১০ মার্চ ২০২১, বুধবার, ৫:৪৯

সব নির্মাণ উপকরণের দাম বাড়ায় মধ্যবিত্তের বাড়ি নির্মাণ এখন দুঃস্বপ্ন

মুহাম্মাদ আখতারুজ্জামান : গত বছরের কেনা কিছু ইট দিয়ে বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন মো: কামরুল হাসান। নির্মাণ খাতের সকল উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মাঝপথেই থামিয়ে দিতে হয়েছে কাজ। রাজধানীর একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরির সুবাদে বেশ কিছু টাকা জমিয়েছিলেন তিনি। সেই টাকা দিয়েই গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গাতে পৈত্রিক জমিতে বাড়ি নির্মাণের কাজে হাত দেন। স্বপ্ন ছিল বাড়ির অভাব পূরণ করা। মহামারি করোনায় একদিকে বেতন কমেছে অন্যদিকে দাম বেড়েছে নির্মাণ উপকরণের। তাই কামরুলের বাড়ি নির্মাণের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না। নির্মাণ সামগ্রির প্রধান উপকরণ রড, সিমেন্ট ও ইটের দাম আকাশছোঁয়া। বেড়েছে বালির দামও। তাই মধ্যবিত্ত পরিবারের হাজারো কামরুলের বাড়ি বানানো স্বপ্ন রূপ নিয়েছে দুঃস্বপ্নে।

জানা গেছে, কয়েক মাস ধরে রডের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। বিগত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে রড। রাজধানীর খুচরা ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ওয়ান-ইলেভেনের (২০০৭ সালের জানুয়ারির পর) সময় দেশজুড়ে দেখা দেয়া অনিয়শ্চয়তার মধ্যে ভালো মানের (৬০ গ্রেডের ওপরে) এক টন রডের দাম ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। এটাই দেশের বাজারে এখন পর্যন্ত রডের সর্বোচ্চ দাম। সম্প্রতি রডের দাম বেড়ে ওই সময়কার কাছাকাছি পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ভালো মানের এক টন রড কোম্পানিভেদে এখন খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকায়। রডের দাম বাড়ার একমাত্র কারণ বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়া। করোনার কারণে রডের কাঁচামাল সরবরাহে এক ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এখনো তার প্রভাব রয়ে গেছে। রডের এই দাম বাড়ার কারণে হিসেবে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির কারণে নির্মাণ কাজে এক প্রকার স্থবিরতা নেমে আসে। তবে কয়েক মাস ধরে রডের বিক্রি বেড়ে গেছে। চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রডের দামও বেড়েছে। রড উৎপাদকরা বলছেন, দেশের বাজারে যে রড উৎপাদন হয় তার সিংহভাগ কাঁচামাল আনতে হয় বিদেশ থেকে। আন্তর্জাতিক বাজারে রডের কাঁচামালের দাম বেড়ে গেছে। এমনকি চাহিদার তুলনায় কাঁচামালের ঘাটতিও রয়েছে। মূলত কাঁচামালের দাম বাড়ার কারণে রডের দাম বেড়ে গেছে।

পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার শুরুর দিকে কয়েক মাস আমাদের বিক্রিই ছিল না। তবে দুই-তিন মাস ধরে বিক্রি ভালো হচ্ছে। বিক্রি বাড়ার পাশাপাশি রডের দামও বেড়ে গেছে। সব কোম্পানির রডের দাম টনপ্রতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এ বিষয়ে আরএসআরএম স্টিলের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ মইন উদ্দিন জানান, রডের দাম ডিসেম্বরে এক দফা বাড়ে। এরপর কিছুটা কমলেও আবার দাম বেড়েছে। একটি পণ্যের দাম বাড়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকে, এখন রডের দাম বাড়ার ক্ষেত্রেও অনেকগুলো কারণ আছে। তবে রডের দাম বাড়ার মূল কারণ স্টেপ (রডের কাঁচামাল)। স্টেপের দাম বেড়ে গেলে রডের দাম হু হু করে বেড়ে যায়। করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী দীর্ঘদিন স্টেপ সরবরাহ বন্ধ ছিল। বন্ধ থাকার কারণে স্টেপ সেভাবে পাওয়া যায়নি। এমনকি যারা স্টেপ নিজেরা বিক্রি করে, তারাও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে স্টেপ কিনেছে। যে কারণে ২৫-২৬ হাজার টাকার স্টেপের দাম ৪০-৪৫ হাজার টাকা হয়ে যায়। স্টেপের এমন দাম বাড়ার কারণেই রডের দাম বেড়েছে। রডের দাম বাড়ার পেছনে চাহিদা বাড়ার একটি প্রভাব থাকতে পারে। তবে সেটা খুব বড় কারণ নয়। করোনার কারণে রডের কাঁচামাল সরবরাহে এক ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এখনো তার প্রভাব রয়ে গেছে। বাজারে কাঁচামালের যে চাহিদা রয়েছে, তার তুলনায় মালের ঘাটতি রয়েছে।

