১৭ এপ্রিল ২০২১, শনিবার, ৩:০৫

অন্য দৃষ্টি

সাংবাদিকতার অস্তিত্বের সঙ্কট

ডিজিটাল মার্কেটের বিস্তার নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান জেনিথের হিসাবে দেখা যাচ্ছে, বিজ্ঞাপনের বাজারে বড় পরিবর্তন এসেছে। করোনা মহামারীর বছর ২০২০ সালে বিশ্বের সব বিজ্ঞাপনের ৫২ শতাংশ ডিজিটাল ফর্মেটে চলে গেছে। ৬২০ বিলিয়ন ডলারের বিজ্ঞাপন পেয়েছে তারা। মূলত সার্চ ইঞ্জিন গুগল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এই বিপুল অঙ্কের অর্থের ভাগিদার হয়েছে। বিজ্ঞাপনের বাজারে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর একচেটিয়া আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হতে যাচ্ছে এমন সঙ্কেত আগে থেকে পাওয়া যাচ্ছিল। করোনা সেটাই ত্বরান্বিত করেছে। ২০২৩ সাল নাগাদ মোট বিজ্ঞাপনের ৫৮ শতাংশ ডিজিটাল ফর্মেটে চলে যাবে।

ব্যবহারকারীদের পছন্দ রুচি এগুলো সহজে জেনে যায় ফেসবুক। একজন ব্যক্তি যখন একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলেন তখন থেকেই নিজের তথ্য দিতে শুরু করেন। সামাজিক মাধ্যমের সদস্য হওয়ার সাথে সাথে তিনি এক নতুন জগতের অন্তর্ভুক্ত হন। এখানে হাজারো বিষয়-আশয়। ক্রমেই তিনি তার পছন্দ ও রুচির প্রয়োগ ঘটাতে থাকেন। অন্য দিকে ফেসবুক ওই ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবসা বাড়াতে সুচারুরূপে কাজে লাগায়। তাদের ব্যবহৃত রাডার পণ্যের ভোক্তা খুঁজে নেয়। আর উৎপাদকদের আমন্ত্রণ জানায় নির্ধারিত ফ্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপন দিতে। এ কাজে তাদের অন্যতম সহযোগী স্থানীয় সংবাদ প্রতিষ্ঠানগুলোর কনটেন্ট।

গুগল ও ফেসবুকে খবরের শিরোনাম ও সারাংশ দেখে সন্তুষ্ট থাকছে দর্শক শ্রোতা ও পাঠক। চাইলে তারা লিঙ্ক ব্যবহার করে বিস্তারিত খবরও জানতে পারেন। তবে জরিপে দেখা যাচ্ছে, সংবাদ পাঠকদের অর্ধেক গুগল ও ফেসবুকের পাওয়া সংবাদ শিরোনাম ও সারাংশ পেয়ে সন্তুষ্ট। সংবাদমাধ্যমগুলোর কষ্টের ফসলের সর্বোচ্চ সুফল নিয়ে নিচ্ছে গুগল ফেসবুকসহ ডিজিটাল প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা এমন এক সময় এ ধরনের সুবিধা অধিকহারে নিয়ে নিচ্ছে যখন সংবাদ প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমান্বয়ে পাঠক হারাচ্ছে। টেলিভিশন চ্যানেলের দর্শক শ্রোতা কমছে হু হু করে। ছাপা পত্রিকার কাটতিও কমছে দ্রুত। আর বিজ্ঞাপনদাতারা ঝুঁকছেন ডিজিটাল ফর্মেটে। কারণ ডিজিটাল মাধ্যম তাদের পণ্যের কাটতি বাড়াতে সক্ষম।
করোনা মহামারী এসে সংবাদ প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আরো ভয়াবহ আঘাত হানল। টিভি চ্যানেলগুলোকে দেখা যাচ্ছে ইউটিউব ও ফেসবুকের ওপর ভর করে কিছু আয় করার চেষ্টা করতে। একটি টেলিভিশন চালানোর জন্য যতটা আয় দরকার এই ধরনের প্রচেষ্টা থেকে তার খুব সামান্য অংশ ওঠানো যায়। টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেয়ার আগ্রহে একবারে ভাটা পড়েছে বিজ্ঞাপনদাতাদের। আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে টিভি চ্যানেলের সংখ্যা অত্যধিক বেড়েছে। একই সময় ডিজিটাল ফর্মেটের ব্যবহার বেড়েছে। এ অবস্থায় ১৫ বছরের ব্যবধানে টিভি বিজ্ঞাপন রেট শতগুণ কমে গেছে। আমাদের দেশের টিভি চ্যানেলগুলোর অবস্থা এককথায় শোচনীয়। বেশির ভাগ টিভি চ্যানেল তদের কর্মীদের বেতন দিতে পারছে না। নিয়মিত জনবল ছাঁটাই করে স্টাফদের বেতন আটকে দিয়ে তারা কোনো মতে টিকে আছে।

