৭ মে ২০২১, শুক্রবার, ৭:২৫

যে কারণে রাবিতে তুলকালাম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভিসি অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান তার মেয়াদের শেষদিনে এসে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও মহানগর ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ১৪১ জনকে অ্যাডহকে নিয়োগ নানা বিতর্ক জন্ম দিয়ে পুলিশ পাহারায় বিদায় নিয়েছেন। বিতর্কিত নিয়োগ শেষে গত বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি ভিসি’র বাসভবন ত্যাগ করেন। এ সময় তার গাড়ির সামনে ও পেছনে ৩টি পুলিশের গাড়ি ছিল। ভিসি অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরে বিশ্ববিদালয় হাউজিং সোসাইটিতে (বিহাস) তার বাসায় উঠেছেন।

এর আগে এই নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানানোয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালামকে অব্যাহতি দেন ভিসি। তার স্থলে পরিষদ সেকশনের সহকারী রেজিস্ট্রার মামুন-উর-রশিদকে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দিয়ে এই নিয়োগ সম্পন্ন করেন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মামুন-উর-রশিদ স্বাক্ষরে ৯ জন শিক্ষক, ২৩ জন সেকশন অফিসার, ২৪ সহায়ক কর্মচারী এবং ৮৫ জন উচ্চ ও নিম্ন সহকারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

অব্যাহতির বিষয়ে জানতে চাইলে সদ্য সাবেক রেজিস্ট্রার আব্দুস সালাম বলেন, আমি এসব ব্যাপারে কিছুই জানি না। আমাকে নানাভাবে অনৈতিক চাপ প্রদান করা হয়েছিল। তাই আমি গত দুইদিন ধরে আত্মগোপনে আছি।

রেজিস্ট্রারকে অব্যাহতি ও নিয়োগ প্রসঙ্গে ভিসি এম আব্দুস সোবহান বলেন, রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেয়া হয়নি, এটা মিথ্যা কথা।

অ্যাডহকে নিয়োগের বিষয়টি আপনারা পরে জানতে পারবেন। তিনি বলেন, রাত ১২টা পর্যন্ত আমার নিয়োগ আছে। তার আগেই সরকারি বাড়ি ছেড়েছি। আমি পুলিশি পাহারা চাইনি, তারাই দিয়েছে। তবে তার সময়ে শত বির্তকের পরও নিজেকে সফল দাবি করে বলেন, আমি মনে করি সফলভাবে দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি। এই চেয়ারটি অনেক চ্যালেঞ্জের। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই কাজ করতে হয়।

২০১৭ সালের ৭ই মে দ্বিতীয় মেয়াদে ভিসি হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। গতকাল ৬ই মে তার শেষ কার্যদিবস ছিল। শেষদিন বিভিন্ন পদে ১৪১ জনকে অ্যাডহকে নিয়োগ দিয়ে গেছেন তিনি।

এদিকে সকাল থেকেই প্যারিস রোড, প্রশাসন ভবন, শহীদুল্লা কলা ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, চাকরি প্রত্যাশী সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান করছিলেন। সকাল থেকে সবার মুখে মুখে অ্যাডহকে নিয়োগের কথা ছড়িয়ে পড়ে। দুপুর ১২টার দিকে মহানগর ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী শেখ রাসেল স্কুলের মাঠ থেকে প্যারিস রোডে শোডাউন দিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে আসেন। এরপর তারা প্রশাসন ভবনের পাশে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে অবস্থান নেন। এ সময় সেখানে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি প্রত্যাশী সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতাকর্মী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, মাস্টার রোলের কর্মচারীর মুখোমুখি অবস্থায় চলে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রথমে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সেকশন অফিসার মাসুদের ওপরও হামলা চালান। পরে রাবি ছাত্রলীগ এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা হয়। এ সময় রাবি ছাত্রলীগ সংগঠিত হয়ে ধাওয়া করলে মহানগর ছাত্রলীগেরর সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে মহানগর ছাত্রলীগ পালিয়ে যায়।

https://mzamin.com/article.php?mzamin=273198&cat=2