৪ এপ্রিল ২০২১, রবিবার, ৬:২০

লকডাউনের খবরে মুহূর্তে কেজিতে ১-২ টাকা বেড়ে গেল চালের দাম

লকডাউন আসছে, এই খবরেই চালের দাম বেড়ে গেল কেজিতে ১-২ টাকা। আমদানিকারক এবং মিলমালিকরা আটকে দিলেন চাল। পাইকারি বিক্রেতারা অভিযোগ করেছেন, লকডাউনের অজুহাতে দাম বাড়ানোর ফন্দি এঁটেছেন আমদানিকারক ও মিলমালিকরা। যে কারণে গতকাল তারা চাল সরবরাহ করেননি। বিক্রেতারা আশঙ্কা করেছেন, চালের দাম বাড়লে এর সাথে যুক্ত অন্যান্য পণ্যের দামও বেড়ে যাবে। ক্রেতারা বলেছেন, এই মুহূর্তে বাজার মনিটরিং জোরালো না হলে মুনাফাখোররা বাড়তি পয়সা হাতিয়ে নিয়ে জিম্মি করে ফেলবে ক্রেতাদেরকে।

গত রাতে টঙ্গীর পাইকারি আড়তে খবর নিয়ে জানা গেছে একদিন আগেও বস্তাপ্রতি ৫০-১০০ টাকা কম ছিল। ‘লকডাউন আসছে’ এই খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে পাইকারি বাজারেই চালের এই দাম বেড়েছে। বাইরে খুচরা বাজারে আরো দাম বেড়েছে বলে জানান ক্রেতারা। গত রাতে খবর নিয়ে জানা গেছে ২৫ কেজি ওজনের এক বস্তা মিনিকেট আগের দিনও বিক্রি হয়েছে ১৩৭০ টাকায়। গতকাল দুপুরের দিকে সেই চাল বিক্রি হয়েছে ১৪০০-১৪৫০ টাকায়। ২৫ কেজির বস্তা স্বর্ণা চাল আগের দিন বিক্রি হয়েছে ১০৬০ টাকা। গতকাল দুপুরের পর সেই চাল বিক্রি হয়েছে ১০৯০-১১০০ টাকায়। আমদানিকৃত ইন্ডিয়ান নাজিরের ২৫ কেজি ওজনের বস্তা ছিল ১৩৩০ টাকা। গতকাল দুপুরের দিকে সেই চাল বিক্রি হয়েছে ১৪০০ টাকা। রতœার ২৫ কেজি ওজনের বস্তা ছিল ১১২০ টাকা। সেই চাল বিক্রি হয়েছে ১১৬০ টাকায়। সব ধরনের ডালের দামও গতকাল দুপুর থেকে বেড়ে গেছে বলে টঙ্গীর পাইকারি আড়তের একাধিক সূত্র বলেছে।

এ দিকে, আড়তদাররা জানিয়েছেন, মিলমালিক ও আমদানিকারকরা লকডাউনের কথা শুনেই চাল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। নয়াবাজারের এক ব্যবসায়ী কাশেম বেপারী জানিয়েছেন, দুপুরের দিকে তারা মিলে চালের জন্য ফোন দিলে মিল থেকে জানানো হয় আপতত কোনো চাল নেই। একইভাবে সীমান্তে আমদানিকারকদের কাছে ফোন দেয়া হলে তারাও চাল নেই বলে জানিয়ে দেন। একাধিক পাইকারি বিক্রেতা বলেছেন, লকডাউনের অজুহাতে চালের দাম বাড়ানোর জন্যই মিলমালিক ও আমদানিকারকরা এভাবে কোনো কথাবার্তা ছাড়াই তারা চাল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।

রাজধানীর খুচরা বাজারেও লকডাউনের প্রভাব পড়েছে। অলিগলির দোকানেও গতকাল দুপুরের পর থেকে বেশি দামে চাল বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। ছিদ্দিকুর রহমান নামের গোপীবাগের এক বাসিন্দা গতকাল বিকেলে নয়া দিগন্তকে বলেন, চালের দাম বেড়ে গেছে। বাড়তি দাম দিয়ে চাল কিনতে হয়েছে। তার আশঙ্কা বাজার মনিটরিং করতে না পারলে মুনাফাখোররা পণ্যের দাম আরো বাড়িয়ে দিবে। তাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়বে। মানিক নামের অপর এক ক্রেতা বলেছেন, ভয় লাগছে এবার কী হয়। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সরকারি সংস্থাগুলোর উচিত বাজারে শক্তভাবে অবস্থান নেয়া। কেউ যদি অহেতুক দাম বাড়ায় তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান মানিক।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/573504/