পত্রিকাগুলোর অবস্থা তার চেয়েও খারাপ। টিভি চ্যানেল ইউটিউব ও ফেসবুক ব্যবহার করে কিছুটা আয় করতে পারলেও বেশির ভাগ পত্রিকা সেটাও পারে না। হাতেগোনা কয়েকটি পত্রিকা ছাড়া বাংলাদেশের বেশির ভাগ পত্রিকা এখন রুগ্ণ। অসংখ্য সাংবাদিক ছাঁটাই হয়ে গেছেন। ঠিকমতো বেতন পাচ্ছেন না। কোনো উপায় না থাকায় কেবল পরিচয় সঙ্কট ঘোচানোর জন্য পত্রিকায় চাকরি করছেন অনেক সাংবাদিক।
গত বছর করোনা প্রথম আঘাত হানার পরপরই সংবাদপত্রের অবস্থা নিয়ে বাংলাদেশে একটি জরিপ হয়। বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক (বিআইজেএন) নামে একটি প্রতিষ্ঠান এ জরিপ চালায়। জুনের ২৩ থেকে ২ জুলাইয়ের মধ্যে পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আঞ্চলিক ও স্থানীয় পত্রিকাগুলোর ৬০ শতাংশ করোনার প্রথম ধাক্কায় বন্ধ হয়ে যায়। এসব পত্রিকার সাংবাদিকরা সদলে চাকরি হারান। জাতীয় সংবাদপত্র ও টেলিভিশন নিয়ে তেমন কোনো জরিপ এখনো দেখা যায়নি। জাতীয়পর্যায়ে পরিচিত পত্রিকা ও টিভি চ্যানেল কোনোটি বন্ধ না হলেও তারা যে অস্তিত্বের সঙ্কটে ভুগছে তাতে সন্দেহ নেই।

গত বছর সরকার প্রথম যখন লকডাউন দেয় তখন এক ধাক্কায় জাতীয় সংবাদপত্রের কাটতি দুই তৃতীয়াংশ কমে যায়। কিছু কিছু পত্রিকা শুধু ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য ছেপেছে। কিছু পত্রিকার ক্ষেত্রে দেখা গেছে, তারা ছাপা সংস্করণ বন্ধ করে অনলাইন সংস্করণে চলে গেছে। সে সময় অনেক গ্রাহক ভীত হয়ে বাসায় পত্রিকা রাখা বন্ধ করে দেন। যদিও পত্রিকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ানোর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অন্য দিকে বিজ্ঞাপনও একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। করোনাকালে এই দ্বিমুখী চাপের মধ্যে পড়ে দেশের সংবাদপত্রগুলো।

করোনার পর সরকার ধাপে ধাপে প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছে। গরিব অসহায় ছাড়াও অস্তিত্বের সঙ্কটে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্যও প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে সরকার ২৩টি নানা ধরনের প্রণোদনা কর্মসূচি দিয়েছে। এ জন্য বরাদ্দ দিয়েছে এক লাখ ২৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা। বর্তমান সরকারের অন্যতম বড় সহযোগী দেশের মিডিয়া। বিগত একযুগে সংঘটিত প্রায় প্রত্যেকটি সঙ্কটে মিডিয়া সরকারের সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। সাংবাদিকদের মধ্যে অনেকে রয়েছেন সরকারের ঘোরতর সমর্থক। তারা সরকারের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে সমান্তরাল ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু দুঃসময়ে সরকার এ দেশের সংবাদমাধ্যমের পাশে দাঁড়ায়নি। তবে সরকার যদি ডিজিটাল কোম্পানিগুলোকে আইন-কানুনের আওতায় আনে তাহলে সংবাদ প্রতিষ্ঠানগুলো টিকে থাকার লড়াইয়ে জোর পেতে পারে।

