১০ মার্চ ২০২১, বুধবার, ৫:২৯

রপ্তানি আয়ে ছন্দপতন

ইবনে নূরুল হুদা : জাতীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ, গতিশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ করতে হলে অভ্যন্তরীণ আয়ের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও গতিশীলতা আনা দরকার। মূলত অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে হলে জাতীয় আয়কে বহুমুখীকরণ করে রাষ্ট্রের সকল সম্ভবনাকে একযোগে কাজে লাগানোর কোন বিকল্প নেই। অভ্যন্তরীণ সম্পদের সুষম ব্যবহার, দক্ষ জনশক্তি তৈরি, বৈদেশিক শ্রমবাজার সম্প্রসারণ এবং আমদানি-রপ্তানিতে ভারসাম্য রক্ষা, দেশীয় পণ্যের বৈদেশিক বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। তৈরি পোশাক শিল্প আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অতিগুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলেও করোনা মহামারির নেতিবাচক প্রভাবে এখন খানিকটা বিপর্যস্ত। একই সাথে রপ্তানি আয়ও কমেছে আশঙ্কাজনকভাবে। যা আমাদের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

নির্দিষ্ট কিছু খাতে বৈদেশিক আয় বৃদ্ধি পেলেও রপ্তানি আয়ে বড় ধরনের ছন্দপতন ঘটেছে। যদিও প্রবাসীদের পাঠানো আয় আমাদেরকে বেশ আশান্বিত করেছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানাগেছে, সদ্য সমাপ্ত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসীরা ১শ’ ৭৮ কোটি মার্কিন ডলার আয় পাঠিয়েছেন। গত বছরের একই মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১৪৫ কোটি ডলার। সেই হিসাবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেড়েছে প্রায় ২৩ শতাংশ। এদিকে প্রবাসী আয়ের কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ৪১২ কোটি ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। যা খুবই ইতিবাচক।

সূত্রমতে, গত জানুয়ারি মাসে প্রবাসীরা ১শ’ ৯৬ কোটি ডলারের আয় পাঠিয়েছিলেন। যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১৬ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে প্রবাসীরা ১শ’ ৬৪ কোটি ডলার বা ১৩ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা পাঠিয়েছিলেন। গত বছরের জানুয়ারির তুলনায় এবার একই মাসে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় বেড়েছে ২ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসী আয় এসেছে ১৫ হাজার ১৩০ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসে প্রবাসীরা সব মিলিয়ে ১ হাজার ৬৬৮ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন। আগের অর্থবছরের একই সময়ে আয় এসেছিল ১ হাজার ২৪৯ কোটি ডলার।

একথা অস্বীকার করার সুযোগ নেই যে, করোনাভাইরাসের মধ্যে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ অনেক বেড়েছে। মূলত, যোগাযোগ সীমিত হয়ে পড়ায় অবৈধ পথে দেশে টাকা আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশীরা অবস্থান করেন, এমন অনেক দেশে করোনার কারণে বিশেষ ভাতা দেয়া হচ্ছে। গত বছরের এপ্রিল ও মে মাস ছাড়া বাকি সময়ে পণ্য রপ্তানিতেও ভালো আয় হয়েছে। এ সময়ে আমদানি ব্যয় অবশ্য বেশ কমেছে। এ কারণে রিজার্ভে নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। যা জাতীয় অর্থনীতির জন্য খুবই সহায়ক।

তবে এক্ষেত্রে রপ্তানি আয় আমাদেরকে খানিকটা হতাশই করেছে বলতে হবে। কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে রপ্তানি আয়ে বড় ধরনের ছন্দপতন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪৫.৫০ বিলিয়ন ডলার বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রপ্তানি আয় কমে গেছে ২৫.৯৯ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের রপ্তানি আয় রেকর্ড হয়েছিল ৪০.৫৩ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের শেষ মাসে রপ্তানি আয় ছিল ২.৭১ বিলিয়ন ডলার। যা ৩.৯৪ বিলিয়ন ডলার মাসিক রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১.১৫ শতাংশ কম।

তৈরি পোশাক পণ্যের চালান পতনের কারণে মূলত রপ্তানি আয় কমে গেছে। শুধু পোশাক খাতই জাতীয় রপ্তানি আয়ে ৮৪ শতাংশ অবদান রেখে আসছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে তৈরি পোশাক পণ্যের রপ্তানি আয় ১৮.১২ শতাংশ কমে ২৭.৯৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

