৫ জুন ২০২১, শনিবার, ২:১১

উপকূলীয় এলাকা রক্ষা করতে বাজেটের অর্থ সঠিক ব্যবহার দরকার

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন জেলার ১৫ লাখ মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। একই সঙ্গে ঝড়ের প্রভাবে এসব জেলার ২৬ হাজার বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। দেশের উপকূলীয় এলাকার নিন্মঞ্চল লবণাক্ত পানিতে প্লাবিত হওয়ায় মানুষ উদ্বাস্তু হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে দিনদিন। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে উপকূলীয় এলাকার ৯১ কিমি বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কয়েক’শ গ্রাম প্লাবিত হয়ে মানুষের ভোগান্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশের ১৬ জেলার ৮২ উপজেলা এবং ১৩ পৌরসভায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস’র প্রভাব পড়ে। আর ঝড়ে মারা গেছেন ৯ জন। গত বৃহস্পতিবার দুর্যোগ কবলিত জেলা ও উপজেলা স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া প্রাথমিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির এই পরিসংখ্যান তৈরি করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর। এদিকে ইয়াসের প্রভাবে মূলত দক্ষিণ উপকূল ও উপকূল-সংলগ্ন ৯টি জেলা বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, বরগুনা, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং চট্টগ্রামের কক্সবাজার ও নোয়াখালীতে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। এর মধ্যে চার জেলায় ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। আর সাত জেলায় প্রায় ৯১ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে প্রায় ৬৮২টি গ্রাম ও ৫০টি চরাঞ্চল। উপরোক্ত ১১ জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), মৎস্য বিভাগ, কৃষি কার্যালয়, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় এবং জেলা প্রশাসন সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জনজীবনে প্রতিনিয়ত সংকট বাড়ছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষগুলো একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষত কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আরেকটির কবলে পড়ে। বেড়িবাঁধ সংস্কারে প্রতিবছর অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে পর্যাপ্ত কাজ হলেও নানান কারণে টেকসই হচ্ছে না। এসব ক্ষেত্রে দুর্নীতিমুক্ত ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয়তার পাশাপাশি এলাকাবাসীর সচেতনতা জরুরি। উপকূলীয় এলাকাকে প্রকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে বাজেটের অর্থ সঠিক ভাবে ব্যবহারের দরকার বলে মনে করেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), মৎস্য বিভাগ, কৃষি কার্যালয়, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় এবং জেলা প্রশাসন সূত্রে প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইয়াসের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাস, ভারী বৃষ্টির সঙ্গে বয়ে যাওয়া ঝড়ো হাওয়ায় বাঁধ, ঘরবাড়ি ভেঙে যায়। ক্ষতির মুখে পড়ে উপকূলের হাজার হাজার মানুষ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইয়াসের প্রভাবে নোয়াখালীতে দুই লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং ১০০টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। পটুয়াখালীর আট উপজেলার পাঁচ লাখ ৫৯ হাজার ৩৬৩ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ জেলায় চার হাজার ২০৯টি বাড়িঘর আংশিক এবং ৪৮৪টি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া পিরোজপুরে এক লাখ আট হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ঝিনাইদহে ৯৪টি বাড়িঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইয়াসে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সাতক্ষীরা জেলায়। এই জেলায় ৯৪ হাজার ৮৫০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সাতক্ষীরার আশাশুনি, দেবহাটা, কালীগঞ্জ, শ্যামনগর উপজেলার পৌনে ছয় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে গেছে। এছাড়াও ছয় হাজার ৭৩৮ হেক্টর মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাগেরহাট জেলায় ২৪ হাজার ৯১৬ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখানে ৬৯০টি ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। বরগুনায় বিভিন্ন উপজেলার ১৭ হাজার ৩২০ জন মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই জেলায় এক হাজার ৮০০টি ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। ভোলায় সাত হাজার ৭৩০টি ঘরবাড়ি আংশিক এবং তিন হাজার ৫৭৯টি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। কক্সবাজারে ২০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং দুই হাজার ৪৭০টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফেনীতে ২০০ বাড়িঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝালকাঠির এক লাখ ৪৯ হাজার মানুষ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন, ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে ৫০টি। খুলনার চার উপজেলায় দুই হাজার ২৪০টি ঘরবাড়ি আংশিক ও সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সাড়ে ছয় হাজার মানুষ।

