১৮ মার্চ ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৪:২১

বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে দুদক কাউকে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে না

সন্দেহভাজন কোন ব্যক্তির ব্যাপারে অনুসন্ধান চালানোর সময় অথবা দুর্নীতির মামলার আসামীকে এতদিন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিদেশ যেতে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করতো। এখন থেকে সুনির্দিষ্ট বিধি বা আইন প্রণয়ন না করা পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের মামলার আসামী বা সন্দেহভাজন (অনুসন্ধান চলাকালীন) কোনো ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার ওপর দুদক কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে না। দুদক যদি কোন ব্যক্তির বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রয়োজন মনে করে তাহলে আদালতে আবেদন করবে এবং সিদ্ধান্ত নেবেন বিশেষ জজ আদালত। তবে, এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ আদেশ দেয়ার সময় প্রয়োজনীয় গাইডলাইন ঠিক করে দেবেন আদালত। সম্প্রতি এক মামলার শুশানী শেষে এ বিষয়ে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। আদালত বলেছেন, বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার বিষয়ে দুদকের সুনির্দিষ্ট আইন বা বিধি নেই। এ কারণে এ বিষয়ে দ্রুত সুনির্দিষ্ট আইন বা বিধিমালা করা প্রয়োজন। তাই আশা করছি, এ বিষয়ে দুদক বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আইন বা বিধি করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

এ সংক্রান্ত আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী ও দুদকের আইনজীবী মো. খুরশিদ আলম খান।

বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে নরসিংদীর আতাউর রহমান ওরফে সুইডেন আতাউর রহমানের করা এক আবেদনের ওপর শুনানিতে গত ১৬ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এমন অভিমত দিয়েছেন।

আদালতে আতাউর রহমানের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মুন্সী মনিরুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট একেএম ফজলুল হক।

২০২০ সালের ২৪ আগস্ট আতাউর রহমানের সম্পদের তথ্য চেয়ে নোটিশ দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। এই নোটিশের পর ২২ অক্টোবর তিনি তার সম্পদের তথ্য দুদকে দাখিল করেছেন। এরপর দুদক অনুসন্ধানে নামে।

ওই অনুসন্ধানকালে দুদক গত বছরের ২০ ডিসেম্বর আতাউর রহমানের বিদেশ যাবার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) চিঠি দেয়।

ওই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন আতাউর রহমান। সেই রিটে জারি করা রুল শুনানি নিয়ে ১৬ মার্চ রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে ওই চিঠিকে অবৈধ ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী সাংবাদিকদের আরো জানান, আদালতের এই আদেশের ফলে এখন কোনো ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার ওপর দুদক এককভাবে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে না।

এই নিষেধাজ্ঞা দিতে হলে তাদের বিশেষ জজ আদালতে আবেদন দিতে হবে। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবেন তাই হবে। আর কোনো ব্যক্তির বিদেশ যেতে হলে তাকেও বিশেষ জজ আদালতের অনুমতি নিতে হবে।

https://dailysangram.com/post/446947