ দশমিক আট পয়েন্ট পেয়েছে। ২০১৯ সালে তালিকার ১৩৮ নম্বরে থাকলেও এবার রয়েছে ১৩৭ নম্বরে। এর আগে ২০১৮ সালে ঢাকা ছিল এই তালিকার ১৩৯তম শহর। অর্থাৎ ঢাকা মোটেও বসবাসের যোগ্য শহর নয়। এর আগেও শহরটি বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। করোনা মহামারির কারণে লকডাউন থাকা শহরের তথ্য সংগ্রহ করতে না পারায় ২০২০ সালের তালিকা করার কাজ বাতিল করে ইকোনোমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।

নগরপরিকল্পনাবিদ, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলেন, রাজধানী ঢাকা আর নাগরিক সমস্যা সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে বহু আগেই। বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদী দখলদারিত্বের কবলে পড়ে আবদ্ধ জলাভূমিতে পরিণত হয়েছে। নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে দুর্বিষহ যানজট, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি সঙ্কট, পয়ঃনিষ্কাশনের জটিলতা, দুর্গন্ধময় ও বিষাক্ত বাতাস, দূষিত পরিবেশ, অত্যন্ত ঘনবসতি, ভেজাল খাবার, গাড়ির বিষাক্ত ধোঁয়া, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুর্দশা, জলাবদ্ধতা, ফুটপাথ দখল, চাঁদাবাজি, মাদকের ভয়াল ছোবল, ছিনতাই, আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্য, লাগামহীন বাসাভাড়া, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতি ইত্যাদি সমস্যা। অসংখ্য সমস্যার মধ্যে যেটি প্রধান হয়ে উঠেছে, তা হচ্ছে যানজট। এ সমস্যা এখন নিত্যদিনের বিষয়। যানজটে মানুষের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়, তার হিসাব বিভিন্ন সংস্থা দিয়েছে। বুয়েটের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যানজটের কারণে বছরে ২২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পিপিআরসি বলেছে, এর পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকা। সর্বশেষ জাতিসঙ্ঘের ইউএনডিপি বলেছে, যানজটে বছরে ক্ষতি ৩৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

দ্য ইকোনমিস্টের সিস্টার কোম্পানি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-ইআইইউ মতে, ২০২১ সালের সর্বশেষ এ জরিপে বসবাসের যোগ্য শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড। দ্বিতীয় ওসাকা, তৃতীয় অ্যাডিলেড, চতুর্থ টোকিও এবং পঞ্চম ওয়েলিংটন, ৬ষ্ঠ পার্থ, সপ্তম জুরিখ, অষ্টম জেনেভা, নবম মেলবোর্ন ও দশম স্থানে ব্রিসবেন। অর্থাৎ বসবাসযোগ্য শীর্ষ ১০টি শহরের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের দুটি, জাপানের দুটি, অস্ট্রেলিয়ার চারটি এবং সুইজারল্যান্ডের দুটি শহর রয়েছে।

করোনা মহামারির কারণে বসবাসযোগ্য শহরের তালিকায় এবার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা এই তালিকায় শীর্ষে ছিল। কিন্তু এবার শীর্ষ ১০ শহরের মধ্যে স্থানই পায়নি ভিয়েনা। ২০১৯ সালে ভিয়েনার সঙ্গে একই পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থান ছিল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন। এদিকে এর আগের বছর বসবাসের যোগ্য শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ছিল ১৩৮তম। সে হিসেবে এবার ঢাকার অবস্থার একধাপ এগিয়েছে বলা যায়। এ তালিকাও সন্তোষজনক নয় বলে উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

