ফাইল ছবি
১০ এপ্রিল ২০২১, শনিবার, ১:১৫

চট্টগ্রামে নমুনা পরীক্ষায়ও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

কাঁচাবাজার, শপিংমল কিংবা রাস্তাঘাট তো দূরের কথা চট্টগ্রামে খোদ করোনার নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্রগুলোতে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। সামাজিক দূরত্ব না মেনে গাদাগাদি করে দিতে হচ্ছে নমুনা। আবার কারও কারও মুখে মাস্ক পর্যন্ত নেই। ফলে ঝুঁকিতে পড়ছেন সুস্থরা। অন্যদিকে নমুনা পরীক্ষার ফল পেতে দেরি হওয়ায় অনেকে কর্মস্থলসহ বাহিরে ঘোরাফেরা করছেন নির্দ্বিধায়। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে করোনার নমুনা দিতে গেলে সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। চট্টগ্রামে গেল ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৮০ জনের শরীরে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে করোনায় মারা গেছেন তিনজন। আক্রান্তদের মধ্যে নগরীর বাসিন্দা ৩১৪ জন।

চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আসিফ খান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের ৭টি ল্যাবে ১ হাজার ৯২৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ২২৩টি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৭৯৯টি, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৩৪৭টি এবং চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ২৬৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে চবি ল্যাবে ৮১ জন, বিআইটিআইডিতে ৮৭ জন, চমেকে ৬ জন এবং সিভাসু ল্যাবে ১০০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ২২৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ৭৮ জন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৬০টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৬ জন এবং জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৩ হাজার ৫৬৮ জন।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাব এবং বিআইটিআইডিতে বিদেশগামী যাত্রীদের করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ দুটি ল্যাব মূলত বিদেশগামীদের জন্য ডেডিকেটেড। তবে এখানে সাধারণ মানুষের নমুনাও পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে ফল পেতে সময় লাগছে কমপক্ষে চার থেকে পাঁচ দিন। এছাড়া অন্যান্য কেন্দ্রগুলোতে নমুনা দেয়া হলে সময় লাগছে তিন থেকে চার দিন। তবে বেসরকারি ল্যাবগুলো ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট দিয়ে দিচ্ছে। নমুনা সংগ্রহের সময় হোম আইসোলেশনে থাকতে বলা হলেও অনেকে তা মানছেন না। এ সময়ের মধ্যে অনেকে উপসর্গ নিয়ে বাহিরে বের হচ্ছেন। অফিস-আদালতেও দায়িত্ব পালন করছেন।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস পরীক্ষাগারের ল্যাব ইনচার্জ সহযোগী অধ্যাপক শাকিল আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, ‘করোনার নমুনা পরীক্ষা দিতে গিয়ে মানুষ যদি মাস্ক না পরেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলেন তাহলে সংক্রমণ আরও বাড়বে। আমরা বারবার বলছি- অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে এবং তিন ফুট দূরে দূরে দাঁড়াতে হবে। কিন্তু কেউই তা মানছেন না। আমরা কী করতে পারি? আমরা দেখেছি, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে করোনার টিকা নিয়ে অনেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। নমুনা দিতে গিয়েও ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এজন্য সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিকল্প কিছু নেই।

তিনি বলেন, প্রতিদিন ৫০০ বিদেশগামী ও ৫০০ সাধারণসহ গড়ে ১০০০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয় বিআইটিআইডিতে। সীমিত জনবল দিয়ে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ নমুনা পরীক্ষা করতে হয়। এ কারণে সাধারণদের ফল পেতে সময় লেগে যায়।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/410347