১৪ মার্চ ২০২১, রবিবার, ১:০৮

অ-গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়

এডিপির ৮৫% অর্থ ব্যয়ে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগবে না

কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড় করা শুরু হয়েছে। ফলে এখন থেকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ৮৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুমতির প্রয়োজন হবে না। কোভিড-১৯ (করোনা) কারণে গত জুলাই মাসে চলতি অর্থবছরের এডিপির ২৫ শতাংশ অর্থ ব্যয়ের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল মন্ত্রণালয়। এখন এই ২৫ শতাংশ অর্থের মধ্যে ১০ শতাংশ ছাড় করার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।

গেল সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা পরিপত্রে এ তথ্য জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘২০২০-২০২১ অর্থবছরের সংশোধিত কর্তৃত্ব অনুযায়ী মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, অধিদফতর বা পরিদফতর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন অনুমোদিত প্রকল্পের জিওবি (সরকারি) অংশের মোট বরাদ্দের ১৫ শতাংশ সংরক্ষিত রেখে অনূর্ধ্ব ৮৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় করা যাবে। এবং এ ৮৫ শতাংশ অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগ এবং প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কোনো সম্মতির প্রয়োজন হবে না। ওই অর্থ স্বয়ক্রিয়ভাবে ছাড় হয়েছে বলে গণ্য হবে। প্রকল্প পরিচালকরা এ অর্থ সরাসরি ব্যবহার করতে পারবেন।’

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করোনার কারণে গত জুলাই মাসে এডিপি শতভাগ অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে একটি লাগাম টানা হয়েছিল সেখানে বলা হয়েছিল এডিপির জিওবি অংশের ৭৫ অর্থ ব্যয় করা যাবে। বাকি ২৫ অর্থ ব্যয় করতে হলে অর্থবিভাগের অনুমতির প্রয়োজন হবে। এখন যেহেতু করোনা পরিস্থিতি কিছু ভালো হয়েছে, অন্যদিকে রাজস্ব আয় পরিস্থিতিও উন্নতি হচ্ছে তাই এডিপি আরো ১০ শতাংশ অর্থ ব্যয় করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ আগে যেমন ৭৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় করার জন্য আমাদের কোনো অনুমতির প্রয়োজন পড়ত না। এখন ৮৫ শতাংশ অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পিডিরা (প্রকল্প পরিচালক) আমাদের অনুমতি ছাড়াই অর্থ ব্যয় করতে পারবে। তিনি আরো বলেন, পরিস্থিতির আরো উন্নতি হলে শতকরা শতভাগ অর্থ ব্যয় করারও অনুমতি দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে অর্থ বিভাগ থেকে জারি করা এক পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিভুক্ত প্রকল্পগুলোর অগ্রাধিকার নির্ধারণ এবং সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সীমিত সম্পদের ব্যয়সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে চলতি অর্থবছরের এডিপিভুক্ত প্রকল্পগুলোর উচ্চ/মধ্যম/নি¤œ অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয়/বিভাগ/ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং অধীনস্থ দফতর/সংস্থাগুলো ‘উচ্চ অগ্রাধিকার’ চিহ্নিত প্রকল্পগুলো যথানিয়মে বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখবে। পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘মধ্যম অগ্রাধিকার’ চিহ্নিত প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে প্রকল্পের যেসব খাতে অর্থ ব্যবহার অবশ্যম্ভাবী বলে বিবেচিত হবে, মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং অধীনস্থ দফতর/সংস্থাগুলো স্বীয় বিবেচনায় সেসব খাতে অর্থ ব্যয় করবে। এ ক্ষেত্রে যেসব অর্থনৈতিক কোডের ব্যয় পরিহার করা সম্ভব, সেসব কোডের ব্যয় আবশ্যিকভাবে পরিহার করতে হবে।

সাধারণ এডিপি মোট প্রকল্পের ৪০ ভাগকে উচ্চ অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাকি ৬০ ভাগের অর্ধেক অর্থাৎ, ৩০ ভাগ মধ্য অগ্রাধিকার এবং বাকি ৩০ ভাগ নিম্ন বা কম অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে দুই লাখ পাঁচ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার এডিপিতে প্রকল্প রয়েছে এক হাজার ৫৮৮টি। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ বা ৪৭১ প্রকল্পের বিপরীতে অর্থছাড় বন্ধ করে দেয়া হয়।

 

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/568915