মূলত, করোনা মহামারির ধাক্কায় নেতিবাচক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি দিয়েই শেষ হয়েছে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস। এ সময় আয় হয়েছে ১ হাজার ৯২৩ কোটি ইউএস ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১ হাজার ৯৩০ কোটি ডলার বা ০.৩৬ শতাংশ কম। এ আয় নির্ধারিত কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২.২৫ শতাংশ কম। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, ডিসেম্বর মাসে প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করতে পারেনি দেশের রপ্তানি আয়ের শীর্ষ খাত তৈরি পোশাক। চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে পোশাক রপ্তানি হয়েছে এক হাজার ৫৫৪ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। এই আয় গত অর্থবছরের তুলনায় ২.৯৯ শতাংশ কম। একই সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কমেছে ৪.১২ শতাংশ।

ইপিবির প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে সব ধরনের পণ্য রপ্তানিতে বৈদেশিক মুদ্রার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চার হাজার ১০০ কোটি ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে পণ্য খাতের রপ্তানি আয় হয়েছে তিন হাজার ৩৬৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস (জুলাই-ডিসেম্বর) রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ৯৬৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এই ছয় মাসে আয় এসেছে এক হাজার ৯২৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২.২৫ শতাংশ কম। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছিল এক হাজার ৯৩০ কোটি ২১ লাখ ডলার। সেই হিসাবে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে ০.৩৬ শতাংশ। এদিকে একক মাস হিসেবে ডিসেম্বরেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কম হয়েছে ৬.১১ শতাংশ। ডিসেম্বর মাসে আয় হয়েছে ৩৩০ কোটি ৯৮ ডলার। এ সময় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫২ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত ছয় মাসে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে আয় এসেছে ৮৫২ কোটি ৬১ লাখ ডলার, যা আগের বছর একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৩.৯০ শতাংশ। তবে ওভেন পোশাকে আয় কমেছে ১০.২২ শতাংশ, এ সময় আয় হয় ৭০১ কোটি ৯৩ লাখ ডলার। এ ছাড়া ওভেনে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কমেছে ১৪.৩৯ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় পাট ও পাটজাত পণ্য পণ্যের আয় বেড়েছে ৩০.৫৬ শতাংশ, আয় হয়েছে ৬৬ কোটি ৬১ লাখ ডলার। হোম টেক্সটাইলে আয় বেড়েছে ৪৭.৯৩ শতাংশ, আয় হয়েছে ৫৪ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। প্রকৌশল যন্ত্রাংশ আয় বেড়েছে ৭৭.৩৫ শতাংশ, আয় হয়েছে ছয় কোটি ৩১ লাখ ডলার। ওষুধে আয় বেড়েছে ১৭.১৫ শতাংশ আর আয় হয়েছে আট কোটি ৬৩ লাখ ডলার। হস্তশিল্প থেকে আয় এসেছে এক কোটি ৬৫ লাখ ডলার। আর আয় বেড়েছে ৪৮.৭০ শতাংশ এবং বাইসাইকেলে আয় হয়েছে ছয় কোটি ৪৭ লাখ ডলার প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৩.৯২ শতাংশ। কিন্তু নতুন অর্থবছরে সে ধারাবাহিকতা রক্ষিত হয়নি।

এদিকে গত অর্থবছরে একই সময়ের তুলনায় যেসব পণ্য রপ্তানি আয় কমেছে এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে চিংড়ি মাছ, আয় কমেছে ১০.৪২ শতাংশ আর আয় হয়েছে ১৯ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। আর শাক-সবজিতে আয় কমেছে ১০.২৬ শতাংশ আর আয় হয়েছে ১৯ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। সিরামিক পণ্যে আয় কমেছে ১৬.২৬ শতাংশ আর আয় হয়েছে এক কোটি ৫০ লাখ ডলার। চামড়ায় আয় কমেছে ১৬.৮৮ শতাংশ আর আয় হয়েছে পাঁচ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। চামড়ার জুতায় আয় কমেছে ১.৯৮ শতাংশ আর আয় হয়েছে ২৭ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে আয় কমেছে ৬.২৪ শতাংশ আয় হয়েছে ৪৪ কোটি ৬১ লাখ ডলার।

সরকার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার প্রথম ধাক্কায় যেভাবে দেশের রপ্তানিতে প্রভাব পড়েছিল সেই তুলনায় দ্বিতীয় ধাক্কায় তেমনটা প্রভাব পড়েনি। প্রধান বাজারগুলোতে সীমিত আকারে রপ্তানি হওয়ার ফলে এমনটা হয়েছে। সে ধারা এখনও অব্যাহত আছে। আর এ সমস্যা সহসায় কেটে যাবে বলে আশাবাদী হওয়ার মত কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ফলে আমাদেরকে আপাতত আশাহতই থাকতে হচ্ছে।

এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসের রপ্তানি আয়ের একটি পরিসংখ্যান সম্প্রতি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে ২ হাজার ৫শ ৮৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। আয়ের এই পরিমাণ কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩.৬১ শতাংশ ও গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১.৪৫ শতাংশ কম। একক মাস হিসেবে ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি হয়েছে ৩১৯ কোটি ডলারের পণ্য। এই মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩৫ কোটি ডলার। অর্থাৎ আয় হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪.৮৩ ও ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় ৩.৯২ শতাংশ কম।