ইআইইউ-এর জরিপ অনুযায়ী বসবাসযোগ্য শহরের তালিকায় একেবারে শেষে রয়েছে সিরিয়ার দামেস্ক শহর। এ শহরের অবস্থান ১৪০তম। অর্থাৎ যুদ্ধবিধ্বস্ত শহরটি একেবারেই বসবাসের অযোগ্য। অন্যদিকে বসবাসের যোগ্য শহরের তালিকায় ঢাকার চেয়ে কিছুটা ভালো অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের করাচি। শহরটির অবস্থান ১৩৪। এছাড়া ১৩৫তম অবস্থানে লিবিয়ার ত্রিপোলি, ১৩৬তম আলজেরিয়ার আলজিয়ার্স, ১৩৮তম পাপুয়া নিউগিনির পোর্ট মোরেসবি এবং ১৩৯তম অবস্থানে রয়েছে নাইজেরিয়ার লাগোস। উল্লেখ্য, বিশ্বের ১৪০টি দেশের সংস্কৃতি, জলবায়ু, পরিবেশ, শিক্ষা, অবকাঠামো, স্বাস্থ্য ও জীবনযাপনের মানের ওপর ভিত্তি করে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের বৈশ্বিক বাসযোগ্য শহরের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিয়েনাকে টপকে এবারের বসবাস যোগ্য শহরের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে অকল্যান্ড। স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ, শিক্ষা এবং অবকাঠামোর ওপর ভিত্তি করে ১৪০টি শহরের এই তালিকা তৈরি করে।

ডিপ্লোমা শিক্ষা গবেষণা কাউন্সিলের সভাপতি মো. আবুল হাসান ও মহাসচিব খন রঞ্জন রায় বলেন, ঢাকা মহানগরে যানবাহনের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন নির্মাণকাজের কারণে বায়ুদূষণ আশঙ্কাজনক। মিরপুর ১০ নম্বর গোল চক্করে এর মাত্রা সবচেয়ে বেশি। সেখানে প্রতি ঘনমিটার বাতাসে পার্টিকুলেট মেটার (পিএম) ১৭২ মাইক্রোগ্রাম। অথচ জাতীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য পিএম ৬৫ মাইক্রোগ্রাম। জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতিও ভয়াবহ।

তারা আরও বলেন, রাজধানী ঢাকায় মশাবাহিত রোগের প্রকোপ দিনদিন বাড়ছে; যেমন- চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গু প্রভৃতির ঝুঁকি রয়েছে ব্যাপক। ময়লা-আবর্জনার কারণে দূষিত পরিবেশ; পেটের পীড়া, জন্ডিস ও টাইফয়েড আক্রান্ত হয় বহু মানুষ। ঢাকার একটি বার্ষিক ব্যাধি ডায়রিয়া। বছরে অন্তত দু’বার, বর্ষার শুরুতে ও শেষে এটা দেখা দেয়।

বিশ্বব্যাংকের হিসাবে ঢাকার মলমূত্রের মাত্র ২ শতাংশের নিরাপদ নিষ্কাশন হচ্ছে। বাকিটা মিশে যায় প্রকৃতিতে, পানির উৎসে। বিবিএস ও ইউনিসেফের তথ্য মতে, ঢাকায় সরবরাহ করা পানির দুই-তৃতীয়াংশেই মলবাহিত জীবাণু থাকে। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় ঝুঁকি। স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভালো নয় বলে একটু বৃষ্টি হলেই স্যুয়ারেজ, ড্রেন আর পাইপের পানি একাকার হয়ে যায়।

পরিবেশ আন্দোলন বাপার মতে, রাজধানী ঢাকায় জলাবদ্ধতা অত্যন্ত প্রকট সমস্যা। ঘণ্টাখানেকের বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় ঢাকার রাস্তাঘাট। কিছু এলাকা; যেমন- মিরপুর, মানিক নগর, মালিবাগ, ওয়্যারলেস, তেজগাঁও, কালশী রোড, দৈনিক বাংলা মোড় প্রভৃতি স্থানে রাস্তায় পানি থই থই করে। অবর্ণনীয় ভোগান্তিতে পড়ে নগরবাসী। সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও অফিসগামী যাত্রীরা। বেশির ভাগ রাস্তা ও গলি অপ্রশস্ত, ইট-খোয়া-বিটুমিন ওঠা, ময়লায় ভর্তি। এসবের ফল অসহ্য যানজট। রাস্তার সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ নেই। সারা বছরই খোঁড়াখুঁড়ি চলে।

