৯ জুন ২০২১, বুধবার, ২:৫৬

পিরোজপুরে করোনা শনাক্তের হার ৬৬.৬৭ শতাংশ

সংক্রমণ বাড়ছে ৩২ জেলায়

দেশের ৩২ জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী । গত ২৪ ঘণ্টার তুলনায় আগের একদিনের তথ্য পর্যালোচনা করে এ পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৯টি জেলা, ময়মনসিংহের একটি, চট্টগ্রামের ৫টি, রাজশাহীর ৩টি জেলা রয়েছে।

এছাড়া রংপুর বিভাগের ৩টি, খুলনার ৬টি, বরিশালের ৩টি এবং সিলেট বিভাগের ২টি জেলা রয়েছে। গত ৭ জুন দেশের গড় সংক্রমণের হার ছিল ১১ দশমিক ৪৭। একদিনের ব্যবধানে এই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ১২ শতাংশ। সেদিক থেকে একদিনের ব্যবধানে সংক্রমণের হার বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬৫ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণের হার এভাবে ঊধ্বমুখী হওয়া আশংকাজনক। দেশের সামগ্রিক কার্যক্রম গতিশীল রাখতে অবশ্যই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে পদ্ধতি সেই পুরাতন। স্থানীয় পর্যায়ে বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে। আক্রান্তদের আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। যারা অসুস্থ হয়ে পড়বেন তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি কন্টাকট্রেসিং করে তাদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।

রোগতত্ত্ব রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ড. মোশতাক হোসেন যুগান্তরকে বলেন, যেখানে শনাক্তের হার বেশি সেখানে যাতায়াত-চলাচল সীমিত করতে হবে। একইসঙ্গে প্রান্তিক মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

অন্যথায় কোনো বিধিনিষেধ কার্যকর হবে না। এই রোগতত্ত্ববিদ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশপাশি ওই এলাকার শনাক্ত সবাইকে আইসোলেশনে এবং চিকিৎসার আওতায় নিতে হবে। এছাড়া টিকা প্রাপ্যতার ওপর ভিত্তি করে তাদের টিকাদান নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে প্রতি এক লাখ জনসংখ্যায় ১০ জনের বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকলে বা হাসপাতালে রোগী উপচে পড়লে অবশ্যই সেই এলাকার যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, সামগ্রিক কর্মকাণ্ডে বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম যুগান্তরকে বলেন, দেশের যেসব জেলায় বা উপজেলায় করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, সেখানে জরুরি বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। পাশাপাশি ওইসব এলাকায় সুচিকিৎসা নিশ্চিতে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল পাঠানো হচ্ছে। এমনকি অক্সিজেনসহ অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জামও পাঠানোর কাজ চলছে। অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের যেসব জেলায় সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ করা গেছে সেগুলো হলো- ঢাকা মহানগর ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় ছিল সংক্রমণের হার ছিল ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। ফরিদপুর ২৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ২৮ দশমিক ২১ শতাংশ। গাজীপুর ১১ দশমিক ২১ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

গোপালগঞ্জ ১৮ দশমিক ৬০ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। কিশোরগঞ্জ ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ। মাদারীপুর ১০ দশমিক ৩৯ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ। মুন্সীগঞ্জ ১০ দশমিক ১৪ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় ছিল সংক্রমণের হার ছিল ৮ শতাংশ। রাজবাড়ী ২০ দশমিক ৬৫ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ০ শতাংশ। শেরপুরে ১৭ দশমিক ২৪ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ১১ দশমিক ১১ শতাংশ।

রাঙ্গামাটি ১২ দশমিক ১২ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। খাগড়াছড়িতে ১০০ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। লক্ষ্মীপুর ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ০ শতাংশ। কুমিল্লা ৭ দশমিক ১৯ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ০ শতাংশ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৯ দশমিক ২১ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। সিরাজগঞ্জ ১৪ দশমিক ০৪ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ১২ দশমিক ৬১ শতাংশ। বগুড়া ১৪ দশমিক ০৪ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ।

ঠাকুরগাঁও ২৫ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ। দিনাজপুর ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ২০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। গাইবান্ধা ২২ দশমিক ২২ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ১১ দশমিক ১১ শতাংশ।

চুয়াডাঙ্গা ৪৫ দশমিক ১৬ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ২৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। যশোর ৪৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ; ঝিনাইদহ ২৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ৩১ দশমিক ১৪ শতাংশ। খুলনা ৩১ দশমিক ৫২ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ২৬ দশমিক ০৭ শতাংশ। কুষ্টিয়া ২৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ২৪ দশমিক ১৪ শতাংশ।

সাতক্ষীরা ৫৫ দশমিক ০৮ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ৫৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। ভোলা ২৭ দশমিক ২৭ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ৯ দশমিক ০৯ শতাংশ। পিরোজপুর ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ৫৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ঝালকাঠি ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ১৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ। সুনামগঞ্জ ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ২১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। হবিগঞ্জ ১১ দশমিক ১১ শতাংশ; আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/429345