এদিকে রডের পর এবার বাজারে নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে সিমেন্টের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিব্যাগ সিমেন্টে দাম বেড়েছে কোম্পানিভেদে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সিমেন্টের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। পাশাপাশি তাদের দাবি, বাড়তি বিপণন খরচের প্রভাবও পড়েছে সিমেন্ট বাজারে। সামনে সিমেন্টের দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। আর সিমেন্ট উৎপাদকরা বলছেন, কাঁচামাল ও জাহাজ ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় সিমেন্টের দাম বাড়ার অন্যতম কারণ। এর সঙ্গে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায়ূূ দাম বাড়ার আরেকটি কারণ। সিমেন্টের দাম বাড়ার বিষয়ে রাজধানীর ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত এক সপ্তাহে কোম্পানিভেদে সিমেন্টের দাম প্রতি বস্তায় ১০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। এতে এখন কোম্পানিভেদে এক বস্তা সিমেন্ট ৪০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সিমেন্ট কোম্পানির লোকেরা যে তথ্য দিচ্ছে, তাতে দুই-একদিনের মধ্যে সিমেন্টের দাম প্রতি বস্তায় আরও ১০-২০ টাকা বেড়ে যেতে পারে। আরামিট সিমেন্টের কোম্পানি সচিব সৈয়দ কামরুজ্জামান জানান, সিমেন্টের দাম বাড়ার অন্যতম প্রধান কারণ কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়া। বিশ্ববাজারে সিমেন্টের কাঁচামালের দাম অনেক বেড়ে গেছে। এর সঙ্গে জাহাজ ভাড়াও বেড়েছে। এসব কারণেই এখন সিমেন্টের দাম বেড়েছে।

সিমেন্ট খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, এ খাতের সবগুলো কাঁচামালই আমদানিনির্ভর। বৈশ্বিক বাজারে এ কাঁচামাল ও জাহাজ ভাড়া বেড়েছে। সিমেন্ট উৎপাদনে প্রধান পাঁচটি কাঁচামাল হলো ক্লিংকার, লাইমস্টোন, স্ল্যাগ, ফ্লাই অ্যাশ ও জিপসাম। মূলত সিমেন্ট তৈরিতে ব্যবহৃত ক্লিংকারের দাম আগের তুলনায় অনেকটা বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে সিমেন্টের দামের ওপর। ক্লিংকারের দাম কয়েক দফায় গত এক মাসে ৯ ডলার বা ৭৬৫ টাকা বেড়েছে প্রতি টনে। এতে বস্তাপ্রতি ক্লিংকারের খরচ বেড়েছে ৩৮ টাকার ওপরে। এছাড়া জাহাজ ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ যোগ করলে ৬০ থেকে ৭০ টাকা উৎপাদন খরচ বেড়েছে প্রতি বস্তায়। ফলে সিমেন্টের দাম না বাড়িয়ে কোনো উপায় নেই। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে ক্লিংকার প্রস্তুতে ব্যবহৃত জ্বালানি কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্লিংকারের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। আর চীন হঠাৎ করে কয়লার আমদানি বাড়ানোর ফলে দাম অব্যাহতভাবে বাড়ছে। এফওবিতে বা উৎপাদন পর্যায়ে যেখানে প্রতি টন কয়লার মূল্য ছিল ৪০ থেকে ৪২ ডলার, তা এখন দাঁড়িয়েছে ৮২ ডলারে। এসব কারণেই আন্তর্জাতিক বাজারে সিমেন্টের অন্যতম মূল কাঁচামাল ক্লিংকারের দাম বেড়েই চলেছে, যার প্রভাব দেশীয় সিমেন্ট খাতেও পড়ছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ) এর প্রেসিডেন্ট মো. আলমগীর কবির জানান, করোনা পরবর্তীতে পশ্চিমা দেশগুলোতে পুরোদমে অবকাঠামো উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া এশিয়া অঞ্চলে নির্মাণ সামগ্রীর চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। কিন্তু করোনার সময়ে নির্মাণ সামগ্রী উৎপাদনের মূল কাঁচামাল উৎপাদন তেমন হয়নি। যার ফলে চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যে একটি বড় ধরনের গ্যাপ তৈরি হয়েছে। কোনো কোনো দেশ প্রয়োজনীয় গুরুত্ব বিবেচনায় বেশি দামে নির্মাণ সামগ্রীর কাঁচামাল এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে উৎপাদিত নির্মাণ সামগ্রী ক্রয় করছে। ক্রাউন সিমেন্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও অ্যাসিসট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) সারোয়ার জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল ক্লিংকারসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি মেট্রিকটন ক্লিংকারের দাম ৪৬ ডলার থেকে ৫৫ ডলার হয়েছে। অন্যান্য কাঁচামালের মধ্যে লাইমস্টোন, স্ল্যাগ, ফ্লাই অ্যাশ ও জিপসাম এগুলোর দাম প্রতি মেট্রিকটনে ৩ থেকে ৪ ডলার করে বেড়েছে। পাশাপাশি জাহাজ ভাড়াও বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। তার একটা প্রভাব আমাদের বাজারে পড়েছে।

