৮ এপ্রিল ২০২১, বৃহস্পতিবার, ১২:৩৩

করোনার ভয়াবহতার মধ্যেও প্রতিপক্ষকে হুমকি-ধামকিসহ শায়েস্তা করার নির্দেশনা

দেশে করোনার ভয়াবহতা দিনদিন বেড়েই চলেছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারাও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্ত হচ্ছেন অন্যরাও। করোনার প্রথম ধাপে বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতা মারা যান। দ্বিতীয় ধাপেও আক্রান্ত হয়েছেন অসংখ্য। মারাও যাচ্ছেন। করোনার এমন ভয়াবহতার মধ্যেও থেমে নেই হুমকি-ধামকি, মামলা গ্রেফতার। করোনা সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে গিয়েও প্রতিপক্ষকে হুমকি দিচ্ছেন। কিভাবে শায়েস্তা করা যায় সেটিরও দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের এমন কঠিন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই মানবিক হতে হবে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার রাজনীতি পরেও করা যাবে। আগে দেশের মানুষকে বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। করোনা কিভাবে মোকাবেলা করা যায়, কিভাবে মানুষকে সচেতন করা যায়, সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার বিষয়টিকেই এখন সবার প্রাধাণ্য দেয়া উচিৎ। তারা বলছেন, দেশের এই সংকটকালে মতভেদ ভুলে সরকারকেই সব রাজনীতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে করোনা মোকাবেলায় করণীয় নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নিতে হবে।

গতকাল বুধবার নিজ বাসভবন থেকে ভিডিওবার্তায় আওয়ামী লীগসহ সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উস্কানিদাতাদের তালিকা প্রস্তুত করে এদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে। যারা দেশব্যাপী তাণ্ডব চালিয়েছে বা এখনও চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের সতর্ক করছি। দেশের জনগণের ধৈর্য ও সহনশীলতার একটা সীমা আছে। সীমা অতিক্রম করলে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ। ওবায়দুল কাদের বলেন, হেফাজতে ইসলাম নামে একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তি দেশের বিদ্যমান স্বস্তি এবং শান্তি বিনষ্টে দেশের বিভিন্ন স্থানে যে অব্যাহত তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে, তা সহনশীলতার সব মাত্রা অতিক্রম করেছে। জনগণের জানমালের সুরক্ষা দিতে শেখ হাসিনা সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আঘাত আসলে প্রতিঘাত করতে জানে এবং আক্রমণ করলে পাল্টা আক্রমণও করতে জানে।

দেশের প্রচলিত সরকার কাঠামো, শিক্ষা ব্যবস্থা, প্রশাসন ও আইনের অধীনে না আসলে মামুনুল হকদের শায়েস্তা করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। মঙ্গলবার রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা জানান। স্ট্যাটাসটিতে তিনি বলেছেন, ‘খেলাফতে মজলিশ নামক একটি দলের এক নেতা এই কুলাঙ্গার মামুনুল হকের পক্ষে যেভাবে সাফাই গাইলো, এতে বোঝা যায় দ্বীনে ইসলাম শুধুই এদের বেচে থাকার জন্য একটি মাধ্যম। ধর্ম ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর মনে রাখা প্রয়োজন স্বাধীনতা যুদ্ধে এই দেশের জনগণ এদের প্রত্যাখ্যান করেছে। এদের ছাড়াই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে, আওয়ামী লীগসহ প্রগতিশীল শক্তির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। কিছু এতিম শিশুকে রাখে বলে এরা অনেকের সহানুভূতি পায়। এরা দেশের প্রচলিত সরকার কাঠামো, শিক্ষা ব্যবস্থা, প্রশাসন ও আইনের অধীনে না আসলে, এদের কিভাবে শায়েস্তা করতে হবে তা আমাদের জানা আছে। পিতার ভাস্কর্য অপমানিত করার পর থেকে, এদের স্পর্ধার শুরু। এখন ১৭টি লাশের উপরে চলছে এদের "রিফ্রেশমেন্ট" জীবন। আগুন যারা জ্বালিয়েছে, পিতার ছবিতে হাত যারা দিয়েছে, এদের একটা একটা করে ধরে আনা হবে, আইনের সম্মুখীন করা হবে। সামাজিক, ধর্মীয়, অর্থনৈতিক, সর্ব পর্যায়ে এই কাঠমোল্লা গোষ্ঠীকে প্রতিহত করতে হবে। আওয়ামী লীগ বানের জলে ভেসে আসে নাই। গণতান্ত্রিক সমাজে রাজনীতি করতে চায় করবে। কিন্তু ধর্ম ব্যবসা করে মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালানোর পরিণাম এদের বোঝাতে হবে। আগুন সন্ত্রাস করে বিএনপি-জামায়াত ছাড় পায় নাই। এই ধর্ম ব্যবসায়ীরাও ছাড় পাবে না। ইনশাল্লাহ।’

বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এক কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, ধর্মের নামে বিএনপি, জামায়াত, হেফাজত, সারা দেশে জ্বালাও-পোড়াও ভাংচুর করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। এখন থেকে আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীকে নির্দেশ দিচ্ছি সরকারের পাশে থেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে দমন করার। সময় হয়েছে আঘাতের প্রতিঘাত করার। তিনি বলেন, আঘাত এসেছে, সময় হয়েছে প্রতিঘাত করার, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

সূত্র মতে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের পর থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির চার শতাধিক নেতাকর্মী আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এছাড়া বর্তমানে দলটির শতাধিক নেতাকর্মী আক্রান্ত আছেন। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে ঢাকাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আহমেদ আজম খান, ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য গাজী মাজহারুল আনোয়ার, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, ডা: ফরহাদ হালিম ডোনার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, ড্যাবের সাবেক সভাপতি ডা: এ কে এম আজিজুল হক, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন মিডিয়া কমিটির সদস্য সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল প্রমুখ। করোনা ভাইরাস সংক্রমণে এ পর্যন্ত বিএনপির ৪৪০ জন নেতাকর্মী মারা গেছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সিলেট সাবেক মহানগর বিএনপি সভাপতি এম এ হক, ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসন, কুমিল্লা বিভাগ সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) রুহুল আলম চৌধুরী, ওলামা দলের কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটি সদস্য মওলানা কাসেমী, গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সহসভাপতি খন্দকার আহাদ আহমেদ, ঢাকা পল্লবী থানা বিএনপির সহসভাপতি মো: আনিসুর রহমান, সাবেক মন্ত্রী টি এম গিয়াস উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহসভাপতি লায়ন মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি সভাপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য অ্যাডভোকেট কবির চৌধুরী, জাতীয় ট্যাক্সসেস বার সভাপতি অ্যাডভোকেট গফুর মজুমদার, শ্রমিক দলের সহ সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক মোল্লা, গাজীপুর শ্রীপুর পৌরসভা বিএনপি মেয়র প্রার্থী শহিদুল্লাহ শহীদ আমেরিকার বোস্টন বিএনপি ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মিতোষ বড়ুয়া, বিএনপি সহ স্থানীয় সরকার সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন সরকার ও সাবেক এমপি এ টি এম আলমগীর প্রমুখ।

জানা গেছে, করোনা মহামারিকালে আওয়ামী লীগের পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী মারা গেছেন। করোনায় মারা গেছেন নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম। গত ১৩ জুন রাজধানীর শ্যামলিতে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। যিনি সিরাজগঞ্জ ১ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। আর একই দিন রাতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মারা যান টেকনোক্র্যান্ট কোটায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ। গত ১৫ জুন ভোরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা বদরুন উদ্দিন আহমদ কামরান। গত ৫ জুন সিলেটে পরীক্ষা করে কোভিড ১৯ শনাক্ত হন তিনি। করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফসহ সিনিয়র অনেক নেতাই।

