২১ মার্চ ২০২১, রবিবার, ১০:৩০

শাল্লায় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা-লুটপাট মূলহোতা যুবলীগ নেতা স্বাধীন গ্রেপ্তার

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামী যুবলীগ নেতা শহীদুল ইসলাম স্বাধীন (স্বাধীন মেম্বার)-কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেট। গত শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে নিশ্চিত করেন পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মো. খালেদ উজ জামান। শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রধান আসামী স্বাধীনকে সুনামগঞ্জ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে পিআইবি। স্বাধীনের কাছ থেকে হামলার মূলকারণ সম্পর্কে জানার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।

গত ১৭ মার্চ সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হিন্দুদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার পর থেকেই হামলাকারী হিসেবে ওঠে আসে যুবলীগ নেতা স্বাধীন মেম্বারের নাম। হামলার পরদিন স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়েরকৃত মামলায়ও স্বাধীন মেম্বারকে আসামী করা হয়। শহীদুল ইসলাম স্বাধীনের বাড়ি শাল্লার পার্শ্ববর্তী দিরাই উপজেলার নাচনি গ্রামে। তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।

স্বাধীনকে যুবলীগের ওয়ার্ড সভাপতি উল্লেখ কর একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও গতকাল শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে শহীদুল ইসলাম স্বাধীন যুবলীগের কেউ নয় বলে দাবি করে সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগ। জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার মঞ্জুর। স্বাধীনকে গ্রেফতারের পর থেকে শাস্তির দাবিতে সুনামগঞ্জে বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত।

এদিকে, শাল্লায় সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনার স্বার্থে সুনামগঞ্জে সকল ধরণের ধর্মীয় সভা, সমাবেশ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে আহ্বান জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। দুপুরে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে জেলার ওলামা মাশায়েখ ও ধর্মীয় নেতাদের সাথে এক মতবিনিময়কালে এই আহ্বান করেন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন।

উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ দিরাইয়ে সমাবেশ করে হেফাজতে ইসলাম। এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। পরদিন মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন নোয়াগাঁওয়ের এক হিন্দু যুবক। এর পরদিনই হিন্দু অধ্যুষিত ওই গ্রামটিতে হামলা চালিয়ে বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ও ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুই মামলায় ৫০ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫০০ জনকে আসামী করা হয়েছে।

https://dailysangram.com/post/447235