১২ মে ২০২১, বুধবার, ২:৫২

ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট

কঠিন বিপদ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা

ঈদে ঘরমুখো মানুষ লকডাউনের সামান্য শিথিলতার সুযোগ নিয়ে ব্যাপকহারে যাতায়াত করছেন। দলবেঁধে গাদাগাদি করে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাচ্ছেন। কোনো স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছেন না তারা। ফলে গ্রামগঞ্জে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ধরন ছড়িয়ে পড়ার বেশ আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে সামনে কঠিন বিপদ দেখছেন তারা। এইরকম ঝুঁকিপূর্ণ সময়ে এই ভাইরাস দেহে নিয়ে ঈদে ঘরমুখো মানুষ যদি গ্রামে চলাফেরা করেন, তাহলে গ্রামে থাকা পরিবার পরিজনসহ গ্রামবাসী গণহারে আক্রান্ত হতে পারেন বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি একে আত্মহত্যার শামিল বলেও মন্তব্য করেছেন।

জাতীয় পরামর্শক কমিটির অন্যতম সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ঈদে মানুষ শহর থেকে গ্রামে গিয়ে ভাইরাসটি ছড়িয়ে দেয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ জন্য ১৪ দিন অপেক্ষা করতে হবে।

আর ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়লে সামনে আমাদের জন্য মহাবিপদ। ভারত তাদের সংক্রমণের পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়েই হিমশিম খাচ্ছেন। আমাদেরকে তাদের থেকে শিক্ষা নিয়ে সতর্কভাবে আগাতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ভ্যাকসিন নিলেও অন্যের সুরক্ষার জন্য মাস্ক পরতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ঘন ঘন সাবান পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। মানুষকে বেপরোয়া চলাফেরা না করার পরামর্শ দেন এই ভাইরোলজিস্ট। ৯৯ ভাগ নয়, সবার জন্য শত ভাগ মাস্ক পরা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর)’র সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং বর্তমানে সংস্থাটির উপদেষ্টা ডা. মুস্তাক হোসেন এই বিষয়ে মানবজমিনকে বলেন, মানুষ যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে গ্রামের দিকে ছুটছেন তাতে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট না এলেও সংক্রমণ ব্যাপকহারে ছড়াবে। এতে বিপদ ডেকে আনবে। আর যদি ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট থাকে তাহলে সংক্রমণ আরো দ্রুত ছড়াবে। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে যাবে। তাই মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পালন করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বাজায় রাখতে হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ মহামারি করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ধরন বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে যাবে বলে সতর্ক করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই ভ্যারিয়েন্টটি খুবই ভয়াবহ। এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত একজন থেকে অল্প সময়ের মধ্যে ৪০০ জন আক্রান্ত হতে পারে। ভারতের ভ্যারিয়েন্টটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় ভ্যাকসিন নেয়া, প্রয়োজনে দুটি মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

সোমবার এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক মন্তব্য করে বলেছেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষ লকডাউনের সামান্য শিথিলতার সুযোগ নিয়ে যাতায়াত করে সুইসাইড সিদ্ধান্তের শামিল হচ্ছেন। এইরকম ক্রিটিক্যাল সময়ে এই ভাইরাস দেহে নিয়ে ঈদে ঘরমুখো মানুষ যদি গ্রামে চলে ফেরা করেন, তাহলে গ্রামে থাকা পরিবার পরিজনসহ গ্রামবাসী গণহারে আক্রান্ত হতে পারেন বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন।

https://mzamin.com/article.php?mzamin=273869&cat=2