৬ জুন ২০২১, রবিবার, ২:৪১

বিমানে সৌদি যাওয়া যাত্রীদের ক্ষোভ

২২ হাজার টাকার হোটেলে রেখে নেয়া হচ্ছে ৭৮ হাজার ৩০০ টাকা

ড়া করা হোটেলের মান (থ্রি স্টার) এবং খাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। শুধু তাই নয়, এক হাজার রিয়ালে নিম্নমানের হোটেল প্যাকেজে তাদের রাখার ব্যবস্থা করা হলেও তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকেই সাত দিনের কোয়ারেন্টিন ও দু’টি করোনা পরীক্ষার জন্য নেয়া হয়েছে ৭৮ হাজার টাকার বেশি। তাহলে বাকি টাকা কোথায় গেল বলে জানতে চাচ্ছেন তারা?

এ ছাড়া প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে ঘোষিত যে ২৫ হাজার টাকা কোয়ারেন্টিনের জন্য কর্মীদের দেয়ার কথা, সেই টাকাও তারা সেখানে গিয়ে কারো কাছ থেকে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। অপর দিকে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের নির্দেশে কর্মীদের সমস্যা জানতে দু’জন কর্মকর্তা দেখা করে সার্বিক সহযোগিতার চেষ্টা করছেন।

সৌদি আরবের রিয়াদের একটি হোটেলে অবস্থান নেয়া কয়েকজন প্রবাসী শ্রমিককে কোয়ারেন্টিনের জন্য হোটেলে নেয়া হয়। হোটেলের মান খারাপ হওয়ায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে তারা ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভের কথাগুলো তারা বলার চেষ্টা করেন। একই সাথে তারা এ ঘটনার সঠিক বিচারও দাবি করেন বাংলাদেশ সরকারের কাছে।

ফেসবুকে ওঠা এসব অনিয়মের সত্যতা রয়েছে কি না তা জানতে গতকাল শনিবার বিকেলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি টেলিফোন ধরেননি।

ফেসবুক লাইভে দেখা গেছে, জনৈক বাংলাদেশী কর্মী হোটেল থেকে দেয়া একটি খাবারের প্যাকেট হাতে নিয়ে বলছেন, আসসালামু আলাইকুম, ‘স্যার আমরা বাংলাদেশ বিমান অফিস থেকে যখন আসি তখন আমাদের সাথে কথাবার্তা ছিল, আমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে হোটেল বুকিংয়ের জন্য বাংলা টাকা নিয়েছে মোট ৭৮ হাজার ৩১৫ টাকা। সেই হিসাবে আলহামদুলিল্লাহ আমরা এখানে ভালোভাবেই এসেছি। আসার পর আমাদের এমন একটি হোটেলে তুলেছে, যখন আমরা ভেতরে আইস্যা জানতে পারলাম, সাত দিনের জন্য আমাদের এই হোটেলে কন্ট্রাক্ট করা হইছে টোটাল এক হাজার রিয়াল (সৌদি রিয়াল) করে। এয়ারপোর্ট থেকে আনা, দু’টি করোনা টেস্ট, খাবারসহ সব কিছুর প্যাকেজ। এখানকার এক হাজার রিয়াল বাংলায় সর্বোচ্চ ২২ কিংবা ২৩ হাজার টাকার মতো হবে। আমাদের বাকি টাকাটা তাহলে কোথায় গেল ? আর বাংলাদেশ বিমান অফিস থেকে আসার সময় আমাদের বলে দিয়েছে, যাওয়ার পর আমাদের প্রত্যেককে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দেয়া অনুদান ২৫ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। এখন ওই টাকা চাইলে তারা বলতেছে, ২৫ হাজার টাকা তারা দেবে না। আমাদের টাকাগুলো কোথায় গেল, কার পকেটে গেল? এটা আমরা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করতেছি। আমরা এই বাড়তি টাকা কেউ জোগাড় করেছি জমি বিক্রি কইর্যা, কেউ সুদে টাকা নিয়্যা। তারপর আইসি। আর আমাদেরকে হোটেলে যে খাবার দিচ্ছে সেটা আপনারাই দেখেন? এ সময় পেছনে আরো ছয়-সাতজন প্রবাসীকে কথা বলতে শোনা যায়। তারা বলেন, এইটুকু (প্যাকেট) জায়গার মধ্যে কতটুকু খাবার আটে? এতটুকু খাবার দিয়ে কি একজনের হয়? তারা বলেন, এক বেলা আমাদের দু’টি পানি দেয়া হয়। সকাল বেলা দুইটা রুটি দেয় কিন্তু পানি দেয় না? আর রাত্রের খাবার রাত ১টায় দেয়। টাইম টু টাইম খাবার দেয় না। এসব হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা বলে আমরা দায়ী না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা আপনার কাছে দুই হাত জোড় করে হেল্প চাচ্ছি। এ ছাড়া আর কোন রাস্তা নাই। আপনি একটু দেখুন। আমরা অনেক কষ্টে আছি বলে আকুতি জানান তারা। অপর একটি ফেসবুক লাইভে তারা একই তথ্য দিলেও তারা সৌদি আরবের কোথায়, কোন হোটেল থেকে এসব অভিযোগ জানাচ্ছেন তা উল্লেখ করেননি। একইভাবে তারা ঢাকা থেকে কখন ও বিমানের কোন দিনের ফ্লাইটে গেছেন সেই ব্যাপারেও তারা স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে মে মাসের ২৭ তারিখে তারা বিমান অফিসে যাওয়ার কথা তাদের বক্তব্যর মধ্যে রয়েছে। এ ছাড়া তাদের বক্তব্য বলা হয়েছে, আমরা সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. জাবেদ পাটোয়ারী স্যারের সাথে যোগাযোগ করে আমাদের সমস্যার কথা জানালে তিনি মামুনসহ দু’জন দূতাবাসের কর্মকর্তা তাদের কাছে পাঠান। তারা হোটেলে এসে সাক্ষাৎ করে পাঁচ কার্টন পানি দিয়ে যান এবং সমস্যার কথাগুলো উপরে জানাবেন বলে জানান।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/586510/