ইপিবি’র দেয়া তথ্যে দেখা যায়, ফেব্রুয়ারিতে পিছিয়ে পড়েছে দেশের রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্প। গেল ৮ মাসে এ খাতের আয় হয়েছে ২১০৩ কোটি ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪.৮৭ ও গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩.৭৩ শতাংশ কম। এদিকে বাজার হারানোর স্রোতেই ভাসছে ওভেন পোশাক। এ সময়ে ওভেন থেকে আয়ের কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ১শ’ ৮০ কোটি ডলার ধরা হলেও হয়েছে ৯ হাজার ৬ শ’ ৯১ কোটি ডলার। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩.৯২ শতাংশ ও আগের অর্থবছরের (২০১৯-২০) চেয়ে ১১.৪৯ শতাংশ কম আয় এসেছে ওভেন পোশাক রপ্তানি থেকে। তবে, করোনাকালীন চাহিদা বাড়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আয়ের পথেই হাঁটছে নিট পোশাকের রপ্তানি আয়। এ সময়ে, নিট পোশাকের রপ্তানি আয় হয়েছে ১১৩৪ কোটি ডলার। যা কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩.৭৮ ও গত অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসের তুলনায় ৪.০৬ শতাংশ বেশি।

আয়ের নেতিবাচক চক্কর থেকে বের হতে পারেনি চামড়া ও প্লাস্টিক খাতও। গত ৮ মাসে চামড়া খাতের রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ৬১ কোটি ডলারে। এই আয় কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় দশমিক ৬ শতাংশ বেশি হলেও আগের অর্থবছরের তুলনায় ৪.১৫ শতাংশ কম। আগের অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসের তুলনায় ৪.৪৮ শতাংশ কমে প্লাস্টিক খাতের রপ্তানি আয় হয়েছে মাত্র ৭ কোটি ডলার। এদিকে, ১১ কোটি ১৩ লাখ ডলারের কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে না পারলে গেল ৮ মাসে ১০ কোটি ৭৭ লাখ ডলার আয় এসেছে ওষুধ শিল্প থেকে। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১.৩১ শতাংশ বেশি।

রপ্তানি আয়ের দিক দিয়ে বেশ ভালো অবস্থানে আছে দেশের পাট খাত। গেল আট মাসে এ খাতের আয় বেড়েছে ২৩.৬৭ শতাংশ। গত জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এখাতে আয় হয়েছে ৮৬ কোটি ডলার। যা এসময়ের কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুকনো খাবারের আয় বেড়েছে ৪৩.৬৭ শতাংশ। ২৫.৮৩ শতাংশ আয় বেড়েছে মসলা জাতীয় পণ্যের। হিমায়িত মাছ রপ্তানি থেকে আয় বেড়েছে ৪৪.৩৪ শতাংশ। রপ্তানি বাজার দখলে সম্ভাবনা জাগিয়ে এগিয়ে চলছে বাইসাইকেল।

বাইসাইকেল থেকে আয় এসেছে ৮ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। এই আয় আগের অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসের তুলনায় ৪০.৯০ শতাংশ বেশি।
মূলত খাত বিশেষে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পেলেও সার্বিকভাবে তা অনেকটাই নিম্নমুখী। এর প্রধান কারণ হলো তৈরি পোশাক শিল্পে বড় ধরনের বিপর্যয়। এই শিল্পকে বাঁচানোর জন্য সরকার বিভিন্নভাবে প্রণোদনা দিলেও কোন কোন শিল্প উদ্যোক্তা সে সুযোগ যথাযথভাবে কাজে লাগায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের প্রণোদনা যথাযথ কাজে লাগানো হলে এই শিল্পে গতিশীলতা খানিকটা ফিরিয়ে আনা সম্ভব ছিল। কিন্তু কোন কোন মালিকের উড়ণচন্ডী মনোভাবের কারণে তা কোনভাবেই সম্ভব হয়নি। ফলে পোশাক শিল্পের সংকটও কেটে যায়নি।

এমতাবস্থায় রপ্তানি আয়ে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য নানাবিধ পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য তৈরি পোশাক শিল্পের দুর্বলতাগুলো দূর করে সকল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জোরালো তাগিদ দিচ্ছেন। একই সাথে দেশীয়ভাবে উৎপাদিত রপ্তানিযোগ্য পণ্যের আন্তর্জাতিক মান রক্ষা, বিদেশে নতুন নতুন বাজার সৃষ্টি ও দক্ষ জনবল সৃষ্টি করে রপ্তানি বাড়ানোর পরামর্শ এসেছে সকল মহল থেকেই। যা রপ্তানি আয়ে ছন্দ ফিরে আনতে সহায়ক হতে পারে।

https://dailysangram.com/post/446125