৩ মে ২০২১, সোমবার, ২:২৭

করোনায় ৬৯ জনের মৃত্যু

ঈদ কেনাকাটায় স্বাস্থ্যবিধিকে অবজ্ঞা

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরো ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৫৭৯ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৫৯ জন। সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হলেন ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৪৩ জন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ওদিকে ঈদের কেনাকাটায় মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। রাজধানীর বিপণি বিতানগুলোতে নেমেছে ক্রেতাদের ঢল।

ঈদের বাকি এখনো কয়েক দিন। এরই মধ্যে বাড়ছে ঈদের কেনাকাটা। গ্রীষ্মের প্রখর রোদ আর প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভীতিকে উপেক্ষা করে রাজধানীর বিপণি বিতানগুলোতে নেমেছে ক্রেতাদের ঢল।

চলছে কেনাকাটার ধুম। ফুটপাথ থেকে শুরু করে ছোট বড় শপিং মল, বিপণি বিতান ও মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়। সর্বত্রই যেন উৎসবের আমেজ। কেনাকাটায় ধুম পড়লেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মানা হচ্ছে না করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি। সামাজিক কিংবা শারীরিক দূরত্বের কোথাও বালাই নেই। যেন সবাই ভুলতে বসেছে করোনার কথা।

ঈদের কেনাকাটার প্রভাব পড়েছে রাজধানীর সড়কগুলোতেও। বাড়ছে ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ। এতে বিভিন্ন এলাকায় মূল সড়কে তৈরি হয়েছে দীর্ঘ যানজট। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার শপিং মল ও মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, সর্বত্রই ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। মার্কেটগুলোর প্রবেশ মুখে মানুষের দীর্ঘ লাইন। ভেতরে লোকে লোকারণ্য। কোথাও কোথাও তিল পরিমাণ ঠাঁই নেই। দোকানগুলোর ভেতরে দাঁড়ানোর স্থান না পেয়ে অনেকেই বাইরে অপেক্ষা করছেন। মাস্ক পরার প্রবণতা বাড়লেও শারীরিক দূরত্ব নেই। দোকানগুলোতে নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহার। একই পণ্য একাধিক ক্রেতার সংস্পর্শে আসছে। এতে কেউ করোনার জীবাণু বহন করলে তা ছড়িয়ে পড়তে পারে অন্য ক্রেতাদের মধ্যে। এ ছাড়া ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলক বেশি হওয়ায় অনেকেই কেনাকাটা করতে এসে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। আবার অনেকেই মার্কেটে প্রবেশ করতে না পেরে বাইরের ফুটপাথ থেকে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে।

এদিকে মাস্ক পরা নিশ্চিত হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি রাজধানীর মৌচাক মার্কেটে। সরজমিন দেখা যায়, পোশাক, জুতা-স্যান্ডেল, কসমেটিকের দোকানে উপচে পড়া ভিড়। পুরুষের তুলনায় নারী ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশ লক্ষণীয়। পছন্দের জিনিসপত্র কিনতে ঘুরছেন এক দোকান থেকে অন্য দোকানে। অনেকেই পছন্দের জিনিস কিনতে এসে স্বাস্থ্যবিধি ভুলতে বসেছে। সরকারের বেঁধে দেয়া বিধিনিষেধের তোয়াক্কা করছেন না ক্রেতা ও বিক্রেতারা। যে যেভাবে পারছেন ভিড় ঠেলে কেনাকাটা সারছেন।

বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের কেনাকাটা ধীরে ধীরে বাড়ছে। আশেপাশের এলাকার ক্রেতারা আপাতত ভিড় করছেন। গণপরিবহন চালু হলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ক্রেতাদের চাপ আরো বাড়বে। তবে অন্যবছরের তুলনায় এখনো সেভাবে বিক্রি হচ্ছে না। অনেকেই দেখতে আসছে। একজন ক্রেতার সঙ্গে আসছেন একাধিক ব্যক্তি। এতে ভিড় বেশি দেখা যায়। তবে মার্কেটের দক্ষিণ পাশের ফুটপাথের খোলা মার্কেটে বেশি বেচাবিক্রি হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে তারা বলেন, সরকারের বিধিনিষেধ সবাইকে মানতে হবে। তবে শপিং করতে আসা ক্রেতারা এসব বিধিনিষেধ যদি না মানে আমাদের কিছু করার নেই। আমাদের প্রতিনিয়ত ক্রেতাদের সঙ্গে থাকতে হয়। এতে আমরা নিজেদের অজান্তেই স্বাস্থ্যবিধি ভুলে যাই।
মরিয়ম নামের এক বিক্রেতা বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে নতুন নতুন আইটেমের পোশাক সাজানো হয়েছে। আমার দোকানে নারী ক্রেতার সংখ্যা বেশি। স্কার্ফ, হিজাব, সালোয়ার-কামিজ, থ্রি-পিসসহ নানা ধরনের শাড়ি বেশি বিক্রি হচ্ছে। দিন দিন বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে। পোশাক বিক্রেতা মো. আলাউদ্দিন বলেন, বেচাবিক্রি ভালো। কাস্টমারের চাপ বাড়ছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মানা হচ্ছে না। আমরা যতটুকু সম্ভব মেনে চলার চেষ্টা করছি। আশা করি ঈদের ২/৩ দিন আগে আরো বেশি বিক্রি হবে।

এদিকে সরজমিন দেখা গেছে, ঈদের বেচাবিক্রির ধুম পড়েছে বসুন্ধরা সিটি, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, গুলিস্তান ও মিরপুরসহ আশেপাশের এলাকাগুলোয়। দীর্ঘদিন মার্কেট ও শপিংমল বন্ধ থাকায় এখন এসব এলাকায় উপচে পড়া ভিড় দেখা দিয়েছে। এতে খুশি বিক্রেতারা।

https://mzamin.com/article.php?mzamin=272627&cat=2