সূত্রে জানাযায়, দেশের সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে স্বাস্থ্য, কৃষি, মেরিন প্রকৌশল শিক্ষায় ১১৭২টি ইনস্টিটিউটের মধ্যে ঢাকাতেই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে অর্ধেকের বেশি- ৬১৮টি। বাকি ৫৫৪টি করা হয়েছে ৩৩টি জেলায়। ৩০টি জেলায় কোনো ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট আজো প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। ঢাকা শহরের জনসংখ্যার চাপ হ্রাস করতে প্রতিটি উপজেলায়-জেলায় ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট নির্মাণ করে কলকারখানা, খামার, হাসপাতাল, ক্লিনিকে ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান নামবিও’র প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ট্রাফিক ইনডেক্স-২০১৯-এ এই তথ্য উঠে এসেছে। নামবিওর তথ্য থেকে জানা যায়, আগে ২০১৮ এবং ২০১৭ সালে যানজটে ঢাকার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। তার আগে ২০১৬ সালে ঢাকার অবস্থান ছিল তৃতীয়। কিন্তু মাত্র তিন বছর আগে ২০১৫ সালে ঢাকা ছিল অষ্টম। বসবাস অযোগ্যতায় তিন বছরে দুই ধাপ উন্নতি হলেও যানজটের দিক দিয়ে চার বছরে আট ধাপ অবনতি হয়ে আমরা প্রথম হয়ে গেছি। বিভিন্ন দেশের রাজধানী এবং গুরুত্বপূর্ণ ২০৭টি শহরকে বিবেচনায় নিয়ে এ তালিকা প্রণয়ন করেছে নামবিও। এ ক্ষেত্রে তারা সময় অপচয়, অদক্ষতা ও কার্বন-নিঃসরণকে বিবেচনায় নিয়েছে। বিশ্বের অনিরাপদ নগরীর তালিকায়ও ঢাকা তৃতীয়। এই তালিকাটিও করেছে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। এদিকে বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত রাজধানী ঢাকা, সবচেয়ে দূষিত বাংলাদেশ। ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত বিশ্ব বায়ুর মান যাচাই করে দেয়া রিপোর্ট থেকে এমন তথ্যই উঠে এসেছিল।

বাতাসে ক্ষুদ্র কণিকার উপস্থিতির পরিমাণ হিসাব করে বায়ুদূষণের মাত্রা হিসাব করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ডব্লিউএইচও স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনা করে বাতাসে ক্ষুদ্র কণিকার গড় মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে সর্বোচ্চ ১০ মাইক্রোগ্রাম নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। কিন্তু ঢাকার বাতাসে এই কণিকার মাত্রা ২০১৮ সালে প্রতি ঘনমিটারে পাওয়া যায় ৯৭ দশমিক ১ মাইক্রোগ্রাম, যা নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে থাকা পাকিস্তান ও ভারতের বাতাসে ক্ষুদ্র কণিকার মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে যথাক্রমে ৭৪ দশমিক ৩ ও ৭২ দশমিক ৫ মাইক্রোগ্রাম ছিল। এই বায়ুদূষণের জন্য দায়ী করা হয় ঢাকার আশপাশের ইটভাটা, ঢাকার নির্মাণকাজ, যানবাহনে ব্যবহৃত জ্বালানি, বর্জ্য পোড়ানো ইত্যাদি। ঢাকার এই অধঃপতন নিয়ে বছর দেড়েক আগে দৈনিক প্রথম আলো তাদের সম্পাদকীয়তে লিখেছিল, থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনের করা এক তালিকায় নারীদের জন্য সবচেয়ে খারাপ মহানগরের মধ্যে বিশ্বে সপ্তম স্থানে আছে ঢাকা। যৌন সহিংসতা বিবেচনায় নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ; এখানে বাংলাদেশের স্থান চতুর্থ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা জিপজেটের করা পর্যবেক্ষণের ফলাফল অনুযায়ী বিশ্বে সবচেয়ে শারীরিক ও মানসিক চাপের শহরগুলোর মধ্যে সপ্তম স্থানে আছে ঢাকা।

