২ এপ্রিল ২০১৭, রবিবার, ১০:৫০

আমদানি রফতানির ফারাক ৩০ হাজার কোটি টাকা ॥ এলসি বেড়েছে ২৩ ভাগ

আমদানি রফতানির ফারাকে বিরূপ প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতে। অর্থবছরের প্রথমার্ধে আমদানি রফতানির ফারাক ধরা পড়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকার উপরে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে আমদানি, যার প্রভাব পড়েছে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাব ভারসাম্যে। আমদানি ব্যয়ের চেয়ে রফতানি আয় কম হওয়ায় লেনদেন ভারসাম্য নেতিবাচক হয়ে পড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে এক হাজার ৭২২ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। একই সময়ে পণ্য রফতানি থেকে আয় হয়েছে মাত্র এক হাজার ৩৩৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ফলে পাঁচ মাসের হিসাবে সামগ্রিক পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩৮৮ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশী টাকায় ৩০ হাজার ৬৫২ কোটি। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে আমদানির এ হার প্রায় ২৩ শতাংশ বেশি।
এদিকে সরকারের দাবি, দেশে পদ্মা সেতু, ফ্লাইওভার, মেট্রোরেলসহ বড় বড় অবকাঠামোগত উন্নয়ন চলছে। এসবের নির্মাণ সামগ্রীর আমদানিও বেড়ে গেছে, যার প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক আমদানির ওপর। নিশ্চতভাবে এর প্রভাব পড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও দেশের লেনদেন ভারসাম্যের ওপর। বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) বেশকিছু দিন ধরে বড় উদ্বৃত্ত থাকলেও শেষ অবধি তা ঘাটতিতে পড়েছে।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন জানান, দেশে এখন কয়েকটি বড় প্রকল্পের কাজ চলছে। সেসব প্রকল্পে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানি করতে হচ্ছে। বিশেষ করে প্রকল্পের দ্রুত উন্নয়নের লক্ষ্যে বাজেট পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের জন্য মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি খাতে ব্যয় বেড়ে গেছে। একইভাবে আইআরসি সার্টিফিকেট অনুযায়ী বেসরকারি পর্যায়ে শিল্পের কাঁচামাল এবং মূলধনী যন্ত্রপাতি কেনার হারও বেড়েছে। এ কারণে বাণিজ্য ঘাটতি সাময়িক একটু বেশি হতে পারে। তবে আমি মনে করি এ নিয়ে শংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। দেশে চাহিদা রয়েছে বলেই আমদানি বেশি হচ্ছে।
এদিকে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যেও। কারণ নিয়মিত আমদানি-রফতানিসহ অন্যান্য আয়-ব্যয় চলতি হিসাবের অর্ন্তভুক্ত হয়। এ হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হল, নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। অর্থাৎ অর্থবছরের প্রথম দিকে আমদানি পরিস্থিতি দেশকে একটা উদ্বেগজনক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

http://www.dailysangram.com/post/278177-