পেঁয়াজের বাজারে আবারো নৈরাজ্য
১৩ মার্চ ২০২১, শনিবার, ১:১৯

পেঁয়াজের বাজারে আবারো নৈরাজ্য

কেজিতে বেড়েছে ১০-১৫ টাকা

মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধান। এই সময়ে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫-২০ টাকা। বাজারে এখন ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা। পাইকারি বাজারের চেয়ে খুচরা বাজারে দামের পার্থক্য কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা। অনেকে অভিযোগ করেছেন, পেঁয়াজের বাজারে এই নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য বিক্রেতারাই দায়ী। বেড়েছে চালের দামও। প্রায় সব ধরনের চালই কেজিপ্রতি দু-এক টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গত সপ্তাহের চেয়ে। শীতের সবজির দাম নাগালের মধ্যে থাকলেও ওগুলো এখন আর মানুষ কিনতে চায় না। বাজার ঘুরে গ্রীষ্মকালীন সবজির বেশ আনাগোনা দেখা গেছে, তবে দাম অনেকটাই বেশি।

গতকাল রাজধানীর মানিকনগর ও গোপীবাগসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজের দাম আবারো ঊর্ধ্বমুখী। এক সপ্তাহের ব্যবধানে গতকাল পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে ৫০-৫৫ টাকা। আর নিম্নমানের কিছু পেঁয়াজ ৪৫ টাকায়ও বিক্রি হতে দেখা যায়। তবে পাইকারি বাজারে গতকাল পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে দেশীটা প্রতি কেজি ৩৮-৪০, হল্যান্ডের পেঁয়াজ ২৮-৩০ আর ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ ৩৯ টাকা কেজি। টঙ্গীর পেঁয়াজ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান সবুজ এন্ড ব্রাদার্সের মালিক সবুজ হোসেন মাতুব্বর গতকাল বলেন, খুচরা বাজারের সাথে পাইকারি বাজারের কোনো সামঞ্জস্য নেই। তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম অত বাড়েনি, যতটা খুচরা বাজারে বাড়ানো হয়েছে।

বাজারে শীতের সবজি মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে। তবে স্বাদ না লাগায় এসব সবজি এখন মানুষ আর কিনতে চান না। সবজির মানও খারাপ। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শালগম বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, গাজর ২০ থেকে ৩০ টাকা, শিম ৩০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০-৫০ টাকা, টমেটো ১৫-২০ টাকা, বরবটি ৪০-৫০ টাকা। প্রতি পিস লাউ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, বাঁধাকপি প্রতি পিস ১০-২০ টাকা। মিষ্টিকুমড়ার প্রতি কেজি ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০-৫০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, লতি ৬০ টাকা। বাজারে দেখা গেছে ১৬০ টাকা দামের সজনেও।

আলুর দাম কমে ১৮ টাকা হয়েছিল। গতকাল দুই টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৬০ টাকা। পেঁপে প্রতি কেজি ২০ টাকা, ক্ষীরা ৩০ টাকা, শসা ৪০ টাকা। মটরশুঁটি প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকা। লেবুর দাম বেড়ে প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। আর আমদানি করা রসুন প্রতি কেজি ১২০ টাকা। সদ্য ক্ষেত থেকে আনা দেশী রসুন প্রতি কেজি ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদার কেজি ৬০ টাকা।
বাজারে প্রতি কেজি বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা, মিনিকেট ৬৫ টাকা, নাজির ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, স্বর্ণা চাল ৪৮ টাকা, পোলাওয়ের চাল ৯০ থেকে ১০০ টাকা। খোলা ভোজ্যতেল প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা। পাঁচ টাকা দাম কমে প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন ১৫০ টাকা। দেশী মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। কেজিতে ৫০ টাকা দাম বেড়ে প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকা ও ব্রয়লার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায় এবং লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি ২০০ থেকে ১৯০ টাকা।
বাজারে মাছ, গরু ও খাসির গোশতের ক্ষেত্রে দামের তেমন কোনো তারতম্য নেই। গরুর গোশত বাজার ও দোকানভেদে ৫০ টাকা কম-বেশি বিক্রি হচ্ছে। কোনো কোনো দোকানে গরুর গোশতের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা। আবার কোনো কোনো দোকানে দাম ৬০০ টাকা কেজি। খাসির কেজি ৮০০-৮৫০ টাকা। বকরি বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৭৫০ টাকায়।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/568827/