এদিকে শব্দদূষণ যে আমাদের জন্য নীরব ঘাতক হিসেবে নিত্যসঙ্গী হয়ে আছে, সেটা তো বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই জানান দিচ্ছেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা! শব্দ দূষণকে বলা হয় নীরব ঘাতক। আর বিশেষ করে ঢাকা শহরে শব্দ দূষণের বহু উৎস রয়েছে যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। গাড়ির হর্ন, নির্মাণকাজ, মাইকের ব্যবহার, শিল্পকারখানা কোন ক্ষেত্রেই শব্দ দূষণ বিষয়ে যেসব নিয়ম রয়েছে তা মানা হচ্ছে না। শ্রবণজনিত সমস্যায় আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। দেশে ৫৭ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ শ্রবণ সমস্যায় ভুগছেন। এরমধ্যে শব্দদূষণের কারণে শহর এলাকার মানুষের শ্রবণশক্তি বেশি নষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পুরো ঢাকা শহরই এখন শব্দ দূষণের শিকার। ঢাকা শহরে এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে শব্দের মাত্রা স্বাভাবিক আছে। শহরের প্রায় সব এলাকাতেই শব্দ গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ বেশি। এ অবস্থা চলতে থাকলে ২০২১ সালের ডিসেম্বর নাগাদ ঢাকার জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ কোনো-না-কোনো ধরনের বধিরতায় আক্রান্ত হবেন। শব্দের মাত্রার একককে বলা হয় ডেসিবেল। দেশে বধিরতার কারণে বিপুলসংখ্যক কর্মক্ষম মানুষ কর্মহীন জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। অপরদিকে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ কোনো না কোনো মাত্রার শ্রবণ সমস্যায় ভুগছেন। বধিরতা সমস্যার উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে মধ্যকর্ণের প্রদাহ, আঘাতজনিত সমস্যা, উচ্চমাত্রার শব্দের কারণে সৃষ্ট বধিরতা। শব্দদূষণের মধ্যে রয়েছে উচ্চমাত্রার শব্দে হেডফোন দিয়ে গান শোনা, উচ্চমাত্রার হর্ন বাজানো, লাউডস্পিকারের শব্দ ইত্যাদি।

বাংলাদেশের বায়ুমণ্ডলে মিথেন গ্যাসের রহস্যময় ধোঁয়া শনাক্ত করেছে একাধিক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা। গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান জিএইচজিস্যাট গত ১৭ এপ্রিল সংস্থার হুগো স্যাটেলাইটের পর্যবেক্ষণে ঢাকার অদূরে মাতুয়াইল ময়লার ভাগাড় থেকে উদ্ভূত একটি মিথেনের উৎসের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট স্টিফেন জার্মেইন। সংস্থাটির অনুমান, মাতুয়াইল ময়লার ভাগাড় থেকে প্রতিঘণ্টায় ৪০০০ কেজি মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়ে বায়ুমণ্ডলে মিশে যাচ্ছে, যা ১,৯০,০০০ গাড়ির বায়ুদূষণের সমান দূষণ। পৃথিবীর ১২টা মিথেন এমিসন হটস্পটের একটি বাংলাদেশ অনেক আগে থেকেই ছিল, কিন্তু স্রেফ একটা স্থান থেকে এই বিপুল পরিমাণে মিথেন নিঃসরণের উদাহরণ এই মুহূর্তে খুবই বিরল। জীবন আছে এমন জিনিস পচে গিয়ে উৎপন্ন হয় মিথেন গ্যাস।

https://dailysangram.com/post/455016