রিহ্যাব বলছে, নির্মাণ সামগ্রীর মধ্যে অন্যতম উপাদান হলো সিমেন্ট। গত কয়েক মাস ধরে এই পণ্যটির আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে। এর কয়েকটি কারণ রয়েছে, পণ্য পরিবহনের চাপে জাহাজভাড়া গত নভেম্বর থেকেই উর্ধ্বমুখী। গত কয়েক মাসে জাহাজ ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, বেড়েছে ফুয়েল, গ্যাসের দাম, সিমেন্ট তৈরির কাঁচামালের দাম দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। ফলে সকল ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ডেভলপার কোম্পানিগুলো অনেক লোকসানে পড়ছে। শুধু আমরা না, সরকারেরও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশে অবকাঠামো উন্নয়নের প্রধান উপকরণের মধ্যে আছে সিমেন্ট, রড, পাথর ও ইট। এসব নির্মাণ উপকরণের সামনে চাহিদা বাড়বে। পদ্মা সেতু হলে দক্ষিণ বঙ্গের ২১টি জেলার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ তৈরি হবে। এই ২১টি জেলায় শিল্পকারখানা, বাণিজ্যিক ভবনের মতো অবকাঠামো তৈরি হবে। ঢাকার ছোট-বড় শিল্পকারখানা স্থানান্তর হবে। নতুন কারখানা হবে। আবার কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণকাজ শেষ হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামে অবকাঠামো উন্নয়নে গতি বাড়বে। এতে অবকাঠামো নির্মাণের প্রধান উপকরণ সিমেন্টের চাহিদা বাড়বে। এই উপকরণের দাম যদি অস্থিতিশীল হয়, তাহলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও স্থবির হবে। ইতিমধ্যে রডের দাম বাড়ায় দেশে জরুরি ছাড়া ব্যক্তিপর্যায়ে অবকাঠামো নির্মাণে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। সিমেন্ট প্রস্তুতকারক সমিতির হিসাবে, বর্তমানে দেশে ৩৭টি সিমেন্ট কারখানা রয়েছে। গত ৬ বছরে সিমেন্ট বিক্রিতে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০১৬ সালে। ২০১৫ সালের তুলনায় সে বছর ১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়। এরপর ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে সিমেন্ট বিক্রি বেড়েছিল প্রায় ১৬ শতাংশ। সে বছর দেশে ৩ কোটি ১৩ লাখ টন সিমেন্ট বিক্রি হয়। অর্থাৎ ১ বছরে বাড়তি ৪৩ লাখ টন সিমেন্ট বিক্রি হয়েছিল। ২০২০ সাল বাদ দিলে বছরে গড়ে ৮ থেকে ১০ শতাংশ গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে এই খাতে।