অন্যদিকে লক্ষ্মীপুরে ২২ হাজার মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন, বরিশালের ১০ উপজেলা এবং ছয় পৌরসভার এক লাখ ২৭ হাজার ১৬২ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, বরিশালে এক হাজার ২০০ ঘরবাড়ি আংশিক ও সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ভোলার বোরহানউদ্দিন, দৌলতখান, লালমোহন, তজুমদ্দিন, চরফ্যাশন, মনপুরায় প্রভাবে পড়েছে ঘূর্ণিঝড়ের। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক লাখ ৬৯ হাজার ২৬০ জন মানুষ। এ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় প্রশাসন থেকে ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক হিসাব পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসনের সব ডিপার্টমেন্ট মিলে ডি-ফরমে চূড়ান্ত হিসাব পাঠাবে। সেই হিসাবটাই মূলত বিবেচনায় নেওয়া হবে।

বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা, মুলাদী, উজিরপুর ও সদরের অন্তত ১২০টি গ্রামে জোয়ারের পানি ছিল। এ জেলায় ইয়াসের প্রভাবে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৬২টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে গেছে শূন্য দশমিক ২২০ কিলোমিটার বাঁধ। আর ৩ দশমিক ৬৬৯ কিলোমিটার বাঁধের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে ১ হাজার ৭২৮টি ঘের ও পুকুরের মাছ। বাঁধের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে বরিশাল পাউবো আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম সরদার গণমাধ্যমকে বলেন, এটা প্রাথমিক হিসাব। পূর্ণাঙ্গ হিসাব পেতে আরও কয়েক দিন লাগবে। মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তারা কাজ করছেন।

পিরোজপুরে ৩৭টি ইউনিয়নের ১০০টি গ্রামে এখনো জোয়ারের পানি রয়ে গেছে। জেলার ১৬৭ হেক্টরে আউশ, ৭ হাজার ৩১৮ হেক্টরে আউশ বীজতলা পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। জোয়ারের পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে ২ হাজার ১৫৭টি পুকুর ও ঘের। ভেঙে গেছে ৭৮০ মিটার বাঁধ, আর ক্ষতি হয়েছে ৬ কিলোমিটার বাঁধের। পটুয়াখালীতে ২২৩টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তিন কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে গেছে, আর ৪১ কিলোমিটার বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। ঝালকাঠির পাঁচ ইউনিয়নের ১০টি গ্রামে জোয়ারের পানি গতকাল পর্যন্ত ছিল। প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, জেলার ৩ দশমিক ৭৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেসে গেছে ২ হাজার ১৩৯টি পুকুর ও খামারের মাছ।

ঝালকাঠি পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ইয়াসের প্রভাবে জেলার বেড়িবাঁধগুলোর ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়ামাত্র কাজ শুরু করা হবে। অধিক উচ্চতার জোয়ারে বরগুনা জেলায় ১ হাজার ২৪৯টি মাছের ঘের ও পুকুর তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে ৬০ মেট্রিক টন মাছ। ১ হাজার ২৬৩ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।

বরগুনার বলেশ্বর নদতীরের পশ্চিম কাঁঠালতলী এলাকার বাসিন্দা লাইলী বেগম ও আয়শা আক্তার জানান, তিন দিন আগে সর্বশেষ রান্না করেছিলেন। ছেলেমেয়েদের মুখে সামান্য কিছু শুকনা খাবার ছাড়া গত তিন দিনে কিছু দিতে পারেননি। ইয়াসের পর জোয়ারে বাগেরহাটের ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলায় বিভিন্ন ফসলের ১৬৫ হেক্টর জমি ও প্রায় ৩ হাজার মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মূল বেড়িবাঁধের ক্ষতি না হলেও জেলার পাঁচ উপজেলায় প্রায় তিন কিলোমিটার গ্রামীণ বাঁধের ক্ষতি হয়েছে।

