২৫ মার্চ ২০২১, বৃহস্পতিবার, ১১:২১

টিসিবির ট্রাকে দীর্ঘ লাইন

ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ প্যাকেজের কারণে গরিব শ্রমজীবীরা প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারছেন না

ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। তাই রমজান সামনে রেখে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্যের চাহিদা অনেক বেড়েছে। কিছুদিন আগেও টিসিবির বিক্রেতারা ক্রেতার খোঁজে রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেছে। পণ্য বোঝাই ট্রাকে অনেককে ঘুমাতেও দেখা গেছে। আর এখন দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। টিসিবির ট্রাকের সামনে এখন ক্রেতাদের দীর্ঘ সারি। গত কয়েক দিন থেকে রাজধানীজুড়ে প্রচন্ড গরম। এই গরমে ঘরে-বাইরে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। এর মধ্যেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ক্রেতারা টিসিবির পণ্য কিনছেন।

গতকালও রাজধানীর খিলগাঁও, মালিবাগ, সচিবালয় ও প্রেসক্লাব এলাকায় দেখা গেছে, টিসিবির চিনি, তেল ও মসুরের ডাল কিনতে ট্রাকে ক্রেতাদের ভিড়। প্রচন্ড রোদের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ক্রেতারা তেল, চিনি ও মসুরের ডাল কিনছেন। কেউ কেউ রোদ থেকে নিজেকে বাঁচাতে সঙ্গে করে ছাতা নিয়ে এসেছেন। করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতাদের অধিকাংশ মুখে মাস্ক পরলেও সামাজিক দূরত্ব মানার কোনো বালাই নেই। ঠাসাঠাসি করে শরীরের সঙ্গে শরীর লাগিয়ে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনছেন তারা।
ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ট্রাকে ৩৯০ টাকা প্যাকেজ টিসিবির পণ্য বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেজ পণ্যের মধ্যে ১১০ টাকার দুই কেজি ডাল, চিনি ১০০ টাকা ও দুই লিটার তেল ১৮০ টাকা। প্যাকেজ ছাড়া আলাদাভাবে ডাল, চিনি কিংবা তেল বিক্রি হয় না।

খিলগাঁও ওভারব্রিজের নিচে রেলগেটের কাছে টিসিবির ট্রাকের পণ্য কিনতে আসা আবুল কালাম বলেন, সামনে রমজান। ইফতারে বড়া ও পেঁয়াজু বানাতে মসুর ডাল ও তেল একটু বেশি লাগে। এ ছাড়া শরবত খাওয়ার জন্য চিনিও বেশি লাগে। মার্কেটে তেলের কেজি ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা, টিসিবির ট্রাকে ৯০ টাকা কেজি পাওয়া যায়। চিনি মার্কেটে ৭৫ টাকা ট্রাকে ৫০ টাকা। মসুর ডাল বাজারে ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা কেজি। টিসিবির ট্রাকে ডাল ৫৫ টাকা কেজি পাওয়া যাচ্ছে। অপেক্ষাকৃত কম দামে পাওয়া যায় বলে কষ্ট হলেও লাইলে দাঁড়িয়ে টিসির এসব পণ্য কিনছি।

তবে লাইনে দাঁড়ানো অনেক ক্রেতার অভিযোগ, টিসিবির পণ্যের যে প্যাকেজ সিস্টেম তাতে শ্রমজীবী অনেক মানুষ নিজেদের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারছেন না। আর এই সুযোগটা নিচ্ছেন একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। তারা টাকা দিয়ে গরিব মানুষদের লাইনে দাঁড় করান। আর শ্রমজীবী গরিব মানুষরা দোকানির কাছ থেকে কিছু টাকা লাভ পেয়ে পণ্য দিয়ে দিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে ট্রাকের বিক্রেতা আলম বলেন- কে প্রকৃত ক্রেতা, আর কে কার পক্ষে নিয়ে যাচ্ছেন তা যাচাই করব কিভাবে। লাইনে দাঁড়িয়ে যিনি প্যাকেজের ৩৯০ টাকা দেবেন, তাকেই আমরা পণ্য দিচ্ছি। এ পণ্য তিনি নিজের জন্য নিচ্ছেন নাকি অন্য কারো জন্য নিচ্ছেন, সেটা তো আমাদের দেখার বিষয় না।

 

https://www.dailyinqilab.com/article/368110/