২৪ মার্চ ২০২১, বুধবার, ১০:৩৩

ঢাকার বেশিরভাগ এলাকায় দিনভর গ্যাসের তীব্র সংকট

সড়কে কাজের সময় লাইন ফুটো হয়ে যাওয়ায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসা-বাড়িতে হঠাৎ গ্যাস সংকট দেখা গিয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে লাইনে গ্যাস না থাকায় দুর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকার বাসিন্দাদের। ফলে খাবারের জন্য ভিড় লেগেছে হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে।

এদিকে কখন নাগাদ গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। তিতাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লাইন ঠিক করার কাজ চলছে। পুরোপুরি লাইন ঠিক হতে ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।

তিতাসের জরুরি গ্যাস নিয়ন্ত্রণ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সোমবার রাত নয়টার দিকে গ্যাস লাইন লিকেজ হয়েছে। আমরা মেরামত করতে কাজ করছি। টেকনিক্যাল কাজ তো, কখন শেষ করা যাবে নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে একটু সময় লাগবে।’ জানা গেছে, আমিন বাজার এলাকায় সড়কে কাজের সময় সোমবার রাতে মাটির গভীরে একটি পাইপ ফেটে যাওয়ায় এই সমস্যা দেখা দেয়। তাৎক্ষণিক বিষয়টি টের না পেলেও সকালে বাসাবাড়িতে রান্না করতে গিয়ে গ্যাসের সমস্যা দেখতে পান গৃহিণীরা। কোথাও সামান্য গ্যাস থাকলেও অনেক জায়গায় চুলায় গ্যাস ছিল না। ফলে অনেকেই সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার হোটেল থেকে সংগ্রহ করতে বাধ্য হয়েছেন।

গোটা মোহাম্মদপুর এলাকায় কোনো বাসায় সকাল থেকে গ্যাস নেই। ফলে ওই এলাকার মূল সড়ক ও অলিগলির হোটেল এবং খাবারের দোকানে মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। অনেককে বাসার সামনে সড়কে ইট দিয়ে কৃত্রিম চুলা তৈরি করে রান্না করতে দেখা গেছে।

অনেকে বাসায় গ্যাস সংকট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন। গ্যাসের সমস্যার কারণ কী তাও জানতে চেয়ে অনেকে পোস্ট করেছেন। কেউ আবার এমন সমস্যার কথা তিতাসের পক্ষ থেকে বেশি করে প্রচার না করায় ক্ষোভও জানিয়েছেন।
ধানমন্ডি এলাকার বাসিন্দা জিনাত জাহান বলেন, ‘সকাল আটটা থেকে শঙ্করের বাসায় মোটেও গ্যাস নেই। রান্নাও করতে পারিনি।’

যদিও সেগুনবাগিচা এলাকার বাসিন্দা জান্নাতুল মাওয়া রূপা বলেন, ‘সকাল থেকে আমাদের এলাকায় অন্য দিনের চেয়ে গ্যাসের চাপ অনেক কম ছিল। এখনো তেমন চাপ নেই। এরমধ্যেই কষ্ট করে দিনের রান্না শেষ করতে হয়েছে।’ গণমাধ্যমকর্মী আমীন আল রশীদ ফেসবুকে পোস্টে পান্থপথ, হাজারিবাগ, কমলাপুর এলাকায় গ্যাস সংকটের কথা জানান। পোস্টে তিনি লিখেছেন, সকাল থেকে আমাদের বাসায় (পান্থপথ) গ্যাস নেই। হাজারিবাগ থেকে ছোট বোন ফোন করে বললো তার বাসায় গ্যাস নেই। আমার বাসায় আসবে লাঞ্চ করতে। আমার স্ত্রী বললেন, গ্যাস নেই। কমলাপুরে আরেক বোনের বাসায় ফোন করে জানা গেল, তাদের বাসায়ও গ্যাস নাই। আজিমপুরে বড়বোনের বাসায়ও নেই। আর কার কার বাসায় গ্যাস নেই? সমস্যা কী? পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার, পাতলাখান লেন, শাখারিবাজারসহ আশপাশের এলাকায়ও সকাল থেকে গ্যাস নেই বলে জানা গেছে।

যদিও তিতাস গ্যাসের জরুরি নম্বরে ফোন করে জানা যায়, আমিন বাজারে মাটির অনেক গভীরে ১৬ ইঞ্চির একটি পাইপ ফেটে যায়। এ কারণে মিরপুরের কিছু এলাকা, লালমাটিয়া, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, কলাবাগানসহ আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে ঢাকার বেশিরভাগ এলাকায় দিনভর গ্যাসের তীব্র সংকট চলছে।

https://dailysangram.com/post/447501