২৯ মার্চ ২০২১, সোমবার, ১১:৫৭

অপেক্ষার শেষ নেই!

করোনার নমুনা পরীক্ষা

টানা ৫ দিন ধরে করোনার নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে রেকর্ড ২৫ হাজারের বেশি। এরইমধ্যে সবশেষ ৩ দিনে ২৭ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে পরীক্ষার সক্ষমতা বাড়লেও রয়ে গেছে পুরনো বিড়ম্বনা। নমুনা দিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা, রিপোর্ট পেতে বিলম্ব এমনকি অনলাইনে আবেদনও যেন গোলক ধাঁধা। কোভিড সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এমন সব চিত্র রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালের কেন্দ্রে।

প্রতিদিন ভোররাত থেকে করোনা টেষ্টের জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে লাইনে দাড়াচ্ছে কয়েকশ’ মানুষ। তবে তাদের বেশিরভাগই টেষ্ট করাতে না পেরে করোনার উপসর্গ নিয়ে বাসায় ফিরছেন। এদের মধ্যে অনেকে আবার একাধিক দিনে এসেও টেষ্ট করাতে পারছেন না বলেও অভিযোগ করেছেন।

রাজধানীর প্রতিটি হাসপাতালে যেখানে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে সেখানে লম্বা সারি দেখা গেছে। সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতেও নেই শারীরিক দূরত্বের কোনো বালাই। কারো কারো অপেক্ষা ভোর থেকে। কিন্তু চৈত্রের কাঠফাটা রোদে দাঁড়িয়ে থেকেও জানা নেই কখন ফোরাবে অপেক্ষার প্রহর। মিলবে কোভিড পরীক্ষার সুযোগ। আছে নমুনা দিতে না পেরে আগেও ফিরে যাবার তিক্ত অভিজ্ঞতা। এমন চিত্র দেখা গেছে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে।

ভোর রাতে মুগদা হাসপাতালে গিয়েও টেস্ট করাতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করে টিকাটুলির ইসহাক মিয়া বলেন, রাত সাড়ে ৩টায় মুগদা হাসপাতালে লাইনে দাড়ালেও টেস্ট করাতে পারিনি। হাসপাতাল থেকে বলা হচ্ছে, টেস্টের জন্য প্রতিদিন ১৮০ জনের টেস্টের টোকেন দেয়া হয়। যা লাইনে দাড়িয়েও পাওয়া যায়না। দুই দিন গিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে। এখন টেস্ট করার চিন্তাই বাদ দিয়েছি। বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছি। তিনি বলেন, করোনা প্রকোপ যেভাবে বাড়ছে তাতে করোনা পরীক্ষা হার বাড়ানো উচিত।

এদিকে টেস্ট করানোর সৌভাগ্য যাদের হয়েছে তাদের কাছ থেকে জানা যায়, প্রথমে টোকেনের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা তারপর চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণ, সেখানে পরামর্শ দেয়া হলেই কেবল নমুনা দেয়া। দীর্ঘ এ প্রক্রিয়া সারতে সময় লাগছে কারও বা ঘণ্টা ছ’য়েক, কারো বা আরও বেশি বলে জানা গেছে। যে হাসপাতালে অনলাইনে নিবন্ধন করা হচ্ছে সেখানে অনলাইন নিবন্ধনও অনেকের কাছে এক ধাঁধা। বেশ ধকল পেরিয়ে নমুনা দেয়ার পর রিপোর্ট পেতেও গুণতে হচ্ছে অপেক্ষার নতুন পালা। সপ্তাহখানেক পেরিয়ে গেলেও মিলছে না রিপোর্ট। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মানুষের বিড়ম্বনা কমাতে বাড়ানো হচ্ছে সক্ষমতা।

রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. অসীম কুমার নাথ বলেন, অতিরিক্ত আনসার সদস্য দেয়া হবে। যেন সামাজি দূরত্বটা বজায়ে রাখা যায়। বুথের সংখ্যা বাড়ানো যায় কিনা সেটা নিয়েও চিন্তা করা হবে। করোনার সংক্রমণ কমাতে মানুষের সচেতনতার মাধ্যমে প্রতিরোধের ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

https://www.dailyinqilab.com/article/369155/