ভোলায় ৩৩টি ইউনিয়নের ৫০টি চরাঞ্চল, বাঁধের বাইরের লক্ষাধিক মানুষ প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারে পানিতে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলার চরফ্যাশন উপজেলার কুকরি-মুকরি ইউনিয়নের চরপাতিলা মৌজার বাসিন্দা হারুন অর রশিদের ঘরটি পানিতে ডুবে গেছে। আশপাশে কোনো শুকনো জায়গা নেই। হারুন অর রশিদ বলেন, জোয়ার-জলোচ্ছ্বাসে তাঁর ৫০ হাজার টাকার জাল, পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। লোনাপানিতে পুকুরের মাছ মরে গেছে। লোনাপানিতে নষ্ট হয়েছে শসাখেত। রান্নাঘরের চুলা ডুবে গেছে। শুকনা খাবার খেয়ে কোনো রকমে দিন কাটছে।
খুলনার চার উপজেলার ৩৭টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় সাড়ে ৬ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষকে পুনর্বাসন করার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত শুকনা খাবার ও বাঁধ সংস্কারের জন্য টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সাতক্ষীরার ১২টি ইউনিয়নের ২১টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। এ সময় ৩৫ হাজার পরিবারের দুই লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। জেলায় ৩ হাজার ৬০০ হেক্টর চিংড়ি ও মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২১টি স্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। আর ২০ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কক্সবাজারে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে ১২১টি গ্রাম। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২ হাজার ৫৭০টি ঘরবাড়ি। এসব বাড়ির ৩ হাজারের বেশি মানুষ গতকাল পর্যন্ত ঘরে ফিরতে পারেনি। বৃষ্টিতে ২ হাজার ১০০ টন লবণ ভেসে গেছে। ১২০টির বেশি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়েছে বিপুল পরিমাণ শুঁটকি মাছ। এদিকে কুতুবদিয়া ও মহেশখালীতে ১১টি অংশে ১৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের ক্ষতি হয়েছে। এদিকে নোয়াখালীতে ১১টি পয়েন্টে প্রায় ১০০ মিটার বাঁধ ভেঙে গেছে। তিনটি ইউনিয়নে কিছু বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলীয় অঞ্চলের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, সরকার জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্ভাব্য প্রভাব নিরসনে সরকার ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০ নামে একশ বছরের কৌশল প্রণয়ন করেছে। সরকার উপকূল জুড়ে ৪ হাজার ২৯১ ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেছে। এছাড়া দেশের বন্যার ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে অতিরিক্ত ৫২৩টি বন্যার আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদফতর কর্তৃক এডাপটেশন ফান্ডের অর্থায়নে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সমুদ্র তীরবর্তী ছোট দ্বীপগুলোতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় ভূমিকা রাখবে।

পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানছে। যে কারণে ওই অঞ্চলের মানুষ ঝুঁকিতে আছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ দ্রুততার সঙ্গে চলছে। স্থানীয় জনগণের সহায়তায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বাঁধ সংস্কারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য গৃহীত মেগা প্রকল্পগুলো অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। যার মধ্যে খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলের ৩ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকার তিনটি প্রকল্প চলতি সপ্তাহে একনেক বৈঠকে পাস হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ কিংবা সংস্কারের ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতার কথা উল্লেখ করেন সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার। তিনি বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষগুলো একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষত কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আরেকটির কবলে পড়ে। বেড়িবাঁধ সংস্কারে প্রতিবছর অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে পর্যাপ্ত কাজ হলেও নানান কারণে টেকসই হচ্ছে না। এসব ক্ষেত্রে দুর্নীতিমুক্ত ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয়তার পাশাপাশি এলাকাবাসীর সচেতনতা জরুরি।

https://dailysangram.com/post/454472