১ এপ্রিল ২০১৭, শনিবার, ১০:০৬

ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ

দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট পার্ক কারাগারে

কারাগারে প্রথম দিন অতিবাহিত করলেন দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট পার্ক গিউন হাই। দেশটির একটি আদালত বৃহস্পতিবার গিউন হাইকে গ্রেপ্তারের অনুমোদন দেন। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার প্রথম প্রহরেই রাজধানী সিউলের দক্ষিণে একটি ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। পার্ক দক্ষিণ কোরিয়ার তৃতীয় সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান, যাঁকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হলো।
এ ঘটনায় পার্কের সমর্থকদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকেই রাস্তায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও বিলাপ করছে। অন্যদিকে তাঁর বিরোধীরা করছে উল্লাস।
পার্কের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী চোই সুন-সিল প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক ক্ষমতা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন কম্পানি ও ব্যক্তির কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন এবং তাতে পার্কের সমর্থন রয়েছে এমন অভিযোগে গত বছরের মাঝামাঝি পার্লামেন্টে ও রাজপথে পার্কের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে পার্কের বিরুদ্ধেও ঘুষ গ্রহণ, সরকারি তথ্য ফাঁস, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ডিসেম্বরে দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পার্ককে অভিশংসনের পক্ষে রায় দেয় পার্লামেন্ট। মার্চ মাসে সাংবিধানিক আদালত ওই রায় বহাল রাখেন এবং তাঁকে বরখাস্ত করেন। পার্ক গোড়া থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বিচার থেকে দায়মুক্তির আওতায় ছিলেন পার্ক। কিন্তু বরখাস্ত হওয়ার পর ওই দায়মুক্তির সুবিধা হারান তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করার পথ প্রশস্ত হয়। ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে পার্কের।
৬৫ বছর বয়সী পার্ক বৃহস্পতিবার সিউল সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে হাজিরা দেন। দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা উচিত হবে কি না তা নিয়ে এদিন শুনানি হয়। শুনানি শেষে তাঁকে গ্রেপ্তারে অনুমোদন দেন আদালত। এরপর তাঁকে একটি ডিটেনশন সেন্টারে নেওয়া হয়। আদালত রায়ে বলেন, ‘পার্কের বিরুদ্ধে আনা প্রধান অভিযোগগুলো ন্যায্য এবং যেহেতু এখানে প্রমাণ নষ্ট করার ঝুঁকি রয়েছে তাই তাঁকে গ্রেপ্তার প্রয়োজন ও সমর্থনযোগ্য। ’
টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারে দেখা যায়, কালো রঙের একটি সেডান গাড়িতে করে পার্ককে ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মধ্যরাতের পরপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হলেও ওই সময় কৌঁসুলির কার্যালয়ের সামনে পার্কের প্রায় ৫০ জন সমর্থক জাতীয় পতাকা হাতে তাঁর মুক্তির দাবি জানান। সূত্র : এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স।

 

 

http://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2017/04/01/481350