শুধু রাজনীতিবিদই নয়। করোনায় খ্যাতনামা ব্যক্তি, শিল্পপতি, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিকচিকিৎসক, পুলিশ-র‌্যাব-বিজিবির সদস্য, সেনাসদস্য, ব্যবসায়ী, আমলা, ব্যাংক কর্মকর্তা, দুদক কর্মকর্তা, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিত্ব কেউ-ই বাদ যাচ্ছেন না এই ভাইরাস থেকে। করোনার চিকিৎসক সিলেটে গরিবের ডাক্তার হিসেবে পরিচিত ডা. মো. মঈন উদ্দিন মারা যান এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। মারা যান জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, দেশের প্রথম নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, আওয়ামী লীগের নেতা এবং সাবেক এমপি হাজি মকবুল হোসেন, বাংলাদেশি শিল্পোদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী লতিফুর রহমান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অ্যাপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর স্ত্রী সানবিমস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল নিলুফার মঞ্জুর, এস আলম গ্রুপের পরিচালক মোরশেদুল আলম। সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস (প্রা.) লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমামুল কবীর শান্ত, খ্যাতিমান প্রকৌশলী জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, সাবেক অর্থ ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আনোয়ারুল কবির তালুকদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান বজলুল করিম চৌধুরী, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল হাসপাতালের চিফ হেমোটোলজিস্ট অধ্যাপক কর্নেল (অব.) মো. মনিরুজ্জামান, যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, আল্লামা শাহ আহমদ শফী, হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা নূর হুসাইন কাসেমী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এমাজউদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংবাদিক কামাল লোহানী, প্রথিতযশা আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হক, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, বিশিষ্ট শিল্পপতি এম এ হাসেম, সেক্টর কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরী, সি আর দত্ত, বিশিষ্ট রাজনীতিক শওকত আলী, শিল্পী মুর্তজা বশীর, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, জর্ডান ও ইরাকের বিমানবাহিনীর বৈমানিক সাইফুল আজম, ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তা আবদুল মোনেম, সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী নূরুল ইসলাম মঞ্জুর, সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লা, শিল্পনির্দেশক ও অভিনেতা মহিউদ্দীন ফারুক, শিক্ষাবিদ সুফিয়া আহমেদ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের নবম চেয়ারম্যান সা’দত হুসাইন, শিক্ষাবিদ বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক, সাবেক সংসদ সসদ্য কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন প্রমুখ। ২০২০ সালেই রেকর্ড পরিমাণ তারকা ও গুণী মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২০ সম্ভবত মানব ইতিহাসে এক ভয়ানক বছরের নাম হয়ে থাকবে। এর আগের মহামারিগুলো এত পরিমাণ মানুষকে আক্রান্ত করতে পারেনি। এখনো এই করোনা মহামারির লাগাম টানা সম্ভব হয়নি। বরং আরও বেড়েছে। কিন্তু দেশের রাজনীতিক দলগুলোর মাঝে এখনো এ বিষয়ে কোনো ঐকমত্য গড়ে উঠেনি।

শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, করোনা মোকাবেলায় সরকারকে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। একদিকে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচার-প্রচারণা জোরদার করতে হবে। সত্যিকার অর্থে অংশগ্রহণমূলক প্রচারণা জোরদার করার জন্য সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের টিভি ও রেডিওতে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য পেশের সুযোগ দিতে হবে। এ ছাড়া নামকরা চিকিৎসক এবং বুদ্ধিজীবীদেরও এ প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। তাহলে মানুষ এ ব্যাপারে সাবধান হবেন। তিনি বলেন, করোনা মোকাবেলায় রাজনীতিক দলগুলোকে আরও মানবিক হতে হবে।

আওয়ামী লীগ সরকার গণবিচ্ছিন্ন বলেই করোনা মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের দুঃখ-দুর্দশা মোকাবিলায় তারা বরাবরই আ’লীগ উদাসীন। তারা দেশে করোনা মোকাবিলায় একবারেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছ। প্রিন্স বলেন, সরকারের পরস্পরবিরোধী পদক্ষেপে মানুষ করোনা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। সর্বত্রই লেজেগোবরে অবস্থা। নানা দুর্ভোগে জনগণ। আয়-রোজগার, সংসার চালানো কিংবা ভবিষ্যতের চিন্তায় জনগণ আজ দিশেহারা। তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোতে অবস্থা বেগতিক। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল করোনা রোগী দ্বারা পরিপূর্ণ। কোনো সিট খালি নেই। নেই পর্যাপ্ত আইসিইউ, ভেন্টিলেটর ও অক্সিজেন। করোনা আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসার জন্য এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটতে ছুটতে পথিমধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।

https://dailysangram.com/post/448943