গত দুই দশকে দেশে সিমেন্টের ব্যবহার কয়েক গুণ বেড়েছে। ২০০০ সালে মাথাপিছু সিমেন্টের ব্যবহার ছিল মাত্র ৪৫ কেজি। এ মাথাপিছু সিমেন্টের ব্যবহার ২০১৫-তে এসে দাঁড়ায় ১৩০ কেজিতে, যা ২০১৬-তে ১৫৩ কেজি, ২০১৭-তে ১৬৫ কেজি, ২০১৮-তে ১৮৮ কেজি এবং ২০১৯-এর শেষে এসে ২০০ কেজিতে উন্নীত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের ক্রমবর্ধমান বাজারে নিজেদের অবস্থান সংহত করতে বেশ কয়েক বছর ধরেই উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াচ্ছে সিমেন্ট খাতের কোম্পানিগুলো। চাহিদার তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি উৎপাদন সক্ষমতার কারণে এ খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে বাজার দখলের প্রতিযোগিতা বেশ তীব্র। এর ফলে কোনো কারণে সিমেন্ট উৎপাদনের ব্যয় বাড়লেও সব কোম্পানির সমন্বিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সিমেন্টের দাম বাড়ানোর সুযোগ সীমিত। তাছাড়া কোনো কোম্পানি সিমেন্টের দাম বাড়ালে প্রতিযোগী কোম্পানি বাজার দখলের জন্য দাম কমিয়ে দেয়ার নজিরও রয়েছে। দেশের সিমেন্টের বাজারের ৮১ শতাংশই শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের দখলে। এর মধ্যে বাজার হিস্যার দিক দিয়ে শীর্ষে রয়েছে শাহ সিমেন্ট। তাছাড়া লাফার্জহোলসিম, বসুন্ধরা, সেভেন রিংস, হাইডেলবার্গ, এমআই সিমেন্ট, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, ফ্রেশ সিমেন্ট, আকিজ সিমেন্ট ও কনফিডেন্স সিমেন্ট দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড।

বিসিএমএ জানিয়েছে, বর্তমানে সক্রিয় সিমেন্ট কারখানা রয়েছে প্রায় ৩৫টি। দেশে সিমেন্টের চাহিদা বছরে ৩ কোটি ৫০ লাখ টন হলেও কারখানাগুলোর মোট উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ৮ কোটি টন। আগামী তিন বছরে এর সঙ্গে আরো ১ কোটি ১০ লাখ টন সক্ষমতা যোগ হবে। এ খাতে উদ্যোক্তাদের প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংকঋণ রয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। তাছাড়া এ শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কয়েক লাখেরও বেশি নির্মাণ শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা জড়িত।
এদিকে গত বছরের তুলনায় ইটের দাম বেড়েছে প্রতি গাড়িতে (দুই হাজার) চার হাজার টাকা। গত বছর চুয়াডাঙ্গাতে প্রতি গাড়ি ইট বিক্রি হয় ১৪ হাজার টাকায়। এ বছর তা বেড়ে ১৮ হাজার টাকা। দাম বাড়ার কারণ হিসাবে ক্রেতারা বলছেন, ইট ভাটার মালিকদের বিভিন্ন ত্রুটির কারণে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। তারপর থেকেই ইটের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ভাটা মালিকরা। ভাটা মালিকদের এসোসিয়েশন ইটের দাম বৃদ্ধি করে নির্ধারণ করে দিয়েছে। এখন কোথাও ১৮ হাজারের নিচে ইটের গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। সেই টাকা গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। নির্মাণ উপকণের ত্রিমুখী বৃদ্ধির ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে নিমার্ণ কাজ। এছাড়া বালির দামও বেড়েছে ব্যাপকহারে। বিক্রেতারা বলছেন গাড়ি ভাড়া বেড়ে যাওয়া বালির দাম বেড়েছে। ফলে এ বছর মধ্যবিত্তদের বাড়ি তৈরি করা দুঃস্বপ্নে রূপ নিয়েছে।

https://dailysangram.com/post/446130