৩ এপ্রিল ২০১৭, সোমবার, ১১:২৪

আইটি ফার্মগুলোর বিদেশী অর্থ পাঠানোর নীতিমালা শিথিল

মুদ্রাপাচার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা

আইটি ফার্মগুলোর বিদেশে অর্থ পাঠানোর নীতিমালা শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগে একটি ফার্ম তাদের বিদেশে কাজের জন্য বছরে ২৫ হাজার ডলার পঠাতে পারত। এখন তা ৫ হাজার ডলার বাড়িয়ে ৩০ হাজার ডলার করা হয়েছে। একবারে তাদের কাজের জন্য আড়াই হাজার ডলার পাঠাতে পারত, এখন তা সাড়ে তিন হাজার ডলার বাড়িয়ে ছয় হাজার ডলার করা হয়েছে। একই সাথে রফতানির মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা নিজেদের কাছে ধরে রাখারও সীমা বাড়ানো হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এসংক্রান্ত পৃথক চারটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। গতকালই তা বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের জন্য অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীকে অবহিত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নানাভাবে দেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হয়ে যাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইলিসিটির (জিএফআই) এক প্রতিবেদন থেকে দেখা গেছে, শুধু ২০১৩ সালেই দেশ থেকে পাচার হয়েছে প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকা মূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা। বৈদেশিক মুদ্রার বিভিন্ন নীতিমালা শিথিলের কারণে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল বৈদেশিক মুদ্রা নীতিমালা থেকে জারিকৃত ১৩ নং সার্কুলারে বলা হয়েছে, আগে বছরে বিভিন্ন আইটি ও সফটওয়্যার ফার্ম তাদের বিদেশে বিভিন্ন কাজের বিল পরিশোধের জন্য ২৫ হাজার ডলার পাঠাতে পারত। কিন্তু সফটওয়্যার ফার্মগুলোর বিভিন্ন কাজের পরিধি বেড়ে যাওয়ায় বছরে তাদের অতিরিক্ত ব্যয় হয়। এ ব্যয় নির্বাহের জন্য বছরে পাঁচ হাজার ডলার বাড়িয়ে ৩০ হাজার ডলার করা হয়েছে।
এ দিকে গতকাল বৈদেশিক মুদ্রা নীতিমালা থেকে জারিকৃত ১৫ নং সার্কুলারে বলা হয়েছে, আগে আইটি খাতের বিভিন্ন পণ্য রফতানি থেকে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার ৬০ শতাংশ রফতানিকারকেরা নিজেদের বৈদেশিক মুদ্রা অ্যাকাউন্টে রাখতে পারতেন। কিন্তু গতকালের সার্কুলারে তা আরো বাড়িয়ে ৭০ শতাংশ করা হয়।
অপর দিকে একই বিভাগ থেকে জারিকৃত ১৪ নং সার্কুলারে বলা হয়েছে, আগে বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপসহ বিভিন্ন ছোট ছোট পণ্য আনার জন্য বছরে ৩০০ ডলার পাঠাতে পারত। এখন তা ভার্চুয়াল কার্ড যেমনÑ ডেবিড কার্ড, ক্রেডিট কার্ড অথবা প্রিপেইড কার্ডের মাধ্যমে পাঠানোর অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
গতকাল একই বিভাগ থেকে জারিকৃত ১২ নং সার্কুলারে বলা হয়েছে, আগে ছোট ছোট আইটি ফার্মগুলো যে পরিমাণ রেমিট্যান্স আনতো তা অনেক ক্ষেত্রেই ছোট অঙ্কের হওয়ায় ব্যাংকগুলো তা নগদায়ন করতে অনিহা দেখাতো। গতকালের সার্কুলারে যেকোনো অঙ্কের আইটি সংক্রান্ত রেমিট্যান্স নগদায়নের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্টদের কেওয়াইসি যাচাই-বাছাই করে, প্রয়োজনে মেইলে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/209125