২৪ মার্চ ২০২১, বুধবার, ১০:৩৪

রাজধানীজুড়ে দিনভর গ্যাসসঙ্কট

তিতাস গ্যাসের সরবরাহকৃত পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গতকাল রাজধানীতে গ্যাসসঙ্কট চরম আকার ধারণ করে। দুর্ঘটনার কারণে হঠাৎ গ্যাস সরবরাহ বিঘœ ঘটায় বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে সিএনজি স্টেশন পর্যন্ত চরম গ্যাসসঙ্কট দেখা দেয়। এতে গতকাল দিনভর রাজধানীবাসীর চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। হোটেল, রেস্তোরাঁয় খাবারের জন্য দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। গ্যাসের জন্য সিএনজি স্টেশনগুলোতে গাড়ির দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বহীনতার কারণে দু’টি পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে গ্যাসের এ সঙ্কট দেখা দেয়। গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ একটি পাইপলাইন মেরামত করা সম্ভব হলেও অপরটি মেরামত করা যায়নি। ফলে আজও রাজধানীজুড়ে গ্যাসসঙ্কট থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আলী ইকবাল মো: নূরুল্লাহ গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ১৭ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ সব ধরনের উন্নয়ন কর্মকা বন্ধ থাকার কথা। সরকারের এ নির্দেশনা অমান্য করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। অপর দিকে, তিতাসের সরবরাহ পাইপলাইন যে এলাকা দিয়ে বসানো হয়েছে ওইসব এলাকায় কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করতে হলে পাইপলাইন চিহ্নিতকরণের জন্য তিতাস কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার কথা রয়েছে। কিন্তু এ নির্দেশনাও অমান্য করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ আমিন বাজারের সালেহপুর এলাকায় উন্নয়নকাজ করতে গিয়ে তিতাসের দু’টি সরবরাহ পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এর ফলে রাজধানীজুড়ে গ্যাস সরবরাহ বিঘিœত হচ্ছে। একটানা ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা অক্লান্ত পরিশ্রম করে তিতাসের লোকজন ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের একটি সরবরাহ লাইন মেরামত করতে পেরেছে। এটি গতকাল সন্ধ্যায় খুলে দেয়া হয়েছে। কিন্তু ১২ ইঞ্চি ব্যাসের অপর পাইপলাইনটি এখনো মেরামত করা সম্ভব হয়নি। সালেহপুর ব্রিজের নিচে হওয়ায় পানি ও বালু নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এর পরেও আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রাতের মধ্যেই মেরামত করা যেতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।

তবে, তিতাসের অপর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ব্রিজের নিচে হওয়ায় বালু ও পানি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় পাইপলাইনে মেরামতের কাজ জটিল আকার ধারণ করেছে। এর পরেও চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা আজ বুধবার সম্ভব নাও হতে পারে। আর এটা হলে আজও পুরোপুরি গ্যাস সরবরাহ বিঘিœত হবে। সুতরাং রাজধানীজুড়ে গ্যাসসঙ্কট আজও থাকতে পারে বলে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রাজধানীজুড়ে হঠাৎ চরম গ্যাসসঙ্কট দেখা দেয়। গত সোমবার দিবাগত রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের চাপ কমে যায়। গতকাল সারা দিনই কোনো কোনো এলাকায় গ্যাসের চাপ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সকাল থেকে নগরীর অধিকাংশ বাসাবাড়িতে রান্না নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এমনকি সিএনজি স্টেশন ও ঢাকার আশপাশের কারখানাগুলোতেও গ্যাস সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এতে রাজধানীবাসীর দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে।

 

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/571194