৩ এপ্রিল ২০২১, শনিবার, ১১:৩৬

রমজান ও করোনা ঘিরে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছেন অনেক ব্যবসায়ী

চলতি মাসের মাঝামাঝি শুরু হবে রমজান। এদিকে বাড়ছে করোনা মহামারির প্রকোপ। এ দুইয়ের প্রভাব পড়েছে বাজারে। প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে প্রয়োজনীয় নানা পণ্য।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের দাম কেজিতে এক টাকা বেড়েছে। এখন এক কেজি মোটা চাল কিনতে সাধারণ মানুষকে গুনতে হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫১ টাকা। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেলও। পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ৬৩০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগে ছিল ৬২০ থেকে ৬৪০ টাকা।

ইফতারির অনুষঙ্গ নানা পণ্যের দামও বাড়তির দিকে। খোলা আটা-ময়দা, আলু, রসুন, আদা ও গুঁড়া দুধের দাম বেড়েছে। বেসন তৈরির অন্যতম উপকরণ অ্যাঙ্কার ডালের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বাড়ানোর সুযোগ নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

মিরপুর-১ বাজারের এক ক্রেতা বেসরকারি চাকরিজীবী ফখরুল ইসলাম বলেন, এখন বাজারে গেলে অসহায় লাগে। দামের যে অবস্থা, তাতে প্রয়োজনীয় সব পণ্য কেনা সম্ভব নয়। আবার নিত্যপণ্য না কিনলে দিন চলবে কি করে? এদিকে করোনা বাড়ছে, আতঙ্কে আছি কখন চাকরি চলে যায়!

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে মোটা চালের দাম বেড়েছে দুই দশমিক ২০ শতাংশ। খোলা ময়দার দাম বেড়েছে চার দশমিক ২৯ শতাংশ।

সপ্তাহের ব্যবধানে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে দেশি আদার দাম। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। খোলা ময়দার দাম কেজিতে দুই টাকা বেড়ে ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা হয়েছে। আলুর দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে চার টাকা। এখন আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। এক কেজি অ্যাঙ্কর ডালের দাম ছিল ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়।

ওদিকে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি, গরু ও খাসির মাংস। এখন ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৬০-১৬৫ টাকা। লেয়ার মুরগির কেজি ২০০-২২০ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি ২৫০-২৮০ টাকা। ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ৯০- ৯৫ টাকা।

গত সপ্তাহে দু-চারটি সবজি ছাড়া সবই মিলত ২০-৩০ টাকা কেজিতে। এখন প্রায় সব সবজিরই দাম বেড়ে উঠেছে ৫০ টাকায়। বেগুনের কেজি ৪০-৬০ টাকা। মাঝারি আকারের একটি লাউ ৫০-৬০ টাকা। পটোল, বেগুন, শিম, ধুন্দল, বরবটি, ঢেঁড়স, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটোসহ প্রায় সবরকম সবজির দাম চড়া। ঢেঁড়স ও পটোলের কেজি ৫০-৬০ টাকা। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজিতে। ২০-৩০ টাকা পিস ছিল ফুলকপি ও বাঁধাকপি। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকায়। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে শিম ও শসা এখন ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ধুন্দল ও চিচিঙ্গা কিনতে এখন লাগছে ৫০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি ২০-৩০ টাকা। যা গত সপ্তাহেই ছিল ১৫-২০ টাকা। আগের মতোই পেঁপের কেজি ৩০-৪০ টাকা ও গাজরের কেজি ২০-৩০ টাকা। বাজারে স্বস্তি দিচ্ছে কেবল পেঁয়াজ। দেশি পেঁয়াজের কেজি এখন ৩০-৩৫ টাকা আর আমদানি পেঁয়াজ ২৫-৩০ টাকা।

মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজারের আড়তদার সবজি ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, এখন করোনার কারণে আড়তে সবজিও কম আসছে। তাছাড়া মৌসুমের শেষ সময়ে এর সরবরাহও কম। তাই দাম বাড়ছে। তবে গ্রীষ্ফ্মকালীন আগাম সবজি আসা শুরু হয়েছে। এসব সবজির সরবরাহ বাড়লে বাজার স্বাভাবিক থাকবে।

https://samakal.com/todays-print-edition/tp-last-page/article/210491990/