২৮ মার্চ ২০১৭, মঙ্গলবার, ১০:৫৯

নেত্রকোনার ৫৭ নদী পানিশূন্য

নেত্রকোনার ঐতিহ্যবাহী সোমেশ্বরী, কংস, মগড়া, ধনুসহ জেলার ৫৭টি নদী প্রায় পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। নদীতে পানি সংকট থাকায় ব্যাহত হচ্ছে সেচ ও নৌ যোগাযোগ। ১৮৯৭ সালের ১২ জুন এক ভূমিকম্পের পর ঝলচ, ঝিনাই ও কানাই নামের বড় কয়েকটি নদ-নদীর বিলুপ্তির পথ ধরে বর্তমানে নেত্রকোনার ছোট-বড় ৫৭টি নদীতে চলছে পানির তীব্র সংকট। প্রতি বছর পাহাড়ি ঢলে নেমে আসা পলিতে ভরাট হয়েছে জেলার প্রতিটি নদী। খননের অভাবে জেলার কংস, সোমেশ্বরী, মগড়া, ধনুসহ প্রায় সবক'টি নদীতে পানির সংকট। আর পানি না থাকায় নদীর ওপর দিয়ে চলাচল করছে এলাকাবাসী।

নেত্রকোনার বুক চিরে বয়ে যাওয়া মগড়া নদীও এখন বিভিন্ন এলাকায় একেবারে পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। বর্ষাকালে পাহাড়ি ঢলের পানিতে আসা পলি পড়ে জেলার দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদী ভরাট হয়ে গেছে। ফলে নৌ চলাচল যেমন বন্ধ হয়ে গেছে, তেমনি বোরো জমিতে সেচের সমস্যাও দেখা দিয়েছে। ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলা ও নেত্রকোনার পূর্বধলার জারিয়া এলাকার জেলা শহর দিয়ে প্রবাহিত মগড়া নদীটির বর্তমান অবস্থা একেবারে নাজুক। এই নদী জেলার আটপাড়া পর্যন্ত গেছে। নদীর কোনো কোনো স্থানে পানি নেই। ওইসব স্থানে এখন চলছে বোরো আবাদ। এক সময়ের প্রমত্তা মগড়া নদী ছিল বেশ প্রশস্ত। এখন নদী ভরাট হতে হতে এমন পর্যায়ে পেঁৗছেছে যে, এটিকে খালও বলা যায় না। আশঙ্কা করা হচ্ছে, জরুরিভাবে নদী খনন করা না হলে ১৫-২০ বছরের মধ্যে এ নদী বিলীন হয়ে যাবে। তখন মগড়া নদী অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। এ মগড়া নদীর উৎসমুখ ভরাট হয়ে যাওয়ায় নদীর এ অবস্থা হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার প্রধান নদী মগড়ার তীর উদ্ধার, অবৈধ দখলমুক্ত করা এবং এ লক্ষ্যে উচ্ছেদ অভিযান শুরুর জন্য সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের অফিস কক্ষে জেলা নদী কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসন থেকে দখল ছেড়ে দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে দখলদারদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ওই সভায় নদী কমিশনের সদস্য মো. আলা উদ্দিন জানান, নদী রক্ষায় নদীর প্রকৃত গতিপথ নির্ণয়ের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দ্রুত নেত্রকোনার কয়েকটি নদী খননের উদ্যোগ নেওয়া হবে। নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু তাহের জানান, পাহাড়ি ঢলে পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে কিছু নদী। বর্ষার পরই নদী শুকিয়ে যায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কাবিটা প্রকল্পের আওতায় জেলার ১২টি প্রধান নদীসহ কয়েকটি খাল খননের ডিপিপি তৈরি করে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের অনুমোদন হলেই নদী খনন শুরু হবে।

 

http://bangla.samakal.net/2017/03/28/280420#sthash.hpfdPnVk.dpufhttp://bangla.samakal.net/2017/03/28/280420