বাংলাদেশে গুগল ও ফেসবুকের ব্যবসা জমজমাট। জরিপ থেকে জানা যায়, সারা বিশ্বে এ দুটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা যে দেশগুলোতে বেশি বাড়ছে বাংলাদেশে তার মধ্যে দ্বিতীয়। গত বছর এ দু’টি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে বিজ্ঞাপন বাবদ আয় করেছে ১১ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা। এ বিপুল আয় করতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোনো ধরনের শুল্ক বা মাসুল দিতে হয়নি। তাদের রাষ্ট্রীয় কোনো আইন-কানুন মানতে হয় না। সরকার চাইলে এ প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইনের আওতায় এনে দেশের সংবাদমাধ্যমের জন্য একটা আয়ের পথ করে দিতে পারে।

প্রতিষ্ঠান দু’টি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কনটেন্ট ব্যবহার করে। এ জন্য তাদের উপযুক্ত পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হয় না। তারা সামান্য অর্থ দেয় নিজেদের খুশিমতো। কোনো ধরনের আইন-কানুন না থাকায় তারা একচেটিয়া ব্যবসা করতে পারছে। অথচ প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সরকারের রয়েছে ভালো সম্পর্ক। অভিযোগ উঠেছে, ডিজিটাল প্রতিষ্ঠান দুটো সরকারের মনরক্ষা করে চলে। বিশেষ করে ফেসবুক সরকারের ইশারায় ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। জনপ্রিয় ফেসবুকারদের অ্যাকাউন্ট জব্দ, বন্ধ করে রাখা কিংবা অন্য কোনোভাবে অসুবিধা তৈরি করে থাকে। অন্য দিকে তারা অনেকটা বিনাপয়সায় সংবাদ প্রতিষ্ঠানের কনটেন্ট ব্যবহার করে দেশীয় ও বিদেশী বিজ্ঞাপন নিয়ে কামিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বিপুল অর্থ।

সরকার ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে গুগল ও ফেসবুকের কাছে জানতে চায় তারা এ দেশে বিজ্ঞাপন থেকে কত আয় করে। প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের আহ্বানে সাড়া দেয়নি বলে জানা যাচ্ছে। তবে ফেসবুক নামমাত্র এক কোটি ৭০ লাখ টাকা মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট দেয়। সরকার যদি দেশের সংবাদমাধ্যমের শুভাকাক্সক্ষী হয় তাহলে অস্ট্রেলিয়ার নীতি অনুসরণ করতে পারে। অস্ট্রেলিয়া সরকার একটি আইন তৈরি করেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষে পাস হয়েছে আইনটি। ওই আইন অনুযায়ী গুগল ফেসবুকসহ সব সামাজিক মাধ্যমকে সে দেশে সংবাদমাধ্যমের তৈরি খবর ছবি অডিও ভিডিও ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত অঙ্কের অর্থ দিতে হবে।

এই আইনের মূল উদ্দেশ্য স্পষ্ট। সংবাদমাধ্যমের ন্যায্যহিস্যা আদায়। ডিজিটাল প্রতিষ্ঠানের একচেটিয়া দাপটে সংবাদপ্রতিষ্ঠান যখন অসহায় অবস্থায় পড়েছে কল্যাণকামী রাষ্ট্রব্যবস্থা তাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। ডিজিটাল দানবদের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া সরকারের আইনি উদ্যোগ নিয়ে বিরোধ জমে উঠেছিল। ফেসবুক কোনোভাবে সংবাদ প্রতিষ্ঠানের সাথে লাভের অর্থ ভাগাভাগি করতে রাজি হচ্ছিল না। একপর্যায়ে ফেসবুক অস্ট্রেলিয়ায় সংবাদমাধ্যমের সব খবর বন্ধ করে দেয়। সরকারও তার অবস্থানে অটল থাকে। শেষ পর্যন্ত সুরাহা হয়েছে। ফেসবুক বাধ্য হয়েছে সংবাদ প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে ব্যবসার ভাগ-বাটোয়ারা ঠিক করে নিতে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেটা করতে হবে। যদি নির্ধারিত সময়ে না হয় তাহলে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারবে। অর্থাৎ ডিজিটাল দানবের সাথে দরকষাকষিতে সংবাদ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়ে দাঁড়াল অস্ট্রেলিয়ার সরকার।

