৩ এপ্রিল ২০২১, শনিবার, ১১:২৬

রমযান আসার আগেই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

পবিত্র রমযান শুরু হওয়ার বাকী এখনো প্রায় দুসপ্তাহ। কিন্তু তার আগেই নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই যাচ্ছে। আর বৃদ্ধি পাওয়া জিনিসপত্রের দাম কমছে না কোনভাবেই। একদিকে করোনার প্রকোপ বাড়ছে, অন্যদিকে নিত্যপণ্যের বাজার বেসামাল হয়ে উঠছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, ইফতারির জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এখন চড়া। নতুন করে বেড়েছে বেসন তৈরির অন্যতম উপকরণ অ্যাংকার ডালের দাম। আরও বেড়েছে বোতলজাত সয়াবিনের দাম, খোলা ময়দা, আলু, রসুন, আদা ও গুড়ো দুধের দাম। বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। মোটা চালের দামও আবার বেড়েছে। চিকন বা সরু চালের দাম কমেছে। আর বেড়েছে মোটা চালের দাম। চিকন চালের কেজিতে এক টাকা কমলেও মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিতে দুই টাকা। প্রতি কেজি চিকন চালের দাম ৬৫-৬৪ টাকায় নেমেছে। আর প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ৪৪ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৬-৪৮ টাকা।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবি’র তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহে মোটা চালের দাম বেড়েছে ২.২০ শতাংশ। টিসিবির হিসাবে খোলা ময়দার দাম বেড়েছে ৪.২৯ শতাংশ। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা ময়দার দাম বেড়ে হয়েছে ৩৮ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে এই ময়দার প্রতি কেজির দাম ছিল ৩৪-৩৬ টাকা। বাজারে আলুর দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৪ টাকা। ১৬ টাকা কেজি আলু এখন বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজিতে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেসন তৈরির অ্যাংকার ডালের দাম। ৩৮ টাকা কেজি অ্যাংকার ডাল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি। সরকারি হিসাবে, এই ডালের দাম বেড়েছে ৮.৪৩ শতাংশ। তবে টিসিবির হিসাবে সবচেয়ে বেড়েছে দেশি আদার দাম। ১০০ টাকা কেজি দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি আদার কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। বাজারে ৫ লিটার ওজনের সয়াবিনের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা। গত সপ্তাহে এই সয়াবিন বিক্রি হয় ৬৪০ টাকা।

রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচা বাজারে দেখা যায়, প্রতিকেজি গাজর ২০ থেকে ৩০ টাকা, শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৬০ টাকা, মূলা ৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ৩০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস লাউ আকারভেদে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, বাঁধাকপি ২০ থেকে ২৫ টাকা। প্রতিকেজি মিষ্টি কুমড়া ২০ থেকে ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে ৬০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, সজিনা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, আলু ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে ছয় কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়।

কাঁচা কলা প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। কাঁচা মরিচ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। প্রতিকেজি পেঁপে ৩০ টাকা, ক্ষীরা ৪০ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মটরশুঁটি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি হালি লেবু ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও প্রতিকেজি শুকনা মরিচ ২০০ টাকা, রসুন ৬০ থেকে ১২০ টাকা, আদা ৬০ টাকা ও হলুদ ১৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। প্রতিকেজি বি আর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা, মিনিকেট ৬৫ টাকা, নাজির ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, স্বর্ণা চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা ও পোলাওয়ের চাল ৯০ থেকে ১০০ টাকা। খোলা ভোজ্যতেল প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা।
পাঁচ টাকা দাম কমে প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায় ও হাঁসের ডিম প্রতি ডজন ১৪০ টাকা। দেশী মুরগির ডিমের প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা।

কেজিতে ৩০ টাকা দাম কমে প্রতিকেজি সোনালি (কক) মুরগি ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। আর লেয়ার মুরগি প্রতিকেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির গোশত ও মসলাসহ অন্যান্য পণ্যের দাম। বাজারে প্রতিকেজি খাসির গোশত বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, বকরির গোশত ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকা।

এসব বাজারে প্রতিকেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, মাগুর মাছ ৬০০ টাকা, প্রতিকেজি শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। আর প্রতি কেজি মৃগেল ১১০ থেকে ১৫০ টাকা, পাঙাস ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। প্রতিকেজি ইলিশ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে এক হাজার টাকা, চিংড়ি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। প্রতিকেজি বোয়াল মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, কাতল ১৭০ থেকে ২৮০ টাকা, ফলি মাছ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, পোয়া মাছ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, পাবদা মাছ ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, টেংরা মাছ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, টাটকিনি মাছ ১০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ টাকা, সিলভার কার্প ১০০ থেকে ১৪০ টাকা, দেশী কৈ মাছ ৭০০ টাকা, কাঁচকি ও মলা ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, আইড় মাছ ৫০০, রিডা মাছ ২২০ টাকা এবং কোরাল ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, গুড়া বাইলা ১২০ টাকা, রূপ চাঁদা প্রতিকেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

https://dailysangram.com/post/448404