বাংলাদেশেও যাতে এই ধরনের আইন হয় সে জন্য সংবাদপত্রের মালিকদের প্রতিষ্ঠান নোয়াব সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে বলে জানা যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ায় যেভাবে সরকার দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে এসেছে তেমন কোনো উদ্যোগ বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে না। বরং সরকার দেশীয় সংবাদ প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর চাপিয়ে রেখেছে নানা ভ্যাট ট্যাক্স। সংবাদপত্র শিল্পকে এখনো ৩৫ শতাংশ হারে করপোরেট ট্যাক্স দিতে হয়। নিউজপেপার আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। বিজ্ঞাপন আয় থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্ত উৎসে কর দিতে হয়। সরকার এগুলো যৌক্তিকপর্যায়ে নামিয়ে আনতে পারে। পাশাপাশি ডিজিটাল প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে ন্যায্যতার চুক্তি করিয়ে দিতে পারে। তাহলে সংবাদ প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন পরিস্থিতি খাপখাইয়ে নিতে পারবে আশা করা যায়।
জাতীয় স্বার্থের প্রহরী সংবাদমাধ্যম

বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যম নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। সাংবাদিকরা যদি পাঠকের অভিযোগ আমলে নিতে পারতেন তাহলে সংবাদ প্রতিষ্ঠানগুলো টেকসই হতে পারত। এ দেশে সংবাদমাধ্যম অল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত বিপুল বিস্তার লাভ করেছে। কিন্তু সাংবাদিকতার মান বাড়েনি। এর প্রধান কারণ মালিকানার সঙ্কট। দক্ষ অভিজ্ঞ সাংবাদিকরা সংবাদ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন কম। দৈনিক পত্রিকা ও টেলিভিশনের সংবাদ প্রচারের লক্ষণ থেকে তা আমরা বুঝতে পারব। প্রধানত অর্থনৈতিক স্বার্থ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের মধ্যে এ দেশে সংবাদ প্রচার বন্দী হয়ে রয়েছে। সংবাদ নির্বাচন ও তার গুরুত্ব নির্ধারণের ক্ষেত্রে এই দু’টি ফ্যাক্টর বড়দাগে প্রভাব রাখে। সংবাদ নিজে থেকে নির্মোহভাবে প্রকাশ হতে পারে কম।

দেখা যায়, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু সংবাদমাধ্যমে উধাও। অন্য দিকে সামান্য জমির মালিকানা কেনা বেচা বণ্টনের সমস্যা নিয়ে সংবাদ করা হচ্ছে। এসব সংবাদে সংবাদমূল্য থাকে না। সংবাদমাধ্যমের বিপুল প্রভাবের সুযোগ কাজে লাগাতে চেয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। সেই সূত্রে দেশে মিডিয়ার সংখ্যা বেড়েছে। এতে করে পেশাদার সংবাদমাধ্যম গড়ে ওঠা ব্যাহত হয়েছে। বিগত কয়েক দশকে এ দেশে মানুষ সংবাদমাধ্যমের দ্বারা বিপুল বঞ্চনার শিকারও হয়েছে। কারণ তাদের জানার অধিকার খর্ব হয়েছে।

মালিকানা প্রদানের সূত্র হিসেবে সরকার আনুগত্য চায়। সংবাদ প্রতিষ্ঠানগুলোকেও টিকে থাকার জন্য সরকারের দ্বারস্থ হতে হয়। সরকারি বিজ্ঞাপন পাওয়ার জন্য সরকারের তাঁবেদারি করতে হয়। অন্য দিকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণেও সরকার হাত দেয়। সরকার সরাসরি হাত না দিলেও নানা প্রেসার গ্রুপের মাধ্যমে তার লম্বা হাতটি ব্যবহার করে। এই অবস্থায় এ দেশের সংবাদমাধ্যমে খবর প্রচারের চেয়ে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা ভর করে আছে। গণতান্ত্রিক একটি দেশে এমনটি হওয়ার কথা ছিল না। সাংবাদিকতার টেকসই উন্নতির ক্ষেত্রে এই প্রবণতা বড় বাধা হয়ে রয়েছে।
jjshim146@yahoo.com

https://www.dailynayadiganta.com/post-editorial/576164/